*** স্থবির মশকনিধন কার্যক্রমে ক্ষোভ পৌরবাসীর
রাজবাড়ীতে হঠাৎ করেই বাড়ছে ডেঙ্গুর প্রকোপ। জেলা সদর হাসপাতালসহ উপজেলার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোতে প্রতিদিনই ভর্তি হচ্ছেন নতুন নতুন রোগী। গত এক মাসে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা প্রায় দ্বিগুণ হয়ে যাওয়ায় স্থানীয়দের মধ্যে তৈরি হয়েছে উদ্বেগ ও আতঙ্ক।
স্বাস্থ্য বিভাগের তথ্য মতে, গত জুলাই মাসে রাজবাড়ীর চারটি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ডেঙ্গু রোগী ছিল ৩৮ জন। কিন্তু আগস্টে সংখ্যাটি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬১ জনে। সব মিলিয়ে এ বছরের শুরু থেকে জেলায় ১২৬ জন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছেন।
ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী অনিক মাহমুদ বলেন, ‘চার দিন ধরে হাসপাতালে ভর্তি আছি। প্রতিদিন প্লাটিলেট পরীক্ষা করতে হচ্ছে। এখন একটু সুস্থতার দিকে যাচ্ছি।’ আরেকজন রোগী আলম শেখ অভিযোগ করে বলেন, ‘আমার ডেঙ্গু হয়নি, কিন্তু আমাকে ডেঙ্গু রোগীদের সঙ্গে একই কক্ষে রাখা হয়েছে। এতে আমারও ঝুঁকি বাড়ছে। ডেঙ্গু রোগীদের জন্য আলাদা ওয়ার্ড থাকা উচিত। মশারির ভেতরে থাকার নিয়ম মানা হচ্ছে না।’
হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. শেখ মোহাম্মদ আব্দুল হান্নান বলেন, ‘জেলার বিভিন্ন স্থান থেকে ডেঙ্গু রোগী আসছেন। আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করে চিকিৎসা দিচ্ছি। তবে ডেঙ্গু প্রতিরোধে জনগণকেও সচেতন হতে হবে।’
জেলা সিভিল সার্জন ডা. এস এম মাসুদ মনে করছেন পরিস্থিতি এখনো নিয়ন্ত্রণের বাইরে যায়নি। তিনি বলেন, ‘ডেঙ্গুর মৌসুম চলছে, তবে আমাদের জেলায় ভয়াবহ আকারে ছড়ায়নি। এখনো মৃত্যু হয়নি। আর দুই মাস গেলেই মৌসুম শেষ হবে।’
কিন্তু সাধারণ মানুষের প্রশ্ন- যদি এখনই কার্যকর ব্যবস্থা না নেওয়া হয়, তবে মৌসুম শেষ হওয়ার আগেই পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করবে। অন্যদিকে শহরে মশার উপদ্রব বেড়ে যাওয়ায় নগরবাসী ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন পৌর কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে। অভিযোগ, দীর্ঘ এক বছর ধরে রাজবাড়ী পৌর এলাকায় কোনো কার্যকর মশকনিধন কর্মসূচি নেই। ড্রেনে কীটনাশক দেওয়া বন্ধ, ফগার মেশিনও সচল নেই।
এ বিষয়ে পৌরসভার নির্বাহী কর্মকর্তা মো. তায়েব আলী বলেন, ‘কাভার্ডভ্যান পর্যাপ্ত না থাকায় সব এলাকায় ময়লা পরিষ্কার করা যাচ্ছে না। এ ছাড়া মশা মারার ওষুধও পৌরসভায় নেই। যে ফগার মেশিনগুলো আছে, তার মধ্যে ভালো আছে মাত্র দুইটি। প্রশাসনকে জানিয়েছি, সরঞ্জাম পেলে নাগরিকদের সেবা দেওয়া যাবে।’
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন