পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জ উপজেলার কাকড়াবুনিয়া ইউনিয়নের দক্ষিণ কাকড়াবুনিয়া গ্রামের মৃত শাজাহান সরদারের স্ত্রী ভানু বেগম (৭০) বয়সের ভারে ন্যুব্জ হলেও ৯ মাস বয়সি অসুস্থ নাতি আরিয়ান হাসানকে আঁকড়ে ধরে বাঁচতে চাইছেন। কিন্তু অভাবের তাড়নায় দিন কাটছে তার ভীষণ দুশ্চিন্তায়।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, প্রায় তিন বছর আগে ভানু বেগমের কন্যা আমেনা আক্তারের সঙ্গে গাজীপুরের জাকির শেখের ছেলে জায়েদুল শেখের বিয়ে হয়। সংসারে সুখ থাকলেও বছর দুই না যেতেই দাম্পত্য সম্পর্কে ফাটল ধরে। তাদের ঘরে জন্ম নেয় এক পুত্রসন্তান, আরিয়ান হাসান। শিশুটি যখন মাত্র ৯ মাস বয়সি, তখনই জায়েদুল গোপনে আরেকটি বিয়ে করে। পরে কৌশলে স্ত্রী আমেনা আক্তার ও শিশুটিকে ভানু বেগমের কাছে রেখে চলে যায়।
অভাবের কারণে মেয়ে আমেনা ঢাকায় গিয়ে গার্মেন্টস কারখানায় কাজ নেন। নাতি আরিয়ানকে রেখে যান বৃদ্ধা মায়ের কাছে। সেই থেকে শিশুটির একমাত্র ভরসা নানি ভানু বেগম।
ভানু বেগম কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘মুই হাত পাইত্তা খাই, খয়রাত করি। স্বামী মরে গেছে, কোনো পোলা নাই। মুই কোনো ভাতা পাই না, ধনীরাই পায়। এখন কইলজার টুকরাডারে (নাতিকে) কী খাওয়ামু?’
তিনি আরও জানান, বর্তমানে নাতি অসুস্থ। কিন্তু ডাক্তারের কাছে নেওয়ার মতো টাকা নেই। বয়সের ভারে দ্বারে দ্বারে সাহায্য চাইতেও লজ্জা লাগে।
এদিকে ভানু বেগমের দুঃখগাথা এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে। স্থানীয়রা বলছেন, এত কষ্টের মধ্যে ভানু বেগম নাতিকে আগলে রেখেছেন, যা এক অসাধারণ মমতার উদাহরণ।
মির্জাগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. তরিকুল ইসলাম বলেন, ‘ভানু বেগম সমাজসেবা অধিদপ্তরের মাধ্যমে পুনর্বাসনের আওতায় আসবেন। এ জন্য তাকে একটি আবেদন করতে বলা হয়েছে।’
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন