ইউক্রেনকে যুদ্ধপরবর্তী নিরাপত্তার নিশ্চয়তা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে ২৬টি পশ্চিমা মিত্র দেশ। এদিকে রুশ প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিন হুমকি দিয়েছেন, কোনো পশ্চিমা দেশ ইউক্রেনে সেনা মোতায়েন করলে তারা রাশিয়ার ‘বৈধ নিশানায়’ পরিণত হবে বলে।
ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ জানিয়েছেন, যুদ্ধবিরতি চুক্তি নিয়ে সমঝোতা হওয়ার পরদিন থেকেই এ দেশগুলো ‘স্থল, সাগর ও আকাশপথে’ ইউক্রেনে সেনা মোতায়েন করতে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার ফ্রান্সের এলিসি প্রাসাদে ৩৫টি দেশের ‘কোয়ালিশন অব দ্য উইলিং’-এর সম্মেলন শেষে ম্যাক্রোঁ এ কথা জানান। তিনি রাশিয়ার বিরুদ্ধে শান্তি প্রক্রিয়ায় দেরি করা এবং ইউক্রেনের আরও ভূমি দখলের জন্য সময় ক্ষেপণের চেষ্টার অভিযোগও করেন।
গত মাসে যুক্তরাষ্ট্রের আলাস্কায় রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিন ও যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বৈঠকের পর থেকে ইউক্রেন এবং রাশিয়ার মধ্যে যুদ্ধ বন্ধে বৈঠক হওয়ার আশা ক্ষীণ হয়ে গেছে।
গত বৃহস্পতিবার পশ্চিমা মিত্রদেশগুলোর সঙ্গে ট্রাম্প ফোনে কথা বলেছেন। এরপর ম্যাক্রোঁ জানান, ইউক্রেনকে যুক্তরাষ্ট্রের নিরাপত্তা দেওয়ার বিষয়টি নিয়ে আগামী দিনগুলোয় চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
প্রকাশ্যে খুব কম দেশই যুদ্ধবিরতি চুক্তি হওয়ার ক্ষেত্রে ইউক্রেনে স্থলসেনা মোতায়েনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। আর যুক্তরাষ্ট্র এরই মধ্যে ইউক্রেইনে সেনা মোতায়েনের পদক্ষেপ নাকচ করে দিয়েছে।
ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রোঁ রাজধানী প্যারিসের এলিসি প্রাসাদে এক সংবাদ সম্মেলনে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির পাশে দাঁড়িয়ে বলেন, ‘সংঘাত যে দিনই বন্ধ হবে, নিরাপত্তার নিশ্চয়তা দিতে সেনা মোতায়েন শুরু হয়ে যাবে।’
ইউরোপীয় কর্মকর্তারা বলছেন, শান্তি এখনো অনেক দূর বলে মনে হচ্ছে। কিন্তু যুদ্ধ যখনই শেষ হোক, তারা প্রস্তুত থাকতে চাইছেন। ম্যাক্রোঁ ২৬টি দেশের নাম বলেননি।
প্রাথমিকভাবে তিনি কেবল বলেছেন, ২৬টি দেশ ইউক্রেনে সেনা মোতায়েন করবে। তবে পরে তিনি এ-ও বলেন, কিছু দেশ ইউক্রেইনের বাইরে থেকে নিরাপত্তার গ্যারান্টি দেবে। যেমন ইউক্রেনের সেনাদের প্রশিক্ষণ সহায়তা এবং ইউক্রেনের বাহিনীকে অস্ত্রে সুসজ্জিত করা।
এদিকে ম্যাখোঁর এ বার্তা পরবর্তী প্রতিক্রিয়ায় ভøাদিভস্তকে এক অর্থনৈতিক ফোরামে পুতিন বলেন, ‘কিছু সেনা যদি সেখানে হাজির হয়, বিশেষ করে এখন, সামরিক অভিযান চলাকালে, তাহলে আমরা ধরে নেব, নিশ্চিহ্ন করার জন্য তারা আমাদের বৈধ টার্গেট।
মস্কোর ‘বিশেষ সামরিক অভিযান’ শুরুর অন্যতম কারণই ছিল, ন্যাটো যেন কিইভকে সদস্য বানিয়ে ইউক্রেনে তাদের সেনা মোতায়েন করতে না পারে তা নিশ্চিত করা।
পুতিন আরও বলেন, ‘আর যদি শান্তির বিষয়ে সিদ্ধান্তে পৌঁছানো যায়, দীর্ঘমেয়াদি শান্তি, তাহলে ইউক্রেনের ভূখ-ে (অন্য দেশের সেনা) উপস্থিতির কোনো কারণই দেখি না আমি। এটাই শেষ কথা।’
তবে যুক্তরাষ্ট্র যে ইউক্রেইনকে নিরাপত্তার নিশ্চয়তা দিতে ইচ্ছুক সে বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই বলে জানিয়েছেন ম্যাক্রোঁ।
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন