সম্প্রতি নেপালে চলমান বিশাল বিক্ষোভের প্রেক্ষাপটে প্রধানমন্ত্রী কে পি শর্মা অলি পদত্যাগ করেছেন। মঙ্গলবার দুপুরে তিনি প্রেসিডেন্টের কাছে পদত্যাগপত্র জমা দেন এবং তা ইতোমধ্যেই গৃহীত হয়েছে।
পদত্যাগপত্রে তিনি উল্লেখ করেছেন, ‘নেপালের সংবিধানের ৭৬(২) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের পর বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনায় রাজনৈতিক সমাধানের পথ খোঁজা জরুরি হয়ে পড়েছে। তাই সংবিধানের ৭৭(১)(ক) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী আমি প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করছি।’
নেপালি কংগ্রেসের সমর্থনে জুলাই ২০২৪ সাল থেকে চতুর্থ মেয়াদে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন অলি। কিন্তু সোমবারের রক্তপাতের পর ক্রমবর্ধমান চাপের সম্মুখীন হন।
এ দিন ১৯ জন বিক্ষোভকারী ও শতাধিক মানুষ নিহত হন। বিক্ষোভকারী এবং মানবাধিকার সংস্থাগুলো নিরস্ত্র বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে প্রাণঘাতী শক্তি প্রয়োগের অনুমোদন দেওয়ার জন্য তার প্রশাসনকে দায়ী করে।
তার পদত্যাগ একটি রাজনৈতিক ক্যারিয়ারের সমাপ্তি এনেছে। তিনি ২০১৫-১৬, ২০১৮-২১ সালে সংক্ষিপ্ত সময়ের জন্য, ২০২১ সালে সংক্ষিপ্ত সময়ের জন্য এবং আবার ২০২৪ সালের জুলাই থেকে মঙ্গলবার পদত্যাগ করা পর্যন্ত নেপালের ক্ষমতায় ছিলেন।
এদিকে স্থানীয় সূত্র বলছে, কে পি শর্মা দেশ ছাড়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন এবং দুবাই যাওয়ার পথে আছেন। ভারতীয় গণমাধ্যম ইন্ডিয়া টুডের খবরে বলা হয়, পদত্যাগের আগে অলি সেনাপ্রধান জেনারেল সিগদেলকে পরিস্থিতি সামলানোর আহ্বান জানিয়েছিলেন। সেনাপ্রধান জানান, প্রধানমন্ত্রী পদত্যাগ করলেই সেনারা দেশকে স্থিতিশীল করতে সক্ষম হবে।
সংবাদমাধ্যম ফাস্টপোস্টের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, কে পি শর্মা অলি দেশ ছাড়ার জন্য সেনাদের সহযোগিতা চেয়েছেন। চিকিৎসার অজুহাতে তিনি দুবাই যাওয়ার পরিকল্পনা করছেন। হিমালয়া এয়ারলাইন্সের একটি বিমান তার যাত্রার জন্য প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
এই গুঞ্জন আরও জোরদার হয় যখন ললিতপুরের ভৈসেপাটি এলাকায় সেনাবাহিনীর একাধিক হেলিকপ্টারকে উড্ডয়ন করতে দেখা যায়।
এদিকে অলির মন্ত্রিসভার সদস্যদের সেনা হেলিকপ্টারে করে বিমানবন্দরে সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে। অন্তত পাঁচটি হেলিকপ্টার মন্ত্রীদের সরিয়ে নেওয়ার কাজে ব্যবহার করা হয়েছে। একইসঙ্গে কাঠমান্ডু, ললিতপুর ও ভক্তপুরে কারফিউ জারি রয়েছে।
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন