ঢাকা সোমবার, ১৬ জুন, ২০২৫

ইরানে শাসনব্যবস্থার পরিবর্তনই ইসরায়েলের লক্ষ্য

বিশ্ব ডেস্ক
প্রকাশিত: জুন ১৬, ২০২৫, ১২:০২ এএম
২০১৯ সালের ২৫ নভেম্বর তেহরানে সরকার-সমর্থিত বিক্ষোভে অংশ নেন ইরানি নারীরা। ছবি- সংগৃহীত

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ৬০ দিনের আল্টিমেটাম শেষ হতেই ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। ওই হামলায় ইরানের শীর্ষ সামরিক কর্মকর্তাসহ বেশ কয়েকজন বিশেষজ্ঞকে হত্যা করা হয়েছে। যা দেশটির জন্য ‘ব্যাপক’ ক্ষতের সৃষ্টি করেছে। 

শনিবার (১৪ জুন) মিডল ইস্ট ইনস্টিটিউট আয়োজিত বিশেষজ্ঞদের একটি প্যানেল জানিয়েছে, ইরানের বিরুদ্ধে ইসরায়েলের সামরিক আক্রমণ কয়েক সপ্তাহ ধরে চলতে পারে, যার সম্ভাব্য লক্ষ্য দেশটির শাসনব্যবস্থা পরিবর্তন করা।

ফিলিস্তিনিদের মধ্যে ছিলেন মার্কিন কেন্দ্রীয় কমান্ডের সাবেক কমান্ডার (অব.) জেনারেল জোসেফ এল. ভোটেল, মার্কিন নৌবাহিনীর পঞ্চম নৌবহরের সাবেক কমান্ডার (অব.) ভাইস অ্যাডমিরাল কেভিন ডোনেগান এবং এমইআই সিনিয়র ফেলো ও ইরান বিশেষজ্ঞ অ্যালেক্স ভাতাঙ্কা।

ওহাইওতে রাইট-প্যাটারসন বিমান ঘাঁটির শিক্ষক ভাতাঙ্কা বলেন, ‘ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচিকে পঙ্গু করে দেওয়ার পাশাপাশি ইসরায়েলের মূল লক্ষ্য শাসনব্যবস্থা পরিবর্তন কিনা তা নির্ধারণ করা এখন খুব নিকটে, আমরা সে দিকেই যাচ্ছি।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমি মনে করি বেশিরভাগ ইরানি কর্মকর্তা মনে করেন যে, ইসরায়েল অবশ্যই এটাই চায়। এই সবকিছুর মধ্যে সবচেয়ে বড় অজানা বিষয় হলো ইসয়েলিরা কি কোনোভাবে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে ইরানের উপর প্রাথমিক আক্রমণের জন্য আগ্রহী করে তুলতে পারবে।’

ইসরায়েল তার সামরিক নেতৃত্ব ও পারমাণবিক কর্মসূচিসহ বিভিন্ন ইরানি লক্ষ্যবস্তুর বিরুদ্ধে আক্রমণ শুরু করেছে। তেহরান ইসরায়েলে ক্ষেপণাস্ত্র এবং ড্রোন হামলা চালিয়ে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে।

ফিলিস্তিন বিশেষজ্ঞরা তাদের বিশ্বাসে একমত ছিলেন যে, এই সংঘাত অন্যান্য দেশগুলোতে ছড়িয়ে পড়বে না।

ভাতাঙ্কা বলেন, ইরানের নেতৃত্ব বিজয়কে ‘টিকে থাকার’ হিসেবে সংজ্ঞায়িত করবে। ইসরায়েলের প্রতি মার্কিন এবং ‘বেশিরভাগ ইউরোপের সমর্থন’ থাকলেও, তেহরান কারও কাছ থেকে কোনো সাহায্য পাচ্ছে না।

তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি না যে, তারা প্রতিরোধের অক্ষের অবশিষ্ট অংশ থেকে সাহায্য পাচ্ছে... আমার প্রশ্ন হলো প্রতিরোধের অক্ষের সদস্যরা আসলে এই মুহূর্তে কী করতে পারে।’

প্রতিরোধ অক্ষের সদস্যদের মধ্যে রয়েছে হামাস ও হিজবুল্লাহ, যারা ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর দ্বারা মারাত্মকভাবে দুর্বল হয়ে পড়েছে এবং ইয়েমেনের হুথিরা। ডিসেম্বরে প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের পতন পর্যন্ত এর মধ্যে সিরিয়াও ছিল।

ডোনেগান বলেন, ‘আমার প্রশ্ন হলো, ইরান কি মনে করে যে তারা পাল্টা আক্রমণের ক্ষেত্রে যথেষ্ট কাজ করেছে। তারা আবার কিছু আলোচনা শুরু করার জন্য জলপাইয়ের ডাল ছুঁড়ে দিতে পারে? আমি মনে করি এটি একটি দীর্ঘ পথ। সত্যি বলতে, তারা অদূর ভবিষ্যতে আলোচনার টেবিলে আসবে।’

তিনি বলেন, ইরান হরমুজ প্রণালী বন্ধ করে দিতে পারে। কিন্তু ‘হরমুজ বন্ধ করার সমস্যা হলো তারা তখন তাদের তেল বাইরে প্রবাহিত করার অর্থনৈতিক সুবিধা পাবে না’।

ফিলিস্তিন বিশেষজ্ঞরা বলেন, ইসরায়েল তার যুদ্ধের মাধ্যমে কতদূর যেতে চায় তার উপর ভিত্তি করেই শেষ খেলা নির্ধারিত হবে।

ভাতাঙ্কা বলেন, “আমেরিকানরা এখানে ভালো পুলিশ হিসেবে খেলছে। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প কূটনীতির দরজা খোলা রেখেছেন। ইসরায়েলিরা খারাপ পুলিশ হিসেবে খেলছে; বলছে, ‘ট্রাম্প যা চান তা যদি তুমি না দাও, তাহলে আমরা তোমার পেছনে যাব’।”

তথ্যসূত্র: আরব নিউজ।