ঢাকা বুধবার, ১৬ জুলাই, ২০২৫

পাঁচ নারী ফুটবলারের ভবিষ্যৎ কী?

ক্রীড়া প্রতিবেদক
প্রকাশিত: জুলাই ১৬, ২০২৫, ০২:২৩ এএম

সাফজয়ী অধিনায়ক সাবিনা খাতুন, সানজিদা আক্তার, মাসুরা পারভীন, কৃষ্ণা রাণী ও মাতসুশিমা সুমাইয়াকে এখনো জাতীয় দলে ডাকা হয়নি। তাদের ছাড়াই সংযুক্ত আরব আমিরাত, জর্ডানে ত্রিদেশীয় সিরিজ ও সর্বশেষ এশিয়ান কাপ বাছাইপর্বে খেলেছে বাংলাদেশ নারী দল। এশিয়ান কাপে অপরাজিত গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়ে চূড়ান্ত পর্বে ওঠার ইতিহাস গড়েছে তারা। ফলে ওই পাঁচ সিনিয়র ফুটবলারের নাম আড়ালে পড়ে গেছে। সাবিনারা বর্তমানে ভুটান লিগে খেললেও জাতীয় দলে তাদের ভবিষ্যৎ কী, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।

গত জানুয়ারিতে ২২ মিনিটের সংবাদ সম্মেলনই কি কাল হলো সাবিনাদের জন্য? সেই সংবাদ সম্মেলনে কোচ পিটার বাটলারের ওপর নারী ফুটবলারদের রাগ, ক্ষোভ, অভিমান, অভিযোগÑ সবই প্রকাশ পায়। পরে কোচ-খেলোয়াড়দের মিলিয়ে দেয় বাফুফে। সেই বিদ্রোহীদের ১৩ জন এখন খেলছেন কোচ বাটলারের দলে। বাকি পাঁচজন দলের বাইরে। গত বছর সাফের আগে আগে কোচের সঙ্গে নারী ফুটবলারদের দ্বন্দ্ব চাউর হলে তা গুঞ্জন হিসেবেই গণমাধ্যমে আসে। তবে সাফ চলাকালীন একজন সিনিয়র নারী ফুটবলার গণমাধ্যমে সাক্ষাৎকার দিয়ে বিষয়টি প্রকাশ্যে আনেন। কোচ-খেলোয়াড়দের দ্বন্দ্বের মধ্যেই দ্বিতীয়বারের মতো সাফে চ্যাম্পিয়নও হয় বাংলাদেশ। সাফের শিরোপা জয়ের পর ছুটিতে চলে যান খেলোয়াড়েরা। কোচ বাটলারের চুক্তির মেয়াদ শেষ হওয়ায় তিনি এই দলের সঙ্গে আর কাজ না করার সিদ্ধান্ত নেন এবং ফিরে যান নিজ দেশে। তবে বাফুফে তাকে আবার নিয়োগ দিলে ঘটে বিপত্তি।

ছুটি কাটিয়ে খেলোয়াড়েরা বাফুফের আবাসিক ক্যাম্পে ফিরে বিদ্রোহ করেনÑ কোচ বাটলারের অধীনে অনুশীলন না করার সিদ্ধান্ত নেন। সংবাদ সম্মেলনে কোচের বিরুদ্ধে মানসিক হয়রানি, উৎপীড়ন, মানুষ হিসেবে অমর্যাদা করা, বডি শেমিং, দুর্ব্যবহার, ধারাবাহিক বৈষম্য, অন্যায় আচরণসহ আরও বেশ কিছু অভিযোগ তোলেন বিদ্রোহী ১৮ ফুটবলার। এমন পরিস্থিতিতে সাত সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে বাফুফে। বহু চেষ্টার পর কোচ ও খেলোয়াড়দের সঙ্গে বসেন বাফুফে সভাপতি ও নারী উইংয়ের চেয়ারম্যানসহ কর্মকর্তারা।

বিষয়টির সমাধান হয়। অনুশীলনে ফিরতে রাজি হন বিদ্রোহীরা, কোচও ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখেন তাদের ভুলকে। ওই সময় ১৮ নারী ফুটবলারকে ছাড়াই সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিপক্ষে বাংলাদেশ নারী ফুটবল দল পরপর দুটি প্রীতি ম্যাচ খেলে, দল হারে দুটি ম্যাচেই। এরপর জুনে ফিফা র‌্যাঙ্কিংয়ে এগিয়ে থাকা জর্ডান ও ইন্দোনেশিয়ার সঙ্গে সিরিজ খেলে বাংলাদেশ, দারুণ পারফরম্যান্সে করে সিরিজ ড্র। এই দলে জায়গা পেয়েছিলেন কোচের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করা ১৩ জন। এশিয়ান কাপে খেলার যোগ্যতা অর্জন করা দলেও ছিলেন সেই ১৩ জন।

সিনিয়র-জুনিয়রের মিশেলে গড়া দল নিয়ে কোচ বাটলার তার দুর্দান্ত কৌশলে সাফল্য এনে দিচ্ছেন। তবে এরই মধ্যে প্রশ্ন উঠেছে দলের বাইরে থাকা ৫ নারী ফুটবলারের ভবিষ্যৎ নিয়ে। এ বছরের অক্টোবর পর্যন্ত বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের সঙ্গে চুক্তি আছে সেই ১৮ নারী ফুটবলারের। এর মধ্যে দলের বাইরে থাকা পাঁচ ফুটবলারও আছেন। সাবিনা খাতুন, সানজিদা আক্তার, কৃষ্ণা রাণী সরকার, মাসুরা পারভীন ও মাতসুশিমা সুমাইয়া এই মুহূর্তে খেলছেন ভুটান লিগে। জানা গেছে, ভুটানের লিগেও তাদের চুক্তি অক্টোবর পর্যন্তই। একসঙ্গে দুই চুক্তি শেষ হওয়ায় পরবর্তীতে অনিশ্চিত ভবিষ্যতের দিকেই হাঁটছেন পাঁচ নারী ফুটবলার।