শনিবার, ০৬ সেপ্টেম্বর, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


নিজস্ব প্রতিবেদক, ময়মনসিংহ

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ৬, ২০২৫, ০৭:১৪ এএম

পুনরায় আঁকতে দিলেন বিবৃতি

গ্রাফিতি মুছে সমালোচনায় ডিসি

নিজস্ব প্রতিবেদক, ময়মনসিংহ

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ৬, ২০২৫, ০৭:১৪ এএম

গ্রাফিতি

গ্রাফিতি

নিজ বাসভবনের সীমানা প্রাচীরের ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে আঁকা ফ্যাসিবাদবিরোধী গ্রাফিতি মুছে ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েছে ময়মনসিংহ জেলা প্রশাসক মুফিদুল আলম। এরই মধ্যে গত বৃহস্পতিবার রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক পোস্টে একটি বিবৃতি দিয়ে পুনরায় গ্রাফিতি অংকনের কথা জানিয়েছেন তিনি।

তবে জেলা প্রশাসকের একের পর বিতর্কিত কর্মকা- গ্রহণযোগ্য নয় বলে জানিয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র ও নাগরিক সমাজের নেতারা।

নগরীর ব্রহ্মপুত্র নদের পাড়ে ঐতিহাসিক সার্কিট হাউস মাঠসংলগ্ন জেলা প্রশাসকের সরকারি বাসভবন। তার বাসভবনের সামনে দিয়ে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের চলাচল করেন। গত বছরের জুলাই-আগস্ট আন্দোলনের পর জেলা প্রশাসকের বাসভবনের দেয়ালে ফ্যাসিবাদবিরোধী, দুর্নীতিবিরোধী ও রাষ্ট্র সংস্কারধর্মী গ্রাফিতি আঁকা হয়। যার চিত্র প্রতিনিয়ত চলাচলকারী মানুষকে জুলাই-আগস্টের স্পিরিট ধারণে উজ্জীবিত করত।

সম্প্রতি সীমানাপ্রাচীরে আঁকা জুলাই-আগস্টের চেতনার গ্রাফিতি প্রায় ১৮ লাখ টাকা ব্যয়ে মুছে দিয়ে সাদা রঙে ঢেকে দেওয়া হয়েছে, যা নিয়ে ফুঁসে উঠেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র ও নাগরিক সমাজের নেতারা।

তারা বলছেন, ইতিহাস সাক্ষী, ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার পতনের পর বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে অংশ নিয়ে শিক্ষার্থীরা শহরের বিভিন্ন দেয়ালে, এমনকি জেলা প্রশাসকের সরকারি বাসভবনের দেয়ালেও আঁকেন বিপ্লবী গ্রাফিতি। ফ্যাসিবাদবিরোধী সেøাগান, রাষ্ট্র সংস্কারের বার্তা ও জুলাই-আগস্টের অগ্নিঝরা স্মৃতি ফুটে ওঠে এসব দেয়ালে। কিন্তু এক বছরের মাথায় সেসব চিত্র সাদা রঙে ঢেকে দেওয়ার মানে হলো ইতিহাস মুছে ফেলার কঠিন ষড়যন্ত্র।

জুলাই আন্দোলনের সামনের সারি থেকে নেতৃত্ব দেওয়া জেলা ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি গোকুল সূত্রধর মানিক বলেন, জুলাই আন্দোলনের স্পিরিট ইচ্ছে করলেই ডিসি ধারণ করতে পারবে না। যার বড় প্রমাণ গ্রাফিতি মুছে ফেলা। জুলাই-আগস্ট আন্দোলনের আগে তিনি কি ছিলেন এক হাজার ছাত্রকে জিজ্ঞেস করবেন তাহলে উত্তর পাবেন তিনি ২৪-এর পক্ষে না বিপক্ষে। আবার তিনি বিবৃতি দিয়ে বলেছেন গ্রাফিতি অংকন করে দেবেন। বললেই হলো- গত বছর টাউন হলের গ্রাফিতি মুছে কি অংকন করেছেন! দেখতেই পারছেন।

জুলাই আন্দোলনের আরেক যোদ্ধা জেলা ছাত্র ফ্রন্টের আহ্বায়ক আরিফুল হাসান বলেন, ডিসি একের পর এক বিতর্কিত কর্মকা- করে যাচ্ছেন। আন্দোলনের পর ছেলেমেয়েরা হাসিনা সরকারের অপকর্ম গ্রাফিতির মাধ্যমে তুলে ধরেছিলেন। গ্রাফিতি হচ্ছে মূলত আন্দোলন ও প্রতিবাদের ভাষা। দেয়ালের সেøাগানগুলো আন্দোলনকে ত্বরান্বিত করেছে। এর আগে সার্কিট হাউস মাঠে সালামি মঞ্চের চারপাশে ইটের গাঁথুনি, হরিকিশোর রায়রোডে হেরিটেজ বাড়ি ভাঙা এবং সাহিত্য সংসদ গুঁড়িয়ে দিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি করেছেন ডিসি। তিনি কেন এগুলো করে আসলে কার এজেন্ডা বাস্তবায়ন করছেন।

সমাজ রূপান্তর সাংস্কৃতিক সংঘের সভাপতি ইমতিয়াজ আহমেদ বলেন, গ্রাফিতি মুছা নির্বোধের কাজ পাশাপাশি সেটি স্বজ্ঞানে করা হয়েছে। গ্রাফিতি আন্দোলনের প্রতিচ্ছবি, যা মানুষ দেখে ধারণ করে। একটি বছর যেতে না যেতেই তা মুছে কিসের ইঙ্গিত দিচ্ছেন। একজন জেলার সর্বোচ্চ কর্মকর্তার বাসভবনের দেয়ালে যদি এমন অপকর্ম হয় তাহলে অন্য স্থানে কি হবে?

এ বিষয়ে মহানগর জামায়াতের আমির মাওলানা কামরুল আহসান মোহাম্মদ এমরুল বলেন, জুলাইয়ের এক বছর যেতে না যেতেই গ্রাফিতি মুছে ফেলা কোনোভাবেই ঠিক হয়নি। এটা চেতনাবিরোধী। জেলা প্রশাসক দেয়াল সংস্কার করবেন, সেটা কয়েকজনের সঙ্গে বসে সিদ্ধান্ত নিলেই পারতেন।

জেলা বিএনপির সদস্য সচিব মোহাম্মদ রোকনুজ্জামান সরকার রোকন বলেন, জেলা প্রশাসক জুলাই-আগস্ট আন্দোলনের স্পিরিট ধারণ করলে এমনটি করতে পারতেন না। গ্রাফিতি মুছা কোনোভাবেই ঠিক হয়নি। দেয়াল সংস্কার অন্যভাবেও করা যেত। 

গ্রাফিতি মুছে ফেলার বিষয়টি জানতে সাংবাদিকরা একাধিকবার জেলা প্রশাসকের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করলেও কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি। তার সরকারি মোবাইলে পাঠানো বার্তারও উত্তর মেলেনি। তবে এডিসি সাইফুল্লাহিল গালিব জানিয়েছেন, দেয়াল সংস্কারের জন্য গ্রাফিতি মুছে দেওয়া হয়েছে এবং পরে নতুন করে আঁকা হবে।

এদিকে, বৃহস্পতিবার রাতে ডিসি ময়মনসিংহ ফেসবুক পোস্টে একটি বিবৃতি দেন। সেখানে তিনি উল্লেখ করেন, ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট জেলা প্রশাসনের বাংলো, দেয়াল, গেট এবং ৫টি গাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তা মেরামতে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে অনেক লেখালেখি করে বরাদ্দ আনা হয়। কাজ না করলে ল্যাপস হয়ে যাবে। কাজ করতে গিয়ে গ্রাফিতিতে সিমেন্টের আচড় লাগে। এটা নিয়ে ভুল  বোঝাবুঝির অবকাশ নেই, পুনরায় আরও সুন্দর ও মনোমুগ্ধকর গ্রাফিতি করে দেব।

প্রায় ১৮ লাখ টাকা ব্যয়ে জেলা প্রশাসক বাসভবনের ১ হাজার ৮০০ বর্গফুট দেয়াল কয়েক ফুট উচু করে রঙ, দেয়ালের ৩০০ ফুটে কাঁটা তার লাগানোর কাজ পান আওয়ামীমনা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স মাহবুব এন্টারপ্রাইজ, যা নিয়েও বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে।

রূপালী বাংলাদেশ

Link copied!