ভারতের অরুণাচল প্রদেশের নিম্ন দিবাং উপত্যকার রোয়িং শহরে শিশু ধর্ষণের অভিযোগে আটক এক কিশোরকে থানার ভেতর থেকে টেনে বের করে গণপিটুনিতে হত্যার ঘটনায় শহরজুড়ে কারফিউ জারি করা হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, পরিস্থিতি উত্তেজনাপূর্ণ হলেও বর্তমানে নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।
শিশুদের পরিবার সূত্রে জানা যায়, ছয় থেকে আট বছর বয়সী কয়েকজন মেয়েশিশু পেটে ব্যথার অভিযোগ করলে তাদের হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানেই যৌন নির্যাতনের আলামত ধরা পড়ে।
এরপর এক অভিভাবক থানায় অভিযোগ দায়ের করলে শিশুদের যৌন অপরাধ থেকে সুরক্ষা আইন (পকসো) অনুযায়ী একটি এফআইআর দায়ের হয়। অভিযুক্ত আসামের এক কিশোর অভিবাসী শ্রমিককে বৃহস্পতিবার রাতে গ্রেপ্তার করে রোয়িং থানায় রাখা হয়।
শনিবার (১২ জুলাই) এনডিটিভির প্রতিবেদনে বলা হয়, কিশোরটি নিরাপত্তার অভাবের সুযোগ নিয়ে সন্ধ্যায় মাউন্ট কারমেল স্কুলের হোস্টেল ভবনে প্রবেশ করেছিল। পরে ছয় থেকে আট বছর বয়সী মেয়েদের শ্লীলতাহানি ও ধর্ষণ করে বলে অভিযোগ।
পুলিশি হেফাজতে থাকা অবস্থায় শুক্রবার বিকেলে ওই ঘটনার খবর ছড়িয়ে পড়লে শহরে উত্তেজনা ছড়ায়। একদল জনতা থানার সামনে জড়ো হয় এবং পরে ভেতরে ঢুকে অভিযুক্ত কিশোরকে টেনে বের করে রাস্তায় পিটিয়ে হত্যা করে।
সূত্র জানায়, পুলিশ ও কেন্দ্রীয় বাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছালেও ততক্ষণে তার মৃত্যু হয়।
অভিযুক্তের মরদেহের ময়নাতদন্তে নিশ্চিত হয়েছে যে মৃত্যুটি শুক্রবার বিকেলেই ঘটেছে। স্থানীয় সূত্র ও প্রশাসনের দাবি, অভিযুক্ত স্কুলের হোস্টেলের ছাত্র ছিল কি না, সে বিষয়ে এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি এবং বিষয়টি তদন্তাধীন।
এই ঘটনার ঠিক একদিন আগেই, একই শহরে আসামের আরও এক কিশোর অভিবাসী শ্রমিককে গণপিটুনি দিয়ে হত্যা করা হয়েছিল, যিনি ওই একই অভিযোগের মুখে পড়েছিলেন বলে জানা গেছে।
রোয়িংয়ে এই ধরনের সহিংস ঘটনা ঠেকাতে অতিরিক্ত চার কোম্পানি নিরাপত্তা বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। রাজ্যের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মামা নাটুং প্রশাসন ও পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখছেন। পাশাপাশি, ঘটনার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট স্কুল কর্তৃপক্ষকেও তদন্তের আওতায় আনা হচ্ছে।
আপনার মতামত লিখুন :