বৃহস্পতিবার, ০২ অক্টোবর, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


বিশ্ব ডেস্ক

প্রকাশিত: অক্টোবর ১, ২০২৫, ১১:৩৬ পিএম

গাজা অভিমুখী ফ্লোটিলার যাত্রীদের সঙ্গে কী ঘটতে যাচ্ছে?

বিশ্ব ডেস্ক

প্রকাশিত: অক্টোবর ১, ২০২৫, ১১:৩৬ পিএম

ফ্রিডম ফ্লোটিলা কোয়ালিশনের (এফএফসি) সুমুদ ফ্লোটিলা। ছবি- সংগৃহীত

ফ্রিডম ফ্লোটিলা কোয়ালিশনের (এফএফসি) সুমুদ ফ্লোটিলা। ছবি- সংগৃহীত

গাজার অভিমুখে যাত্রা করা বিশাল নৌবহর ‘গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা’ ইতালির থামার আহ্বান প্রত্যাখ্যান করেছে। নৌবহরের পক্ষ থেকে জানানো হয়, তারা ‘সংকটজনক অঞ্চলে’ পৌঁছেছে এবং আশঙ্কা করছে ইসরায়েল যেকোনো সময় তাদের আটকাতে পারে। সময় যত যাচ্ছে, এই শঙ্কা ততই ঘনীভূত হচ্ছে। বিশ্বের চোখ এখন সুমুদ ফ্লোটিলার দিকে।

গত জুনে গাজা থেকে প্রায় ১৮৫ কিলোমেটার দূরে আন্তর্জাতিক জলসীমায় ১২ যাত্রীসহ আন্তর্জাতিক ত্রাণবাহী জাহাজ ‘ম্যাডলিন’ আটকে দেয় ইসরায়েলি বাহিনী। পরে সেটিকে ইসরায়েলের আশদাদ বন্দরে নিয়ে যায় দেশটির নৌবাহিনী। তবে কী এবারও সুমুদ ফ্লোটিলার সঙ্গে একই আচরণ করতে যাচ্ছে ইসরায়েল? এই প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে বিশ্বজুড়ে।

বিশাল এই নৌবহরে রয়েছে ৪৭টি নৌকা ও পাঁচ শতাধিক অধিকার কর্মী। তাদের মধ্যে সুইডিশ পরিবেশকর্মী গ্রেটা থানবার্গ, সংসদ সদস্য, আইনজীবী ও অধিকারকর্মীরা রয়েছেন। নৌবহরটি বর্তমানে গাজার ভূমধ্যসাগরীয় উপকূল থেকে ১১৮ নটিক্যাল মাইল দূরে অবস্থান করছে বলে জানিয়েছে আন্তর্জাতিক অলাভজনক সংস্থা ফ্রিডম ফ্লোটিলা কোয়ালিশন (এফএফসি)।

জানা গেছে, ইসরায়েলি নৌবাহিনী বহরটি আটকানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে। কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, যাত্রীদের থামানো হলে তাদের হয় নির্বাসিত করা হবে, নয়তো আটক রাখা হবে। এই অভিযান শুরু হতে পারে স্থানীয় সময় বুধবার সন্ধ্যায়, যা ইহুদি ধর্মের পবিত্রতম দিন ইয়োম কিপ্পুর।

ফ্লোটিলার সদস্যরা জানাচ্ছেন, তাদের চারপাশে ড্রোনের তৎপরতা বেড়েছে, অজ্ঞাত কিছু জাহাজ কাছে আসছে এবং কিছু নৌকা আলো নিভিয়ে চলাচল করছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা গেছে, ইসরায়েলি টহল নৌকা বহরের প্রধান জাহাজের পাশ দিয়ে যাচ্ছে।

গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলার স্টিয়ারিং কমিটির সদস্য থিয়াগো আভিলা তার জাহাজ থেকে আল-জাজিরাকে একটি ভয়েস বার্তা পাঠিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ‘আমরা আমাদের মিশনের এক নির্ণায়ক মুহূর্তে পৌঁছে যাচ্ছি। এখন আমরা ইসরায়েলের সামরিক অবরোধের খুব কাছাকাছি রয়েছি। এখানে বিশাল সংখ্যক জাহাজ রয়েছে। এটি ইসরায়েলি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ঘোষিত পরিকল্পনার সঙ্গে মিলছে, আমাদের অভিযান অবৈধভাবে বাধাগ্রস্ত করা এবং একটি মানবিক করিডোর তৈরির আড়ালে হস্তক্ষেপ করা হতে পারে।’

দীর্ঘ সময় ফ্লোটিলা স্পেন ও ইতালির তিনটি যুদ্ধজাহাজের নজরদারিতে ছিল। তবে তাদের সরকার স্পষ্ট করেছে, সামরিক শক্তি ব্যবহার করা হবে না। ইতালির প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, উপকূল থেকে ১৫০ নটিক্যাল মাইলের মধ্যে পৌঁছালে তারা বহরটির অনুসরণ বন্ধ করবে।

ইতালির প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনি নৌবহরটি থামাতে বলেছেন। তিনি যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ২০ দফা প্রস্তাবের কথা উল্লেখ করে বলেন, ‘যুদ্ধ থামানো, গাজা পুনর্গঠন ও সীমিত ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার পথে এমন অভিযাত্রা শান্তির সম্ভাবনা নষ্ট করতে পারে’।

আয়োজকরা ইতালির অবস্থানকে ‘নাশকতা’ আখ্যা দিয়েছেন। তাদের দাবি, ইতালি ইচ্ছাকৃতভাবে ফ্লোটিলাকে বিপদের মুখে ঠেলে দিচ্ছে। এক বিবৃতিতে বলা হয়, ‘ইসরায়েল ফিলিস্তিনি জনগণকে হত্যা করছে, অনাহারে রাখছে। আমরা এগিয়ে যাচ্ছি, থামব না।’

অন্যদিকে ইসরায়েল বলেছে, তারা হামাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধে বেসামরিক প্রাণহানি এড়াতে চায়। তাদের অভিযোগ, হামাস বেসামরিক এলাকাকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করছে এবং ঘরবাড়ি, হাসপাতাল, স্কুল ও মসজিদ থেকে লড়াই চালাচ্ছে।

আইডিএফের মুখপাত্র ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এফি ডিফ্রিন জানিয়েছেন, বিপুল সংখ্যক নৌকা থাকায় গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলাকে আটকানো এবার নৌবাহিনীর জন্য অতীতের তুলনায় অনেক বড় চ্যালেঞ্জ হবে। নৌকাগুলোতে চড়ে কর্মীদের আটক করে বড় জাহাজে নেওয়া হবে। এরপর তাদের আশদাদ বন্দরে এনে নির্বাসনের জন্য পাঠানো হবে।

সামরিক সূত্রের বরাত দিয়ে সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইসরায়েল বলছে, কিছু নৌকা বন্দর পর্যন্ত টেনে আনা হতে পারে, এমনকি সমুদ্রে ডুবিয়ে দেওয়ার সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না।

হিব্রু গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, ইয়োম কিপ্পুরের সময় আশদাদ বন্দরে আনার পর অংশগ্রহণকারীদের দক্ষিণ ইসরায়েলের একটি স্থাপনায় সরিয়ে নেওয়ার কাজে প্রায় ৬০০ পুলিশ মোতায়েন থাকবে। যারা নির্বাসনে সম্মত হবেন, তাদের বৃহস্পতিবার (২ অক্টোবর) সন্ধ্যায় ফেরত পাঠানোর চেষ্টা করা হবে।

ইসরায়েলি সংবাদামধ্যম চ্যানেল ১২ জানিয়েছে, যারা অস্বীকার করবেন, তাদের বিরুদ্ধে কেটজিওট কারাগারে গঠিত বিশেষ ট্রাইব্যুনালের মাধ্যমে ব্যবস্থা নেবে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

প্রস্তুতি হিসেবে উপকূলে আটটি অ্যাম্বুলেন্স রাখা হয়েছে এবং কয়েকটি হাসপাতালে উচ্চ সতর্কতা জারি করা হয়েছে। তবে বামপন্থী ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম হারেৎজ জানিয়েছে, নিরাপত্তা কর্মকর্তারা সরকারকে কূটনৈতিক সমঝোতার পথ অনুসন্ধান করতে বলেছিলেন। তাদের মতে, রাজনৈতিক নেতৃত্ব যথেষ্ট উদ্যোগ নেয়নি। আয়োজকরা এখন পর্যন্ত সব প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছেন।

২০০৭ সালে অভ্যুত্থানের মাধ্যমে প্রতিদ্বন্দ্বী ফিলিস্তিনি বাহিনীর কাছ থেকে গাজার নিয়ন্ত্রণ নেয় হামাস। এরপর থেকে উপত্যকাটিতে শাসন করছে গোষ্ঠীটি। ইসরায়েল বলছে, হামাসের অস্ত্র পাচারের ক্ষমতা সীমিত করা প্রয়োজন। সমালোচকদের দাবি, এতে প্রায় ২০ লাখ ফিলিস্তিনিকে সম্মিলিত শাস্তি দেওয়া হচ্ছে।

২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের নেতৃত্বে হাজারো সশস্ত্র যোদ্ধা ইসরায়েলে ঢুকে পড়ে। ওই আক্রমণে এক হাজার ২০০ জন নিহত হয় এবং ২৫১ জনকে জিম্মি করা হয়। এরপর শুরু হওয়া যুদ্ধে গাজায় ভয়াবহ মানবিক সংকট তৈরি হয়েছে। লাখো মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়। চলছে বর্বরোচিত গণহত্যা।

হামাস-নিয়ন্ত্রিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় দাবি করছে, এখন পর্যন্ত ৬৬ হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়েছে। তবে ইসরায়েল বলছে, আগস্ট পর্যন্ত তারা ২২ হাজারের বেশি হামাস যোদ্ধাকে হত্যা করেছে। এছাড়া ৭ অক্টোবরের হামলায় ইসরায়েলের ভেতরে আরও এক হাজার ৬০০ সন্ত্রাসী নিহত হয়েছে।

Link copied!