বৃহস্পতিবার, ২৬ জুন, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


বিশ্ব ডেস্ক

প্রকাশিত: জুন ২৬, ২০২৫, ০২:৪৭ এএম

যুক্তরাষ্ট্রে আঘাত হানতে সক্ষম, এমন ক্ষেপণাস্ত্র তৈরির পথে পাকিস্তান

বিশ্ব ডেস্ক

প্রকাশিত: জুন ২৬, ২০২৫, ০২:৪৭ এএম

পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরীফ ও মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।  ছবি- সংগৃহীত

পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরীফ ও মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ছবি- সংগৃহীত

পাকিস্তানের সেনাবাহিনী এমন একটি দূরপাল্লার পারমাণবিক ক্ষেপণাস্ত্র তৈরির চেষ্টা করছে, যা সরাসরি যুক্তরাষ্ট্রের মূল ভূখণ্ডে আঘাত হানতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে- ফরেন অ্যাফেয়ার্স সাময়িকীর এক সাম্প্রতিক প্রতিবেদনে এমনটাই দাবি করা হয়েছে।

প্রতিবেদনে যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর বরাত দিয়ে বলা হয়েছে, পাকিস্তানের ক্রমবর্ধমান পারমাণবিক সক্ষমতা ও আগ্রাসন নিয়ে ওয়াশিংটন উদ্বিগ্ন। তাদের আশঙ্কা, যদি পাকিস্তান একটি আন্তঃমহাদেশীয় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র নির্মাণে সফল হয়, তাহলে দেশটিকে আর ‘সাধারণ প্রতিদ্বন্দ্বী’ হিসেবে নয়, বরং পূর্ণাঙ্গ ‘পারমাণবিক প্রতিপক্ষ’ হিসেবে বিবেচনা করা ছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের আর কোনো পথ থাকবে না।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যদিও পাকিস্তান বারবার দাবি করে এসেছে যে তাদের পারমাণবিক কর্মসূচি মূলত ভারতের সামরিক প্রাধান্য ঠেকানোর জন্য। এদিকে এই বক্তব্য বাস্তবতার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয় বলে যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা কর্মকর্তারা মনে করছেন। তাদের ভাষ্যমতে, পাকিস্তানের তৈরি ক্ষেপণাস্ত্রটি যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরে পৌঁছাতে সক্ষম হবে।

প্রতিবেদনে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, পাকিস্তান সম্ভবত এমন একটি সক্ষমতা অর্জনের মাধ্যমে ওয়াশিংটনকে এই বার্তা দিতে চাইছে যে, যদি যুক্তরাষ্ট্র পাকিস্তানের অস্ত্রাগারে প্রতিরোধমূলক হামলার পরিকল্পনা করে, তবে তা হবে অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। পাশাপাশি, এই সক্ষমতা ভবিষ্যতে ভারত-পাকিস্তান বিরোধে যুক্তরাষ্ট্রের হস্তক্ষেপকেও নিরুৎসাহিত করতে পারে।

প্রতিবেদনে স্পষ্টভাবে বলা হয়েছে, ‘পাকিস্তান যদি দূরপাল্লার পারমাণবিক ক্ষেপণাস্ত্র অর্জন করে, তাহলে যুক্তরাষ্ট্রের কাছে দেশটিকে মিত্র হিসেবে দেখার আর কোনো সুযোগ থাকবে না। যুক্তরাষ্ট্রকে লক্ষ্যবস্তু করতে পারে এমন কোনো দেশের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রাখা সম্ভব নয়।’

এছাড়া প্রতিবেদনে চীন ও রাশিয়ার মধ্যকার পারমাণবিক সহযোগিতা নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে। চীন যখন তার অস্ত্রভাণ্ডার সম্প্রসারণে দ্রুত গতিতে এগোচ্ছে এবং রাশিয়া বহুদিন ধরে অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ নীতিকে অবজ্ঞা করছে, তখন যুক্তরাষ্ট্র একই সঙ্গে একাধিক ফ্রন্টে পারমাণবিক চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে- যার মধ্যে উত্তর কোরিয়া, ইরান এবং বর্তমানে পাকিস্তান অন্যতম।

পাকিস্তানের পারমাণবিক কর্মসূচির সূচনা হয়েছিল ১৯৭০-এর দশকের গোড়ার দিকে, মূলত উপমহাদেশীয় উত্তেজনার প্রেক্ষাপটে। বিশেষ করে ১৯৭৪ সালে ভারতের প্রথম পারমাণবিক পরীক্ষার পর পাকিস্তান এই কর্মসূচিতে গতি আনে। ১৯৯৮ সালে ছয়টি সফল বিস্ফোরণ ঘটানোর পর দেশটি আনুষ্ঠানিকভাবে পারমাণবিক শক্তিধর রাষ্ট্র হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে।

পাকিস্তানের অস্ত্রাগারে বর্তমানে বিভিন্ন ধরনের পারমাণবিক অস্ত্র অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে কৌশলগত বোমা- যা যুদ্ধক্ষেত্রে তাৎক্ষণিক ব্যবহারযোগ্য এবং স্বল্প পাল্লার লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে সক্ষম।

উল্লেখযোগ্যভাবে, পাকিস্তান এখন পর্যন্ত পারমাণবিক অস্ত্র বিস্তার রোধ সংক্রান্ত আন্তর্জাতিক চুক্তি এবং বিস্তৃত পরীক্ষা নিষেধ চুক্তি স্বাক্ষর করেনি। এতে দেশটির পরমাণু নীতির উপর ‘জাতীয় সার্বভৌমত্ব ও নিরাপত্তা অগ্রাধিকার’ স্পষ্টভাবে প্রতিফলিত হয়।

প্রতিবেদনে ধারণা করা হয়েছে, বর্তমানে পাকিস্তানের কাছে প্রায় ১৬৫টি পারমাণবিক ওয়ারহেড রয়েছে। এই অস্ত্রাগার ও সামরিক কৌশল দেশটিকে দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম ক্ষমতাধর পারমাণবিক শক্তি হিসেবে প্রতিষ্ঠা করেছে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, পাকিস্তানের এই সম্ভাব্য পদক্ষেপ শুধু উপমহাদেশের নিরাপত্তা নয়, বরং বৈশ্বিক কূটনীতি ও প্রতিরক্ষা নীতির জন্যও এক নতুন সংকেত হয়ে উঠতে পারে।

Link copied!