ঢাকা রবিবার, ০৯ নভেম্বর, ২০২৫

উত্তেজনা নিরসনে ওয়াশিংটন শান্তিচুক্তি বাস্তবায়নের ঘোষণা রুয়ান্ডা-কঙ্গোর

বিশ্ব ডেস্ক
প্রকাশিত: নভেম্বর ৯, ২০২৫, ১২:৩৫ পিএম
শান্তিচুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠান। ছবি- সংগৃহীত

রুয়ান্ডা ও গণতান্ত্রিক কঙ্গো (ডিআর কঙ্গো) শুক্রবার (৭ নভেম্বর) উত্তেজনা প্রশমনে কাজ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে এবং ওয়াশিংটন শান্তি চুক্তি বাস্তবায়নে পুনরায় অঙ্গীকার করেছে বলে জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। আফ্রিকার বিবদমান এই দুই দেশ এ বছরের ২৭ জুন যুক্তরাষ্ট্রের রাজধানী ওয়াশিংটনে শান্তিচুক্তিতে স্বাক্ষর করেছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প, ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স, পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও এবং আফ্রিকান দুই দেশের প্রতিনিধিদের উপস্থিতিতে এই ঐতিহাসিক চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। এর আগে, যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরে ডিআর কঙ্গো ও রুয়ান্ডার পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন।

এই চুক্তির লক্ষ্য দুই দেশের কয়েক দশকের রক্তক্ষয়ী সংঘাতের অবসান ঘটানো এবং সেই সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের জন্য কঙ্গোর মূল্যবান খনিজ সম্পদের প্রবেশাধিকার নিশ্চিত করা। চুক্তির শর্তানুযায়ী, ডিআর কঙ্গোর পূর্বাঞ্চলে সক্রিয় সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর অস্ত্র পরিহার, বিচ্ছিন্নকরণ এবং শর্তসাপেক্ষে তাদের একীভূতকরণের কথা বলা হয়েছে। যদিও এ বিষয়ে বিস্তারিত কিছু জানানো হয়নি এবং অতীতেও এই অঞ্চলের বহু শান্তি চুক্তি ব্যর্থ হয়েছে। তারপরও যুক্তরাষ্ট্র এবং ডিআর কঙ্গোর প্রেসিডেন্টরা এটিকে যুগান্তকারী সাফল্য হিসেবে উপস্থাপন করেছেন।

চলতি বছরের শুরুতে দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা তুঙ্গে উঠলে কাতার উত্তেজনা কমানোর উদ্যোগ নেয়। কাতার দুই দেশের রাজধানীতে দূত পাঠিয়ে সংলাপ চালায়। পরে দোহায় দুই দেশের প্রেসিডেন্টদের বৈঠকের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তায় একটি যৌথ কমিটি গঠন করা হয়।

পূর্বাঞ্চলীয় ডিআর কঙ্গোর বহু এলাকা, গোমা শহর, বুকাভু এবং দুটি বিমানবন্দর এম-২৩ বিদ্রোহীদের দখলে চলে যাওয়ার পর সংঘাত আরও ভয়াবহ আকার নেয়। হাজার হাজার মানুষ নিহত হয়, লাখো মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়।

এরপর কঙ্গোর সরকার নিরাপত্তার নিশ্চয়তার বিনিময়ে যুক্তরাষ্ট্রকে গুরুত্বপূর্ণ খনিজ সম্পদে প্রবেশাধিকার দেওয়ার প্রস্তাব দেয় বলে জানা যায়। পূর্বাঞ্চলীয় ডিআর কঙ্গোতে কলটানসহ নানা মূল্যবান খনিজ সম্পদের ভান্ডার রয়েছে, যা বৈশ্বিক ইলেকট্রনিকস শিল্পের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

রুয়ান্ডা বরাবরই এম-২৩ বিদ্রোহীদের সহযোগিতার অভিযোগ অস্বীকার করে এসেছে। তবে প্রচুর তথ্যপ্রমাণ রয়েছে, যা এই অভিযোগের পক্ষে যায়। রুয়ান্ডার দাবি, তাদের সেনাবাহিনী ওই অঞ্চলে কেবল আত্মরক্ষামূলক অবস্থানে রয়েছে। বিশেষ করে, এফডিএলআর নামের বিদ্রোহী গোষ্ঠী, যাদের সদস্যরা মূলত ১৯৯৪ সালের রুয়ান্ডার গণহত্যার সঙ্গে জড়িত জাতিগত হুতুদের নিয়ে গঠিত, তাদের হুমকি মোকাবিলায়ই রুয়ান্ডার সেনা উপস্থিতি।

রুয়ান্ডা আবার কঙ্গোর সরকারকে এফডিএলআর-কে সহযোগিতার অভিযোগ এনে আসছে, যদিও কঙ্গো তা অস্বীকার করেছে। এফডিএলআর-এর উপস্থিতি কিগালির জন্য বড় উদ্বেগের কারণ। গত সপ্তাহে যখন চুক্তির কিছু তথ্য ফাঁস হয়, তখন ‘আঞ্চলিক অখণ্ডতার প্রতি সম্মান ও যুদ্ধবিরতির বাধ্যবাধকতা’সহ কিছু শর্তের কথা উঠে আসে। তবে সেগুলো খুব বেশি বিস্তারিত ছিল না। এছাড়া উদ্বাস্তু ও বাস্তুচ্যুতদের ফিরিয়ে আনার বিষয়েও আলোচনা হয়েছে।