ইরানের পরমাণু কর্মসূচি কেন্দ্র করে ইরান-ইসরায়েল যুদ্ধ বেধে যায়। পরমাণূ কর্মসূচি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সাথে আলোচনার মধ্যেই তেহরানে হামলা চালায় তেল আবিব। পাশাপাশি হামলা করে যুক্তরাষ্ট্র। ‘লিডার অব দ্য ফ্রি ওয়ার্লড’র এমন পদক্ষেপে ক্ষুব্ধ আন্তর্জাতিক বিশ্ব। তবে এখান থেকে শিক্ষা নিয়েছে উত্তর কোরিয়ার সর্বোচ্চ নেতা কিম জং উন।
মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএনের প্রতিবেদনে বলা হয়, তেহরানের পারমাণবিক উচ্চাকাঙ্ক্ষার সঙ্গে সম্পর্কিত স্থাপনাগুলো(ফরদো, নাতাঞ্জ ও ইসফাহান) কে লক্ষ্য করে আমেরিকান বি-২ বোমারু বিমানের হামলা বিশ্বের উদীয়মান শক্তিকে নাড়িয়ে দেয়। পূর্ব এশিয়ার নীতিনির্ধারক এবং বিশ্লেষকরা ইতিমধ্যেই ঘটনার মূল্যায়ন শুরু করেছেন।
ইরানের থেকে উত্তর কোরিয়া পারমাণবিক অস্ত্র তৈরিতে অনেক এগিয়ে এজন্য ইরান পরিস্থিতি কে হালকায় নিচ্ছে না উত্তর কোরিয়া।
বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করেছেন, ইরানে মার্কিন হস্তক্ষেপ পিয়ংইয়ংয়ের পারমাণবিক কর্মসূচি ত্বরাণ্বিত ও রাশিয়ার সঙ্গে সহযোগিতা দৃড় করাতে পারে। তাছাড়া কিম জং উনের পশ্চিমা বিশ্ব প্রতিরোধে পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারের চিন্তা কে আরও দৃড় করতে পারে।
ইরানের মতোই উত্তর কোরিয়াকেও দীর্ঘদিন ধরে পরমাণু কর্মসূচি বন্ধের জন্য প্রচেষ্টা চালাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। কারণ যুক্তরাষ্ট্র মনে করে উত্তর কোরিয়ার কাছে একাধিক পারমাণবিক অস্ত্র রয়েছে যা যুক্তরাষ্ট্রে আঘাত হানতে সক্ষম।
দক্ষিণ কোরিয়ার কিউংনাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উত্তর কোরিয়ান গবেষণার অধ্যাপক লিম ইউল-চুল বলেন, ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের হামলা নিঃসন্দেহে উত্তর কোরিয়ার শাসনব্যবস্থা টিকে থাকার এবং পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির দীর্ঘস্থায়ী নীতির বৈধতাকে আরও জোরদার করবে। উত্তর কোরিয়া সাম্প্রতিক মার্কিন বিমান হামলাকে একটি পূর্ব-সামরিক হুমকি হিসেবে দেখে এবং সম্ভবত পূর্ব-সামরিক পারমাণবিক ক্ষেপণাস্ত্র হামলার জন্য নিজস্ব সক্ষমতা বৃদ্ধির প্রচেষ্টা ত্বরান্বিত করবে।
শুধু উত্তর কোরিয়া নয়; রাশিয়াও পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি বাড়াতে পারে। প্রভাবশালী রুশ রাজনৈতিক দার্শনিক এবং ভূরাজনৈতিক বিশ্লেষক আলেকজান্ডার ডুগিন বলেন, কেউ কেউ এখনো এই ভ্রমের মধ্যে আছেন যে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ কোনোভাবে আমাদের পাশ কাটিয়ে যাবে। তা হবে না। আমরা এরই মধ্যে এর গভীরে রয়েছি। যুক্তরাষ্ট্র আমাদের মিত্র ইরানের বিরুদ্ধে বোমা হামলা চালিয়েছে। কিছুই তাদের থামায়নি। যদি কিছুই তাদের ইরানে বোমা হামলা থেকে না থামায়, তবে পরে আমাদের লক্ষ্যবস্তু করা থেকেও কিছুই তাদের থামাবে না। কোনো এক সময় তারা সিদ্ধান্ত নিতে পারে যে, রাশিয়া ইরানের মতো পারমাণবিক অস্ত্রের অধিকারী হওয়া উচিত নয়—অথবা হামলার জন্য অন্য কোনো অজুহাত খুঁজে পেতে পারে। কোনো ভুল করবেন না। আমরা যুদ্ধে রয়েছি।