সোমবার, ১৩ অক্টোবর, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


রূপালী প্রতিবেদক

প্রকাশিত: অক্টোবর ১৩, ২০২৫, ১২:১১ এএম

টাইফয়েডের টিকাদান ক্যাম্পেইন শুরু

আক্রান্তের হারে উদ্বেগ সতর্কতার আহ্বান

রূপালী প্রতিবেদক

প্রকাশিত: অক্টোবর ১৩, ২০২৫, ১২:১১ এএম

আক্রান্তের হারে উদ্বেগ সতর্কতার আহ্বান

দেশজুড়ে একযোগে প্রথমবারের মতো শুরু হয়েছে টাইফয়েডের টিকাদান কর্মসূচি। প্রায় ৫ কোটি শিশুকে টিকার আওতায় নিয়ে আসার লক্ষ্য নিয়ে শুরু হওয়া কর্মসূচির উদ্বোধন করেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা উপদেষ্টা ডা. বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার। রোগটির প্রকোপ দেশে উদ্বেগজনক পর্যায়ে রয়েছে উল্লেখ করে উদ্বোধনের সময় তিনি টিকা গ্রহণের মাধ্যমে সবাইকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, টাইফয়েডের প্রকোপ বাংলাদেশে এখনো উদ্বেগজনক এবং অ্যান্টিবায়োটিকের কার্যকারিতা কমে যাওয়ায় রোগটি আরও জটিল হয়ে উঠছে। তাই সবাইকে খাদ্যাভ্যাস, পরিচ্ছন্নতা ও টিকাদানে সচেতন হতে হবে।

গতকাল রোববার সকালে ঢাকা রেসিডেনসিয়াল মডেল কলেজে ‘টাইফয়েড টিকাদান ক্যাম্পেইন ২০২৫’-এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ আহ্বান জানান তিনি। ডা. বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার বলেন, আমাদের দেশে টাইফয়েডের প্রকোপ বেশি এবং এর চিকিৎসা ব্যয়বহুল। পাশাপাশি অ্যান্টিবায়োটিক রেজিস্ট্যান্স দিন দিন বাড়ছে, ফলে অনেক ওষুধই এখন আর কার্যকর নয়। এর ফলেই প্রতিবছর অসংখ্য শিশু টাইফয়েডে আক্রান্ত হয়ে প্রাণ হারায়। তাই আমাদের নিজেদের দৈনন্দিন অভ্যাসে পরিবর্তন আনতে হবে খাবার গ্রহণে সতর্কতা, নিয়মিত হাত ধোয়া, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন পরিবেশ বজায় রাখা এবং অবশ্যই টিকা গ্রহণকে গুরুত্ব দিতে হবে। 

তিনি আরও বলেন, টাইফয়েড টিকাদান ক্যাম্পেইন নিয়ে শুধু সরকারের নয়, সমাজের সব শ্রেণির মানুষের মধ্যে ব্যাপক সচেতনতা সৃষ্টি করতে হবে। যত বেশি অভিভাবক এ উদ্যোগ সম্পর্কে জানবেন, তত বেশি শিশুকে আমরা সুরক্ষার আওতায় আনতে পারব। তিনি বলেন, শিশুদের সুরক্ষা শুধু সরকারের দায়িত্ব নয়, এটি আমাদের সম্মিলিত দায়িত্ব। প্রত্যেক পরিবার, শিক্ষক এবং সম্প্রদায় যদি সতর্ক থাকে ও টিকা গ্রহণে উৎসাহিত করে, তাহলে টাইফয়েডকে আমরা পুরোপুরি পরাজিত করতে পারব।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ঢাকা রেসিডেনসিয়াল মডেল কলেজের অধ্যক্ষ ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. জাবের হোসেন। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব সাইদুর রহমান, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব আবু তাহের মো. মাসুদ রানা, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ইমরুল কায়েস চৌধুরী, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার টিম লিড সুধীর যোশী এবং ইউনিসেফ বাংলাদেশের চিফ অব হেলথ চন্দ্রশেখর সোলায়মান। উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শেষে ডা. বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার রাজধানীর লেক সার্কাস উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ের টিকা কেন্দ্র পরিদর্শন করেন এবং টিকাদান কার্যক্রমের অগ্রগতি দেখেন।

মাসব্যাপী এই জাতীয় কর্মসূচির আওতায় ৯ মাস থেকে ১৫ বছরের কম বয়সি সব শিশু এবং প্রাক-প্রাথমিক থেকে নবম শ্রেণি বা সমমানের শিক্ষার্থীদের বিনা মূল্যে এক ডোজ ইনজেকটেবল টাইফয়েড টিকা দেওয়া হবে। সরকারের লক্ষ্য, সারা দেশে প্রায় পাঁচ কোটি শিশুকে এই ক্যাম্পেইনের আওতায় আনা।

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, প্রাক-প্রাথমিক থেকে নবম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষার্থীরা ৩০ অক্টোবর পর্যন্ত স্কুল ও মাদ্রাসায় এই টিকা পাবে। এরপর ৯ মাস থেকে ১৫ বছরের কম বয়সি অন্যান্য শিশু বাড়ি বাড়ি গিয়ে টিকা পাবে। শহরের পথশিশুদের টিকাদানের দায়িত্বে থাকবে বিভিন্ন এনজিও। সরকারের লক্ষ্য- এই ক্যাম্পেইনের আওতায় ৪ কোটি ৯০ লাখ শিশুকে টিকা দেওয়া। ইতিমধ্যে ১ কোটি ৬৮ লাখ শিশু নিবন্ধন করেছে এবং নিবন্ধন প্রক্রিয়া এখনো চালু রয়েছে। জন্মসনদ না থাকলেও নিকটস্থ টিকাকেন্দ্রে স্বাস্থ্যকর্মীদের সহায়তায় নিবন্ধন করা যাবে।

অভিভাবকেরা সন্তানদের নিবন্ধনের জন্য যঃঃঢ়ং://াধীবঢ়র.মড়া.নফ/ৎবমরংঃৎধঃরড়হ/ঃপা ওয়েবসাইটে গিয়ে ১৭ সংখ্যার জন্মনিবন্ধন নম্বর ব্যবহার করে রেজিস্ট্রেশন করতে পারবেন। নিবন্ধনের পর সরাসরি ভ্যাকসিন কার্ড ডাউনলোড করা যাবে। ইপিআই (সম্প্রসারিত টিকাদান কর্মসূচি) প্রোগ্রামের ম্যানেজার ডা. আবুল ফজল মো. শাহাবুদ্দিন খান জানান, ১২ অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া এই ক্যাম্পেইনের প্রথম ১০ দিন স্কুল ও মাদ্রাসায় ক্যাম্প করে টিকা দেওয়া হবে এবং পরবর্তী ৮ দিন ইপিআই সেন্টারে টিকাদান কার্যক্রম চলবে।

টাইফয়েড টিকাদান কর্মসূচি শুরু করেছে ডিএনসিসি :

টাইফয়েড জ্বর প্রতিরোধে টিকাদান কর্মসূচি ২০২৫ শুরু করেছে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি)। গতকাল রোববার থেকে নিজেদের ১০ দশটি অঞ্চলে ১৮ কর্মদিবসব্যাপী এই ক্যাম্পেইন চলবে আগামী ১৩ নভেম্বর পর্যন্ত। এই কর্মসূচির আওতায় মোট ১২ লাখ ৯৪ হাজার ৬৯ জন শিশুকে টিকা প্রদান করা হবে বলে জানিয়েছে ডিএনসিসি। গতকাল রোববার রাজধানীর মোহাম্মদপুরে রেসিডেন্সিয়াল মডেল কলেজে টিকাদান কর্মসূচির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনী অনুষ্ঠান আয়োজিত হয়। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা অধ্যাপক ডা. বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার প্রধান অতিথি হিসেবে এই কর্মসূচির উদ্বোধন করেন। এ সময় ডিএনসিসির প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ এবং সংস্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

অনুষ্ঠানে জানানো হয়, ডিএনসিসির আওতাধীন এলাকার দুই হাজার ১৮১টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রায় সাত লাখ ৬০ হাজার ৭৯০ জন ছাত্র-ছাত্রী এবং কমিউনিটি পর্যায়ে ৬৫৬টি ইপিআই কেন্দ্রসমূহে প্রায় পাঁচ লাখ  ৩৩ হাজার ২৭৯ জন শিশুকে টিকা প্রদান করা হবে। এদের মধ্যে ডিএনসিসির শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে ২০২টি ইংরেজি মিডিয়াম স্কুলের ৫৪ হাজার ৬৬৮ জন, ২১টি ক্যান্টনমেন্ট বোর্ড স্কুলের ৫৬ হাজার ৪৬৫ জন এবং ৫১০টি মাদ্রাসার তিন লাখ চার হাজার ৩১৬ জন ছাত্র-ছাত্রী রয়েছে। টিকা কার্যক্রমে প্রতিদিন ৭১২ জন ভ্যাকসিনেটর এবং ৯৭২ জন স্বেচ্ছাসেবী অংশগ্রহণ করবেন। ১২ অক্টোবর থেকে ৩০ অক্টোবর পর্যন্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে মোট ১০ দিন টিকা প্রদান করা হবে। 

অন্যদিকে, ১৩ অক্টোবর থেকে ১৩ নভেম্বর পর্যন্ত স্থায়ী ইপিআই টিকাদান কেন্দ্রসমূহে এবং ১ থেকে ১৩ নভেম্বর পর্যন্ত স্যাটেলাইট বা আউটরিচ ইপিআই কেন্দ্রসমূহে টিকা প্রদান করা হবে। প্রতিদিন সকাল ৮টা থেকে বিকেল সাড়ে ৩টা পর্যন্ত টিকা প্রদান কর্মসূচি চলবে। নির্ধারিত পরিকল্পনা অনুযায়ী প্রতিদিন ৭২ হাজার শিশু ও ছাত্র-ছাত্রীকে টাইফয়েড টিকা প্রদান করা হবে।

রূপালী বাংলাদেশ

Link copied!