টানা দুই ম্যাচে দাপুটে জয়ে নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজ ২-০ ব্যবধানে নিজেদের করে নিয়েছে স্বাগতিক বাংলাদেশ। প্রথম ম্যাচে ৮ উইকেটে আর দ্বিতীয় ম্যাচে ৯ উইকেটে জয় পায় লিটন দাসরা। তিন ম্যাচ সিরিজের তৃতীয় ও শেষ টি-টোয়েন্টি ম্যাচে আজ দুদল পরস্পরের মুখোমুখি। সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ডাচদের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজ ৩-০ ব্যবধানে জয়ের টার্গেট বাংলাদেশের। এ মিশন নিয়েই আজ লড়াইয়ে নামবেন লাল-সবুজের জার্সিধারীরা।
ঘরের মাঠে আড়াই বছর পর বাংলাদেশের সামনে তিন ম্যাচের দ্বিপক্ষীয় টি-টোয়েন্টি সিরিজে প্রতিপক্ষকে হোয়াইটওয়াশ করার হাতছানি। ২০২৩ সালে সফরকারী ইংল্যান্ডকে নিজেদের মাটিতে তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজে ৩-০ ব্যবধানে হোয়াইটওয়াশ করেছিল টাইগাররা। এরপর দেশে-বিদেশে ৬টি টি-টোয়েন্টি সিরিজ জিতেছে তারা। এর মধ্যে গত বছর ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজে ৩-০ ব্যবধানে হোয়াইটওয়াশ করেছিল বাংলাদেশ। এবার ঘরের মাঠে আরেকটি টি-টোয়েন্টি সিরিজে ৩-০ ব্যবধানে জয়ের পথে তারা। আজ নেদারল্যান্ডসকে হারাতে পারলেই সিরিজ ৩-০ ব্যবধানে জিতবেন লিটনরা।
এশিয়া কাপের প্রস্তুতির অংশ হিসেবে নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজ খেলছে বাংলাদেশ। বেশ আগ্রাসী ক্রিকেট খেলে নিজেদের ঝালিয়ে নিচ্ছেন স্বাগতিকরা। ব্যাটিং, বোলিং ও ফিল্ডিংÑ তিন বিভাগেই দুর্দান্ত পারফরম্যান্স দেখাচ্ছেন তারা। টি-টোয়েন্টি মেজাজের আসল ক্রিকেটটাই খেলছে বাংলাদেশ। দ্বিতীয় ম্যাচ জয়ের পর বাংলাদেশের আক্রমণাত্মক ক্রিকেট খেলা প্রসঙ্গে তরুণ ওপেনার তানজিদ হাসান তামিম জানালেন, দলের এই আক্রমণাত্মক মানসিকতায় খেলাটা মোটেই কাকতালীয় ব্যাপার নয়। তিনি বলেন, ‘আমাদের পুরো দলকে স্বাধীনতা দেওয়া হয়েছে, যে যার মতো খেলতে পারবে। যার যে ভূমিকা আছে, তা মাঠে কীভাবে বাস্তবায়ন করতে পারে, তা পরিষ্কার করে দেওয়া আছে টিম ম্যানেজমেন্ট থেকে।’ ওপেনার হিসেবে তানজিদও নিজের উন্নতি মেলে ধরেছেন। এ বছর এখন পর্যন্ত ১৩ ম্যাচ খেলে ফিফটি ৩টি। ব্যাটিং গড় ৩৫.৭২, স্ট্রাইক রেট ১৪৫.৫৫। যদিও নিজেকে হার্ড হিটার মনে করেন না। তবে পাওয়ার হিটিং কোচ জুলিয়ান উডের সঙ্গে কাজ করে নিজেকে আরও শাণিত করার চেষ্টা করছেন তিনি।
তামিম বলেন, ‘আমি যে ধরনের ব্যাটসম্যান, আমার জন্য হার্ড হিটিং করাটা কঠিন। চেষ্টা করছিÑ উডের সঙ্গে কথা হয়েছে আমার। এখান থেকে কীভাবে আরেকটু ভালো হিটিং করতে পারি, সেটা নিয়ে কাজ হচ্ছে। তবে তিনি খুব বেশি নড়াচড়া করছেন না আমাকে (ব্যাটিংয়ের ধরন)। শুধু এখান থেকে কীভাবে আরও ভালো ধারালো, আরও ভালো ভারসাম্য নিয়ে আমি আরও ভালো করতে পারি, এটা নিয়েই কাজ করছি তার সঙ্গে।’ এশিয়া কাপের আগে ডাচদের বিপক্ষে খেলে নিজেদের প্রস্তুতির সার্বিক মূল্যায়ন করতে গিয়ে তামিম বলেন, ‘আমার কাছে মনে হয়েছে, আলহামদুলিল্লাহ অনেক ভালো হয়েছে। এই সিরিজ শুরুর আগে লম্বা সময় পেয়েছিলাম। এই সিরিজ শুরুর আগেও সিলেটে অনুশীলন করেছি। সিলেটের উইকেট আমরা সবাই জানি কেমন, অনেক ভালো উইকেটে অনুশীলন করতে পেরেছি। তো আমাদের পরিকল্পনা ছিল জয়ের ছন্দটা যেন ঠিক থাকে, সবাই যেন যার যার পারফরম্যান্সটা ঠিকমতো করতে পারে। উইকেট নিয়ে ভাবছি না, কারণ সেখানে (এশিয়া কাপে) যেকোনো কিছু হতে পারে। তাই মূল কথা হচ্ছেÑ পরিস্থিতি আমরা কীভাবে সামাল দেব, দলের সবাই এই চেষ্টাই করছে।’ পাওয়ার হিটিং কোচ উডের ছোঁয়ায় বদলে গেছেন বাংলাদেশের অন্য ব্যাটসম্যানরা। অধিনায়ক লিটন কুমার দাস দারুণ ছন্দে আছেন। অন্য যারা সুযোগ পাচ্ছেন, নিজেদের ব্যাটিংয়ে মেলে ধরছেন। প্রত্যাশা করা হচ্ছে, প্রথম দুই ম্যাচের মতো তৃতীয় টি-টোয়েন্টিতেও জয়ের ধারা অব্যাহত রাখবে বাংলাদেশ।
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন