ঢাকা বুধবার, ০৪ জুন, ২০২৫

ভারতের সেনার গুলিতে মিয়ানমারের ১০ বিদ্রোহী নিহত, সীমান্তে উত্তেজনা

বিশ্ব ডেস্ক
প্রকাশিত: জুন ২, ২০২৫, ০৫:১২ পিএম
মিয়ানমারে নিহত বিদ্রোহী যোদ্ধাদের একজন। ছবি- সংগৃহীত

মিয়ানমারের বিদ্রোহী গোষ্ঠী পিপলস ডিফেন্স ফোর্সেসের (পিডিএফ) ১০ সদস্যকে গুলি করে হত্যা করেছে ভারতের আসাম রাইফেলস বাহিনী। গত ১৪ মে নিহতরা মণিপুর সীমান্তে পিডিএফ অন্তর্ভুক্ত পা কা ফার (পিকেপি) সদস্য।

নিহতদের মধ্যে তিনজন কিশোর ছিল। ভারত দাবি করে, তারা সন্ত্রাসী কার্যকলাপে জড়িত ছিল এবং গোলাগুলিতে নিহত হয়েছে।

তবে মিয়ানমারের জান্তাবিরোধী জাতীয় ঐক্য সরকার জানিয়েছে, এসব যোদ্ধাকে আটক করে নির্যাতন করে হত্যা করা হয়েছে।

সূত্রের বরাত দিয়ে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরা জানায়, ভারতীয় সেনারা মণিপুরের মিয়ানয়ানমার সীমান্তের চান্দেলে অবস্থান করছিল। আর নিহতরা মিয়ানমারের তামুর জেলার একটি ক্যাম্পে ছিল। তাদের অবস্থান ভারতীয় বাহিনীকে আগেই জানিয়েছিল মিয়ানমারের জান্তা সরকার।

ঘটনার পর ভারতীয় বাহিনীর বিবৃতিতেও তথ্যবিভ্রান্তি লক্ষ্য করা যায়।

ভারতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের একজন মুখপাত্র গত ১৬ মে জানান, আসাম রাইফেলসের একটি টহল দলকে গুলি ছোঁড়া হয়। এর জবাবে, তারা ক্যামোফ্লাজ ইউনিফর্ম পরা ১০ জনকে হত্যা করে। সেখান থেকে সাতটি একে-৪৭ রাইফেল ও একটি রকেটচালিত গ্রেনেড লঞ্চার উদ্ধার করা হয়।

২১ মে ভারতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় নিহত ব্যক্তিদের পিকেপির ক্যাডার হিসেবে চিহ্নিত করে।

মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র আরও উল্লেখ করেছেন যে, সীমান্ত বরাবর চলমান বেড়া নির্মাণ এলাকার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পাঠানো একটি টহল দল প্রবল অটোমেটিক গুলিবর্ষণের মুখে পড়ে। তাদের উদ্দেশ্য ছিল নির্মাণকর্মী বা আসাম রাইফেলসের সেনাদের গুরুতর ক্ষতি করা, যাতে বেড়া নির্মাণ কাজ বাধাগ্রস্ত হয়।

এ নিয়ে ভারতের পক্ষ থেকে কোনো বক্তব্য পায়নি আল-জাজিরা। এ ঘটনায় ভারত-মিয়ানমার সীমান্তবর্তী অঞ্চলে উদ্বেগ ছড়িয়ে পড়েছে। মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা শরণার্থীরাও নিজেদের নিরাপদ মনে করছেন না।

গত দুই বছর ধরে মণিপুর জাতিগত গোষ্ঠীগুলোর মধ্যে গৃহযুদ্ধে বিধ্বস্ত। ভারতীয় কর্তৃপক্ষ প্রায়শই মিয়ানমার থেকে আসা অভিবাসীদের এই উত্তেজনা উসকে দেওয়ার জন্য অভিযুক্ত করেছে।

ভারতের সীমান্তে কাঁটাতারের বেড়া বসানোর পরিকল্পনা বহু পুরনো জাতিগত সম্পর্কের মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্টি করেছে। বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এই হত্যা ভবিষ্যতে ভারত-মিয়ানমার সীমান্ত পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলতে পারে।

মিয়ানমার ও উত্তর-পূর্ব ভারত বিষয়ক গবেষ অংশুমান চৌধুরী আল-জাজিরাকে বলেন, এই মৃত্যুগুলো ভারতীয় বাহিনী এবং মিয়ানমারের  বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর মধ্যে সংঘর্ষের নিয়ম পরিবর্তন করতে পারে। মনে রাখবেন, মিয়ানমারের অন্যান্য বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোও এটি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে। এতে এই সমস্যাগুলো দ্রুত ছড়িয়ে পড়তে পারে।