রংপুরে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সময় বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র আবু সাঈদ হত্যা মামলায় পলাতক ২৪ আসামির বিরুদ্ধে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের নির্দেশ দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। পাশাপাশি, তাদের আগামী ২২ জুলাইয়ের মধ্যে হাজির হওয়ার নির্দেশও দেওয়া হয়েছে।
রোববার (১৩ জুলাই) বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম চৌধুরীর নেতৃত্বে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২-এর বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
ট্রাইব্যুনালে প্রসিকিউশনের পক্ষে শুনানি করেন প্রসিকিউটর আব্দুস সোবহান তরফদার ও আব্দুস সাত্তার পালোয়ান। সঙ্গে ছিলেন প্রসিকিউটর বি এম সুলতান মাহমুদ। আসামি পক্ষে ছিলেন আইনজীবী রাশেদুল হক খোকন ও দেলোয়ার হোসেন সোহেল।
এ সময় চার আসামিকে আদালতে হাজির করা হয়। তারা হলেন, পুলিশের সাবেক এসআই আমির হোসেন, কনস্টেবল সুজন চন্দ্র রায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক প্রক্টর শরিফুল ইসলাম এবং ছাত্রলীগ কর্মী ইমরান চৌধুরী আকাশ। তারা অন্য মামলায় গ্রেপ্তার থাকায় এখন এ মামলায়ও তাদের বিরুদ্ধে কার্যক্রম চলছে।
তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়, কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময় পুলিশের গুলিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র আবু সাঈদ নিহত হন। এতে সরাসরি জড়িত ছিলেন এসআই আমির ও কনস্টেবল সুজন। এ ছাড়া অন্যরাও সহযোগিতা ও উসকানির মাধ্যমে হত্যাকাণ্ডে অংশ নেন।
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা জমা দেওয়া প্রতিবেদনে মোট ৩০ জনের সংশ্লিষ্টতার কথা বলা হয়। গত ৩০ জুন পলাতক ২৬ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হয়।
তবে সাম্প্রতিক আদেশে ২৪ জনের বিরুদ্ধে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ এবং অন্য মামলায় থাকা রাফিউল হাসান রাসেল ও আনোয়ার পারভেজ আপিলকে এ মামলায় গ্রেপ্তার দেখানোর নির্দেশ দেওয়া হয়।
২০২৪ সালের ১৬ জুলাই কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময় রংপুরে পুলিশের গুলিতে নিহত হন আবু সাঈদ। ভিডিওতে দেখা যায়, তার দুই হাত প্রসারিত থাকার সময় গুলি করা হয়, যা সারা দেশে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে। দেশব্যাপী ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ পালনের মধ্যে সহিংস আন্দোলনের সূত্রপাত হয়, যার ধারাবাহিকতায় ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতন ঘটে।
এই সময়ের সহিংসতা ও হত্যাকাণ্ডের বিচার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের মাধ্যমেই সম্পন্ন করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
আপনার মতামত লিখুন :