ঢাকা সোমবার, ২১ জুলাই, ২০২৫

ওষুধ নয় খাবার চাইছে ফিলিস্তিনিরা

রূপালী ডেস্ক
প্রকাশিত: জুলাই ২১, ২০২৫, ০৪:২৪ এএম
গাজার নুসেইরাত শিবিরে খাবারের জন্য লম্বা লাইনে ফিলিস্তিনির শিশু-কিশোর ও বৃদ্ধরা। ছবি- সংগৃহীত

গাজার স্বাস্থ্যসংকট দিন দিন ভয়াবহ রূপ নিচ্ছে। চিকিৎসকেরা বলছেন, এখন ওষুধ নয়, খাবার চাইছে মানুষ। তাদের সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন খাদ্য, কারণ অপুষ্টি ও ক্ষুধার যন্ত্রণা তাদের শরীরকে আরও দুর্বল করে তুলেছে।

মার্চে ইসরায়েল গাজায় সহায়তা পাঠানো বন্ধ করে দিলে পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে ওঠে। মে মাসে আংশিকভাবে এই নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হলেও সাহায্যের পরিমাণ এখনো নগণ্য।

ইসরায়েল বলছে, হামাস সাহায্য লুট করছে, তাই তারা চালান বন্ধ করে। তবে জাতিসংঘের ভাষ্য, ইসরায়েল সেনারা প্রায়ই গাজার অভ্যন্তরে সাহায্য পৌঁছানোর অনুমতি দেয় না।

ইসরায়েলের সামরিক সহায়তা সংস্থা বলছে, যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর এখন পর্যন্ত ৬৭,০০০ ট্রাক খাদ্যসামগ্রী গাজায় প্রবেশ করেছে। কিন্তু মানবিক সংস্থাগুলোর দাবি, এই সংখ্যা প্রকৃত চাহিদার কাছে অতি সামান্য।

আল-আকসা শহীদ হাসপাতালের মুখপাত্র ডা. খালিল আল-দাকরান বলেন, শিশুরা একবার বোমায়, আরেকবার ক্ষুধায়—তাদের শৈশব হারাচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, গাজা এখন ইতিহাসের সবচেয়ে ভয়াবহ দুর্ভিক্ষের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে।

খান ইউনিসের কুয়েত ফিল্ড হাসপাতালের পরিচালক ডা. সুহায়েব আল-হামস জানান, রোগীরা এখন ওষুধ নয়, খাবার চাইছে। চিকিৎসকেরাও ২৪ ঘণ্টা না খেয়ে কাজ করছে।

রোববার ওয়ার্ল্ড সেন্ট্রাল কিচেন খাবার বন্ধ করে দিয়েছে। রাইস ছাড়া কিছুই ছিল না। তাও শেষ।

এই সংস্থাটি জানায়, শনিবার তারা ৮০ হাজার মানুষের খাবার বিতরণ করেছে। তার পরেই স্টক শেষ হয়ে যায়। তারা এর আগেও একবার খাবারের অভাবে রান্না বন্ধ করতে বাধ্য হয়েছিল।

এদিকে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে রবিবার উত্তর গাজায় খাবারের খোঁজে গিয়েই ইসরায়েলি গুলিতে অন্তত ৭০ জন নিহত হয়েছেন। ইসরায়েলি সেনাবাহিনী বলেছে, তারা ‘হুমকি ঠেকাতে’ সতর্কতামূলক গুলি চালায়।

অপরদিকে, প্রতিদিন হাসপাতালগুলোতে পুষ্টিহীন, দুর্বল, সংজ্ঞাহীন মানুষের ভিড় বাড়ছে।

আল-শিফা হাসপাতালের পরিচালক ডা. মোহাম্মদ আবু সালমিয়া জানান, অনেক চিকিৎসক নিজেও খাবারের অভাবে জ্ঞান হারাচ্ছেন।

জাতিসংঘ মানবাধিকার সংস্থা জানিয়েছে, মে মাসের শেষ থেকে ৭ জুলাই পর্যন্ত ৭৯৮ জন মানুষ মারা গেছে শুধুমাত্র সাহায্য পেতে গিয়ে। তাদের মধ্যে ৬১৫ জন নিহত হয়েছে (গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশন)-এর আশেপাশে।

জাতিসংঘের জরুরি ত্রাণ বিষয়ক প্রধান টম ফ্লেচার বলেন, মানুষ মরছে শুধু পরিবারকে খাওয়াতে গিয়ে।

সূত্র: সিএনএন