গাজায় যুদ্ধবিরতি চুক্তির অংশ হিসেবে ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ বন্দিবিনিময় প্রক্রিয়া শুরু হতে যাচ্ছে। ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ সংস্থা হামাসের এক শীর্ষ কর্মকর্তা ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপিকে জানিয়েছেন, ইসরায়েলের ২০ জন জীবিত জিম্মিকে মুক্তি দেবে হামাস। বিনিময়ে এক হাজার ৯৫০ ফিলিস্তিনি বন্দিকে মুক্তি দেবে তেল আবিব। যার মধ্যে প্রায় ২৫০ জন যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত এবং বাকি এক হাজার ৭০০ জন যুদ্ধ শুরুর পর গ্রেপ্তার হওয়া বন্দি।
স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠী হামাস সূত্র জানায়, এই বিনিময় কার্যক্রম চুক্তি কার্যকর হওয়ার ৭২ ঘণ্টার মধ্যে শুরু হবে। ফিলিস্তিনি দলগুলোর সঙ্গেও এ বিষয়ে ঐকমত্য হয়েছে বলে তারা নিশ্চিত করেছে। সৌদি টেলিভিশন আল-শার্ক জানায়, চুক্তি বাস্তবায়নের ৭২ ঘণ্টার মধ্যে বন্দি ও জিম্মি বিনিময় শুরু হবে এবং এটি আগামী সপ্তাহে কার্যকর হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। অন্য একটি সৌদি চ্যানেল আল-হাদাথ জানিয়েছে, ৭২ ঘণ্টার গণনা শুরু হবে তখনই, যখন ইসরায়েলি সেনারা গাজায় নির্ধারিত সীমারেখায় সরে যাবে।
এর আগে, সংবাদমাধ্যম আলজাজিরাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এক সিনিয়র ফিলিস্তিনি সূত্র জানায়, মধ্যস্থতাকারীরা ফিলিস্তিনিদের প্রস্তাবিত মানচিত্রে সম্মতি দিয়েছেন, যেখানে ইসরায়েলি সেনাদের গাজার শহরগুলোর ভেতর থেকে ধীরে ধীরে সরে যাওয়ার পরিকল্পনা দেখানো হয়েছে। হামাসের শীর্ষ কর্মকর্তার মতে, এই চুক্তিতে ধাপে ধাপে ইসরায়েলি সেনা প্রত্যাহারের সময়সূচি নির্ধারণ করা হয়েছে, এবং এতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও আন্তর্জাতিক মধ্যস্থতাকারীদের নিশ্চয়তা অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
একইসঙ্গে, রাফাহ সীমান্ত ও এর আশপাশ থেকে ইসরায়েলি সেনা প্রত্যাহার করা হবে এবং ফিলিস্তিনি রোগী ও আহতদের মিশরে স্থানান্তর করার অনুমতি দেওয়া হবে। চুক্তি কার্যকর হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে রাফাহ সীমান্তের দুই দিকেই খুলে দেওয়া হবে। চুক্তি অনুযায়ী, প্রথম পাঁচ দিনে গাজায় প্রতিদিন কমপক্ষে ৪০০ ট্রাক ত্রাণ নিয়ে প্রবেশ করবে এবং পরবর্তী দিনগুলোতে এই সংখ্যা আরও বাড়ানো হবে বলে বার্তাসংস্থা এএফপিকে জানিয়েছেন হামাসের আরেক কর্মকর্তা।
চুক্তিতে আরও বলা হয়েছে, দক্ষিণ গাজা থেকে বাস্তুচ্যুত মানুষদের অবিলম্বে গাজা সিটি ও উত্তরাঞ্চলে ফিরে যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হবে। এই চুক্তি কার্যকর হলে, গাজার সাধারণ মানুষের জীবনে কিছুটা স্বস্তি ফিরবে বলে আশা করা হচ্ছে- যদিও এর স্থায়িত্ব ও পূর্ণ বাস্তবায়ন নিয়ে এখনো অনেক অনিশ্চয়তা রয়ে গেছে।