ঢাকা বৃহস্পতিবার, ২৩ অক্টোবর, ২০২৫

রয়টার্সের জরিপ

যুক্তরাষ্ট্রের বেশির ভাগ নাগরিক ফিলিস্তিনের স্বীকৃতি সমর্থন করেন

বিশ্ব ডেস্ক
প্রকাশিত: অক্টোবর ২৩, ২০২৫, ১০:১১ এএম
ফিলিস্তিনিদের সমর্থনে বিক্ষোভ যুক্তরাষ্ট্রে। ছবি- সংগৃহীত

যুক্তরাষ্ট্রের বেশির ভাগ নাগরিক রাষ্ট্র হিসেবে ফিলিস্তিনের স্বীকৃতি সমর্থন করেন। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স ও প্যারিসভিত্তিক বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় বাজার গবেষণা সংস্থা ইপসোসের এক জরিপে দেখা গেছে, ৫৯ শতাংশ মার্কিনি ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের স্বীকৃতির পক্ষে, ৩৩ শতাংশ মানুষ বিপক্ষে ও বাকিরা অনিশ্চিত ছিলেন বা উত্তর দেননি।

রয়টার্সের চালানো ছয় দিনের এ জরিপটি সোমবার (২০ অক্টোবর) শেষ হয়েছে। এতে আরও দেখা গেছে, ডেমোক্র্যাট পার্টির ৮০ ভাগ ও ক্ষমতাসীন ট্রাম্পের দল রিপাবলিকানের ৪১ শতাংশ সমর্থক মনে করেন ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া উচিত।

সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে যুক্তরাষ্ট্রের মিত্র দেশগুলোর মধ্যে যুক্তরাজ্য, কানাডা, ফ্রান্স ও অস্ট্রেলিয়া আনুষ্ঠানিকভাবে ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দিয়েছে। এসব পদক্ষেপের তীব্র নিন্দা জানিয়েছে ইসরায়েল।

১৯৪৮ সালে ইসরায়েলের প্রতিষ্ঠার পর থেকেই লক্ষাধিক ফিলিস্তিনি বাস্তুচ্যুত হন ও শুরু হয় দীর্ঘস্থায়ী সংঘাত। তবে ২০২৩ সালের অক্টোবরে হামাসের আকস্মিক হামলার পর গাজায় ইসরায়েলি বোমাবর্ষণে অসংখ্য ফিলিস্তিনি পাড়া-মহল্লা ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে।
জরিপে অংশগ্রহণকারীদের প্রায় ৬০ শতাংশ বলেছেন, গাজায় ইসরায়েলের প্রতিক্রিয়া ছিল ‘অতিরিক্ত ও অপ্রয়োজনীয়’, যেখানে ৩২ শতাংশ একমত হননি।

এই যুদ্ধে ট্রাম্প ইসরায়েলের প্রতি দৃঢ় সমর্থন জানিয়েছেন। তবে চলতি মাসে তিনি একটি যুদ্ধবিরতি চুক্তি করাতে সক্ষম হন, যা দীর্ঘমেয়াদি শান্তির আশাকে জাগিয়ে তুলেছে।

রয়টার্স/ইপসোস জরিপে দেখা যায়, ট্রাম্পের শান্তি পরিকল্পনা সফল হলে যুক্তরাষ্ট্রের জনগণ তাকে কৃতিত্ব দিতে প্রস্তুত। অংশগ্রহণকারীদের ৫১ শতাংশ বলেছেন, শান্তি প্রতিষ্ঠায় সফল হলে ট্রাম্প ‘গুরুত্বপূর্ণ কৃতিত্বের দাবিদার’, আর ৪২ শতাংশ এ বক্তব্যের সঙ্গে একমত নন।

যদিও সামগ্রিকভাবে মাত্র ২০ জনে ১ জন ডেমোক্র্যাট ট্রাম্পের প্রেসিডেন্ট হিসেবে পারফরম্যান্সকে অনুমোদন করেছেন, কিন্তু প্রতি চারজনের একজন বলেছেন, শান্তি বজায় থাকলে ট্রাম্পকে যথেষ্ট কৃতিত্ব দেওয়া উচিত।

জরিপে দেখা গেছে, পররাষ্ট্রনীতিতে ট্রাম্পের জনপ্রিয়তা সামান্য বেড়েছে। সাম্প্রতিক জরিপে এই হার দাঁড়িয়েছে ৩৮ শতাংশ, যা চলতি মাসের শুরুতে যুদ্ধবিরতি ঘোষণার আগের জরিপে ছিল ৩৩ শতাংশ।

তবে গাজায় শান্তি প্রক্রিয়া এখনো অনিশ্চিত। শনি (১৮ অক্টোবর) ও রোববার (১৯ অক্টোবর) নতুন করে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ায় এক সপ্তাহের যুদ্ধবিরতি ভেস্তে যাওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের কূটনীতিকরা ইসরায়েল ও হামাস উভয়ের ওপর চাপ বাড়িয়েছেন, যাতে ট্রাম্পের মধ্যস্থতায় অর্জিত পরিকল্পনাটি আবারও সঠিক পথে ফিরিয়ে আনা যায়।

আবার, এখনো অমীমাংসিত রয়ে গেছে হামাসের নিরস্ত্রীকরণ, ইসরায়েলি সেনা প্রত্যাহারের পরবর্তী ধাপ ও ভবিষ্যতে গাজার শাসনব্যবস্থা কেমন হবে- এই গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নগুলো।