চার দশক আগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জগন্নাথ হলে ছাদ ধসে ৩৯ জনের প্রাণহানির ঘটনায় শোক দিবস পালন করেছে শতবর্ষী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটি। গতকাল বুধবার সকালে উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমদ খানের নেতৃত্বে শিক্ষক-কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা জগন্নাথ হলে ‘অক্টোবর স্মৃতিস্তম্ভে’ ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান। এ সময় তারা এক মিনিট নীরবতা পালন করেন। ১৯৮৫ সালের ১৫ অক্টোবর জগন্নাথ হলের একটি ভবনের ছাদ ধসে ছাত্র, কর্মচারী, অতিথিসহ ৩৯ জনের মর্মান্তিক মৃত্যু হয়। এরপর থেকে বছরের এই দিন বিশ্ববিদ্যালয়ে শোক দিবস হিসেবে পালিত হয়ে আসছে। শোকাবহ ওই ঘটনার স্মরণে জগন্নাথ হলে নির্মিত হয়েছে ‘অক্টোবর স্মৃতি ভবন’।
এর আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের সব একাডেমিক ভবন ও হলে কালো পতাকা উত্তালন করা হয়। শ্রদ্ধা জানানোর পর আলোচনা সভার আয়োজন করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। সেখানে উপাচার্য ড. নিয়াজ আহমদ খান বলেছেন, ‘১৯৮৫ সালের ১৫ অক্টোবরের মর্মান্তিক ঘটনা জাতি-ধর্ম-বর্ণনির্বিশেষে সমগ্র বাংলাদেশকে একত্রিত করেছিল। ঐক্যের এই বন্ধনকে আরও সুদৃঢ় করতে হবে এবং সমাজে তা ছড়িয়ে দিতে হবে।’ তিনি বলেন, ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বেশ কয়েকটি নতুন হল নির্মাণ, বিভিন্ন পুরোনো ভবন সংস্কারসহ বৃহৎ একটি উন্নয়ন প্রকল্প একনেকে অনুমোদিত হয়েছে। প্রকল্পটি বাস্তবায়নের বিভিন্ন প্রক্রিয়া এগিয়ে চলেছে এবং ইতিমধ্যে প্রকল্প পরিচালক নিয়োগ করা হয়েছে।’
উপ-উপাচার্য অধ্যাপক সাইমা হক বিদিশা বলেন, ‘গত এক বছর ধরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও হল প্রশাসন বিভিন্ন সংস্কারের উদ্যোগ নিয়েছে। সেখানে হল প্রশাসন যেসব সমস্যা তুলে ধরেছে, তা নিয়ে প্রশাসন ব্যবস্থা নিয়েছে। তবে সব ক্ষেত্রে যে পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নিয়েছে এমন নয়। আমরা চেষ্টা করছি। ধীরে হলেও অচিরেই বিশ্ববিদ্যালয়ের সব হলে সংস্কারের ছোঁয়া পৌঁছে দেওয়ার চেষ্টা করছেন।’
এদিন সকাল ৯টা থেকে ১০টা পর্যন্ত জগন্নাথ হল প্রাঙ্গণে হিন্দু, বৌদ্ধ ও খ্রিষ্টান ধর্মাবলম্বীদের প্রার্থনাসভা অনুষ্ঠিত হয়। বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদসহ সব হলে দোয়ার আয়োজন করা হয়। গতকাল সকালে ‘অক্টোবর স্মৃতিস্তম্ভে’ শ্রদ্ধা নিবেদন করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদল। সংগঠনের বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের সভাপতি গণেশ চন্দ্র রায় সাহস ও সাধারণ সম্পাদক নাহিদুজ্জামান শিপনসহ বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মীরা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন