নোবেল শান্তি পুরস্কারজয়ী ইরানি মানবাধিকারকর্মী নার্গিস মোহাম্মদি প্রাণনাশের হুমকি পেয়েছেন বলে জানিয়েছে নোবেল কমিটি। শুক্রবার (১১ জুলাই) এক বিবৃতিতে নরওয়ের নোবেল কমিটির পক্ষ থেকে এই তথ্য জানানো হয়। খবর বিবিসির।
নারী ও মানবাধিকারের পক্ষে দৃঢ় অবস্থানের স্বীকৃতি হিসেবে ২০২৩ সালে তাকে শান্তিতে নোবেল পুরস্কার দেওয়া হয়। বিগত এক দশকের বেশিরভাগ সময় তিনি ইরানে কারাবন্দি ছিলেন। ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে চিকিৎসার কারণে তাকে তেহরানের এভিন কারাগার থেকে সাময়িক মুক্তি দেওয়া হয়।
তবে তার আইনজীবীরা শুরু থেকেই আশঙ্কা প্রকাশ করে আসছেন, যেকোনো সময় তাকে পুনরায় গ্রেপ্তার করা হতে পারে।
নোবেল কমিটির সভাপতি ইয়র্গেন ওয়াটনে ফ্রাইদনেস এক বিবৃতিতে জানান, তিনি নার্গিস মোহাম্মদির কাছ থেকে একটি ‘জরুরি ফোনকল’ পেয়েছেন, যেখানে ৫৩ বছর বয়সি এই কর্মী জানান, তার জীবনের নিরাপত্তা এখন চরম হুমকির মুখে। তার ভাষায়, “আমি শাসকগোষ্ঠীর এজেন্টদের কাছ থেকে সরাসরি ও পরোক্ষভাবে ‘শারীরিকভাবে নিশ্চিহ্ন করে দেওয়ার’ হুমকি পেয়েছি।”
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, এই হুমকিগুলো থেকে স্পষ্ট, যদি নার্গিস মোহাম্মদি ইরানের অভ্যন্তরে জনসম্পৃক্ততা এবং গণতন্ত্র, মানবাধিকার ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতার পক্ষে আন্তর্জাতিক প্রচার কার্যক্রম বা গণমাধ্যমে অংশগ্রহণ থেকে নিজেকে বিরত না রাখেন তাহলে তার নিরাপত্তা চরমভাবে ঝুঁকিতে পড়বে।
নোবেল কমিটি জানিয়েছে, তারা শুধু নার্গিস মোহাম্মদিই নন, বরং ইরানি শাসকগোষ্ঠীর অন্যান্য সমালোচকদের প্রতি আসা এমন হুমকিতে ‘গভীরভাবে উদ্বিগ্ন’। তারা ইরান সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে, এসব নাগরিকের শুধু প্রাণরক্ষাই নয়, মতপ্রকাশের স্বাধীনতাও যেন নিশ্চিত করা হয়।
নার্গিস মোহাম্মদি ইরানে মৃত্যুদণ্ডের ব্যাপক ব্যবহার এবং নারীদের ওপর জোরপূর্বক চাপানো হিজাব বিধানের বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন ধরেই সোচ্চার। এই কারণে তিনি একাধিকবার কারাবরণ করেছেন এবং রাষ্ট্রীয় নিপীড়নের শিকার হয়েছেন।
নারী অধিকারের পক্ষে লড়াইয়ের প্রতীক হিসেবেই তাকে শান্তিতে নোবেল দেওয়া হয়। পুরস্কার ঘোষণার সময় তিনি কারাগারে থাকায় তার সন্তানেরা তার পক্ষ থেকে পুরস্কার গ্রহণ করেন।
আপনার মতামত লিখুন :