বৃহস্পতিবার, ২৬ জুন, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


বিশ্ব ডেস্ক

প্রকাশিত: জুন ২৫, ২০২৫, ১১:০৫ পিএম

মধ্যস্থতায় বারবার কাতারই কেন?

বিশ্ব ডেস্ক

প্রকাশিত: জুন ২৫, ২০২৫, ১১:০৫ পিএম

কাতারের জাতীয় পতাকা হাতে ঘোড়ার পিঠে এক আরাবিয়ান যুবক। ছবি- সংগৃহীত

কাতারের জাতীয় পতাকা হাতে ঘোড়ার পিঠে এক আরাবিয়ান যুবক। ছবি- সংগৃহীত

ইসরায়েল-ইরান সংঘাতের উত্তপ্ত প্রেক্ষাপটে যখন অঞ্চলে উদ্বেগ বাড়ছিল, ঠিক তখনই আলোচনার টেবিলে কার্যকর ভূমিকা রাখে কাতার।

দীর্ঘদিন ধরে নিজেকে সংলাপের প্রবক্তা ও সমস্যা সমাধানের শক্তি হিসেবে গড়ে তুলতে চাওয়া এই উপসাগরীয় দেশ এবার সরাসরি যুক্তরাষ্ট্রের হয়ে ইরানকে যুদ্ধবিরতিতে রাজি করাতে মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকা পালন করেছে।

বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক খবরে বলা হয়, কাতারের প্রধানমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ বিন আবদুর রহমান আল থানির সঙ্গে ইরানি কর্মকর্তাদের সরাসরি যোগাযোগের মাধ্যমেই তেহরান যুক্তরাষ্ট্রের যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবে সাড়া দেয়।

কাতার এমন এক সময় এই মধ্যস্থতার ভূমিকা নেয়, যখন ইরান যুক্তরাষ্ট্রের কাতার-ঘাঁটি আল উদেইদে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে মাত্র কয়েক ঘণ্টা আগে।

এই ঘটনার মধ্য দিয়ে কাতার শুধু আলোচনায় নয়, সরাসরি সংকট নিরসনে নেতৃত্বের জায়গায় উঠে এসেছে। যদিও মিশর, কুয়েত কিংবা ওমানও ঐতিহাসিকভাবে মধ্যস্থতায় আগ্রহী, তবে কাতার এখন নিজেকে এই অঞ্চলের প্রধান কূটনৈতিক শক্তি হিসেবে তুলে ধরছে।

কাতার এর আগেও তালেবান, হামাস, ইরান ও লেবাননের হিজবুল্লাহ নেতাদের রাজনৈতিক আতিথেয়তা দিয়েছে। সমালোচকরা এটিকে সন্ত্রাসবাদে সহানুভূতি বললেও দোহা বারবার বলেছে, তারা এসব সম্পর্ক রক্ষা করে পশ্চিমা অনুরোধে, কারণ আলোচনা চালিয়ে যেতে হলে সব পক্ষের সঙ্গে সংযোগ থাকা জরুরি।

এই অবস্থান রক্ষণশীল উপসাগরীয় প্রতিবেশীদের মধ্যে সন্দেহও তৈরি করেছে। ২০১৭ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের নেতৃত্বে কাতারের ওপর অবরোধ ছিল, যার পেছনে এমন স্বতন্ত্র কূটনৈতিক পথ বেছে নেওয়ার বিষয়টিও ছিল একটি বড় কারণ।

তবে কাতারের এই সক্রিয় কূটনীতিকে অনেকেই এখন বাস্তববাদী ও দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব তৈরিকারী বলেই বিবেচনা করছেন। একদিকে তারা হামাসের ৭ অক্টোবরের হামলাকে প্রকাশ্যে সমর্থন না করলেও, দোষ চাপিয়েছে ইসরায়েলের দীর্ঘ দখলদার নীতির ওপর। একইসঙ্গে আন্তর্জাতিক ফোরামে তারা ইসরায়েলকে জেনেভা কনভেনশন লঙ্ঘন, গণহত্যা এবং মানবিক সহায়তায় বাধা দেওয়ার জন্য অভিযুক্ত করেছে।

কাতারের এমন কৌশলী অবস্থান শুধু মতাদর্শ নয়, বরং কূটনৈতিক ভারসাম্য রক্ষার চেষ্টা। ইরানের মতো আঞ্চলিক শক্তিকে সরাসরি সংঘাতে না যেতে অনুরোধ করা এবং একইসঙ্গে ইসরায়েলের সঙ্গে চরমপন্থীদের নেপথ্য সংলাপে সহায়তা দেওয়া, এই দুই কাজই তারা করছে একইসঙ্গে।

এটি শুধু যুদ্ধবিরতির ঘোষণা নয়, বরং তার বাস্তব বাস্তবায়নের পথ তৈরি করে দেয়। এজন্য দরকার মানবিক করিডোর, সহায়তা প্রবেশের নিশ্চয়তা, চেকপয়েন্ট পরিচালনার নিয়ম, সংঘাতের মাত্রা কমানোসহ একাধিক স্তরে আলোচনা। অনেকের মতে, ইসরায়েলের জন্য এটি অস্বস্তিকর হলেও বাস্তবতা মেনে নিতে বাধ্য হচ্ছে তারা।

বিশ্লেষকদের মতে, এই পরিস্থিতিতে কাতারের কূটনৈতিক সক্রিয়তা শুধু আঞ্চলিক নয়, বরং বৈশ্বিক ভূরাজনীতিতেও তাদের প্রভাব বাড়াচ্ছে। ছোট হলেও কাতার প্রমাণ করছে যে, ব্যতিক্রমী অর্থনৈতিক শক্তি, নীতিনির্ধারকদের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ ও মধ্যপন্থী অবস্থান তাকে এমন এক ভূমিকায় নিয়ে গেছে, যা বিশ্বের সবচেয়ে জটিল সংঘাতেও শান্তির সেতুবন্ধন তৈরি করতে পারে।

গ্যাসসমৃদ্ধ এই ছোট দেশটি একদিকে যুক্তরাষ্ট্রের ঘনিষ্ঠ মিত্র, অন্যদিকে তালেবান ও হামাসের মতো গোষ্ঠীর সঙ্গে সংলাপে সক্রিয়। ইউক্রেন, ইরান, আফগানিস্তান, গাজাসহ বহু সংকটে মধ্যস্থতাকারী হিসেবে সফলভাবে কাজ করেছে কাতার।

বিশ্লেষকদের মতে, এটি কাতারের কৌশল—আন্তর্জাতিকভাবে অপরিহার্য হয়ে ওঠা এবং সৌদি-আমিরাতের প্রভাব থেকে নিজেকে রক্ষা করা। মানবিক ও রাজনৈতিক সংকট সমাধানে কাতার এখন গুরুত্বপূর্ণ মধ্যস্থতাকারী রাষ্ট্র।

Link copied!