রবিবার, ১৩ জুলাই, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


রূপালী ডেস্ক

প্রকাশিত: জুলাই ১৩, ২০২৫, ০৮:২৯ এএম

এয়ার ইন্ডিয়ার বিমান দুর্ঘটনা দুই পাইলটের কথোপকথনের অডিও রহস্য বাড়াল

রূপালী ডেস্ক

প্রকাশিত: জুলাই ১৩, ২০২৫, ০৮:২৯ এএম

এয়ার ইন্ডিয়ার বিমান দুর্ঘটনা দুই পাইলটের কথোপকথনের অডিও রহস্য বাড়াল

প্রাথমিক তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ

    আহমেদাবাদে বিমান বিধ্বস্ত, ছিল না বিমানের যান্ত্রিক ত্রুটি, বন্ধ ছিল ফুয়েল সুইচ:  প্রতিবেদন
    ‘আমি জ্বালানির সুইচ বন্ধ করিনি’: বিধ্বস্তের আগ মুহূর্তে এয়ার ইন্ডিয়ার পাইলট

রূপালী ডেস্ক
ভারতের আহমেদাবাদে গত জুন মাসে এয়ার ইন্ডিয়া ফ্লাইট ১৭১ বিধ্বস্ত হওয়ার এক মাস পর প্রাথমিক তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। গতকাল শনিবার ভারতের এয়ারক্রাফট অ্যাক্সিডেন্ট ইনভেস্টিগেশন ব্যুরো (এএআইবি)-এর প্রকাশিত রিপোর্ট বলছে, ওড়ার কয়েক সেকেন্ড পরেই ১২ বছরের পুরোনো বোয়িং ৭৮৭ ড্রিমলাইনারের ‘ফুয়েল-কন্ট্রোল সুইচ’ (জ্বালানি নিয়ন্ত্রক সুইচ) হঠাৎ ‘কাট-অফ’ পজিশনে চলে যায় বা বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। যে কারণে বিমানের ইঞ্জিনে জ্বালানি একেবারেই পৌঁছেনি। বিমানটি বিধ্বস্ত হওয়ার আগে ‘ফুয়েল-কন্ট্রোল সুইচ’ কাট-অফ করা নিয়ে ককপিটে থাকা দুই পাইলটের কথোপকথনের রেকর্ডও বিষয়টিকে আরও রহস্যময় করে তুলেছে। 
ককপিটের ভয়েস রেকর্ডিংয়ে শোনা যায়, একজন পাইলট অন্য পাইলটকে জিজ্ঞেস করেছেন, ‘তুমি কেন কাট-অফ করেছ?’ আরেকজন জবাব দিয়েছেন, ‘আমি করিনি।’ তবে কে কোন কথাটি বলেছেন, তা রেকর্ডিং থেকে স্পষ্ট নয়। সহ-পাইলট উড়োজাহাজ চালাচ্ছিলেন, আর ক্যাপ্টেন তদারকি করছিলেন। সুইচগুলোকে পরে আবার স্বাভাবিক ফ্লাইট অবস্থায় ফিরিয়ে আনা হয়, এতে ইঞ্জিন স্বয়ংক্রিয়ভাবে আবারও সচল হয়। তবে বিধ্বস্ত হওয়ার সময় নাগাদ একটি ইঞ্জিন শক্তি ফিরে পেলেও অন্যটি তখনো পুরো শক্তি ফিরে পায়নি। এই ঘটনার পরপরই বিমানটি দ্রুত উচ্চতা হারাতে শুরু করে। এরপর সুইচ দুটি আবারও ‘রান’ পজিশনে ফিরিয়ে আনা হয় এবং ইঞ্জিনগুলো শক্তি ফিরে পেতে শুরু করে বলে মনে হচ্ছিল। কিন্তু ঠিক তখনই একজন পাইলট ‘মে-ডে মে-ডে মে-ডে’ বলে জরুরি বিপৎসংকেত পাঠান। এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলাররা পাইলটদের কাছে সমস্যা জানতে চান, কিন্তু এর মধ্যেই তারা বিমানটিকে বিধ্বস্ত হতে দেখেন।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি লিখেছে, উড়োজাহাজটির এই ‘কাট-অফ’ মোডে যাওয়ার অর্থ জ্বালানি সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়, যা দুর্ঘটনার মূল কারণ হতে পারে। এনহ্যান্সড এয়ারবর্ন ফ্লাইট রেকর্ডারের (ইএএফআর) উপাত্ত অনুযায়ী, কিছুক্ষণ পর লন্ডনগামী এ উড়োজাহাজের দুটি ইঞ্জিনের সুইচ আবার ‘কাট-অফ’ থেকে ‘রান’-এ আনা হয়, যা পাইলটদের পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার প্রচেষ্টার ইঙ্গিত দেয়। বোয়িং ৭৮৭ ড্রিমলাইনার বা অন্য যেকোনো বাণিজ্যিক উড়োজাহাজ একটি ইঞ্জিন দিয়েই টেকঅফ সম্পন্ন করতে সক্ষম এবং এ ধরনের পরিস্থিতির জন্য পাইলটদের প্রশিক্ষণ থাকে। প্রতিবেদনে বলা হয়, উড্ডয়নরত অবস্থায় যখন জ্বালানি নিয়ন্ত্রণের সুইচ ‘কাট-অফ’ থেকে ‘রান’ বা বন্ধ থেকে চালু করা হয়, প্রতিটি ইঞ্জিনের ফুল অথরিটি ডুয়াল ইঞ্জিন কন্ট্রোল স্বয়ংক্রিয়ভাবে ইগনিশন ও জ্বালানি সরবরাহের মাধ্যমে থ্রাস্ট (যে বলে উড়োযান সামনে চালিত হয়) ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করে। তবে ইএএফআর রেকর্ডিং কয়েক সেকেন্ড পরই বন্ধ হয়ে যায়। এরপরই একজন পাইলট ‘মেডে’ অ্যালার্ট পাঠান। এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোল কল সাইন সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলেও কোনো উত্তর মেলেনি। এরপরই উড়োজাহাজটি বিমানবন্দরের বাইরে বিধ্বস্ত হয়।
জ্বালানি ভরা উড়োজাহাজটি খুব দ্রুত উচ্চতা হারিয়ে একটি মেডিকেল ছাত্রাবাসে আছড়ে পড়ে। সঙ্গে সঙ্গে বিস্ফোরণ ঘটে, উড়োজাহাজে থাকা ২৪২ জনের মধ্যে কেবল একজন বেঁচে যান এবং মাটিতে থাকা আরও প্রায় ৩০ জন নিহত হন। উড়োজাহাজটি আকাশে ছিল মাত্র ৩২ সেকেন্ড। 
উড়োজাহাজটি চালাচ্ছিলেন লাইন ট্রেনিং ক্যাপ্টেন সুমিত সাবরওয়াল, যার ৮২০০ ঘণ্টার উড়ানোর অভিজ্ঞতা ছিল। তাকে সহায়তা করছিলেন ফার্স্ট অফিসার ক্লাইভ কুন্দার, যার ১১০০ ঘণ্টা উড়ানোর অভিজ্ঞতা ছিল। প্রতিবেদন অনুসারে, দুই পাইলটই স্বাস্থ্যগতভাবে ঠিক ছিলেন এবং বিশ্রামও নিয়েছিলেন। তদন্তে তাৎক্ষণিকভাবে নাশকতার কোনো প্রমাণ মেলেনি, তবে ফেডারেল এভিয়েশন অ্যাডমিনিস্ট্রেশনে একটি সতর্কতার কথা উল্লেখ করা হয়েছে, যেখানে ফুয়েল সুইচ ত্রুটির সম্ভাবনা সম্পর্কে বলা হয়েছিল। ৭৩৭ মডেলের অপারেটরদের প্রতিবেদনের ভিত্তিতে ওই প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, লকিং ফিচার ছাড়াই ফুয়েল কন্ট্রোল সুইচ ইনস্টল করা থাকতে পারে। তবে এটিকে ‘অনিরাপদ অবস্থা’ হিসেবে বিবেচনা করা হয়নি। প্রতিবেদনে বলা হয়, বিমানবন্দরের সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গেছে, টেকঅফের পরপরই র‌্যাম এয়ার টারবাইন চালু হয়েছিল। যদি উভয় ইঞ্জিন চলতে ব্যর্থ হয় অথবা বৈদ্যুতিক ও হাইড্রলিক সিস্টেম একযোগে বন্ধ হয়ে যায়, তাহলে এই ব্যবস্থা স্বয়ংক্রিয়ভাবে চালু হয়। প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, উড়ানপথের কাছাকাছি উল্লেখযোগ্য পাখির উপস্থিতি দেখা যায়নি। উড়োজাহাজটি বিমানবন্দরের প্রাচীর পেরোবার আগেই উচ্চতা হারাতে শুরু করে।
এনডিটিভি লিখেছে, ১৯৮০-এর দশকে ডেল্টা এয়ারলাইনসের এক পাইলট ভুলবশত বোয়িং ৭৬৭ উড়োজাহাজের জ্বালানি বন্ধ করে দিয়েছিলেন। তবে সেই যাত্রায় দুর্ঘটনা এড়ানো সম্ভব হয়েছিল, কারণ উড়োজাহাজটি বেশি উচ্চতায় থাকায় তিনি ফের ইঞ্জিন চালু করতে সক্ষম হয়েছিলেন।

রূপালী বাংলাদেশ

Shera Lather
Link copied!