*** যশোর ২৫০ শয্যা হাসপাতাল
যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের রাজস্ব আয় উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে। ২০২৪-২৫ অর্থবছরে বিভিন্ন খাত থেকে রাজস্ব আয় হয়েছে ৩ কোটি ৪৬ লাখ ৯৪ হাজার ৯৪৫ টাকা। ২০২১ সালের জুন থেকে ২০২৫ সালের জুন পর্যন্ত মোট রাজস্ব আয় দাঁড়িয়েছে ১৪ কোটি টাকার বেশি। হাসপাতালের প্রশাসনিক সূত্র জানিয়েছে, হাসপাতালের এক্সরে, ইসিজি, আল্ট্রাসনোগ্রাম, প্যাথলজি, সিটিস্ক্যান, ইকো, আইসিইউ ইসিজি, পেইং বেড, কেবিন, জরুরি বিভাগ, বহির্বিভাগ, করোনারি কেবিন, করোনারি ইসিজি, অ্যাম্বুলেন্স থেকে রাজস্ব আয় বেড়ে চলেছে।
গত ২০২৪ সালের জুলাই মাসে ২৬ লাখ ২০ হাজার ১৮০ টাকা, আগস্ট মাসে ২৮ লাখ ৭০ হাজার ১৯৫ টাকা, সেপ্টেম্বর মাসে ৩৩ লাখ ৪৭ হাজার ৬৩০ টাকা, অক্টোবর মাসে ৩১ লাখ ৭৩ হাজার ৬৪৫ টাকা, নভেম্বর মাসে ৩১ লাখ ৭ হাজার ৭০০ টাকা, ডিসেম্বর মাসে ৩১ লাখ ৩০ হাজার ৫০ টাকা, ২০২৫ সালের জানুয়ারি মাসে ৩০ লাখ ২১ হাজার ৭৫ টাকা, ফেব্রুয়ারি মাসে ২৬ লাখ ৭১ হাজার ৫২৫ টাকা, মার্চ মাসে ২৫ লাখ ৮৩ হাজার ৮৬০ টাকা, এপ্রিল মাসে ২৭ লাখ ৩৫ হাজার ২১৫ টাকা, মে মাসে ২৮ লাখ ৩৭ হাজার ১৯০ টাকা ও জুন মাসে ২৬ লাখ ২২ হাজার ৬৮০ টাকা রাজস্ব আয় হয়েছে।
জানা যায়, হাসপাতালের সাবেক তত্ত্বাবধায়ক ডা. ইয়াকুব আলীর আন্তরিক প্রচেষ্টায় ২০১৫ সালের জানুয়ারি ক্যাশ কাউন্টার চালু করার অনুমোদন মেলে। তিনি ক্যাশ কাউন্টারে কার্যক্রম চালুর জন্য নিজস্ব অর্থায়নে দুটি কম্পিউটার ও প্রিন্টার মেশিন কিনে দেন। কিন্তু ১৫ জানুয়ারি তার কর্মজীবন শেষ হওয়ায় পূর্ণাঙ্গভাবে কার্যক্রম চালু করতে ব্যর্থ হন। পরে তত্ত্বাবধায়কের দায়িত্ব গ্রহণ করেন হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ডা. শ্যামল কৃষ্ণ সাহা। কিন্তু তিনি চেষ্টা করেও ক্যাশ কাউন্টার চালু করতে পারেননি।
২০১৮ সালের ৭ এপ্রিল ডা. আবুল কালাম আজাদ লিটু তত্ত্বাবধায়কের দায়িত্ব গ্রহণ করে ক্যাশ কাউন্টার চালুর জন্য জোরালো ভূমিকা নেন। ২০১৯ সালের ৫ জুলাই হাসপাতালের সেন্ট্রাল ক্যাশ কাউন্টারের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন স্থানীয় সরকার পল্লি উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের সাবেক প্রতিমন্ত্রী স্বপন কুমার ভট্টাচার্য। এরপর হাসপাতালের বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষার টাকা ক্যাশ কাউন্টারের মাধ্যমে জমা দেওয়ার নির্দেশনা দেন কর্তৃপক্ষ।
সাবেক তত্ত্বাবধায়ক ডা. দিলীপ কুমার বিশ্বাস আর্থিক স্বচ্ছতা আনার চেষ্টা করেও সফল হননি। ২০২১ সালের ১২ মে তিনি চাকরি থেকে আনুষ্ঠানিক অবসর গ্রহণ করেন। ওই বছরের ১ জুন তত্ত্বাবধায়ক হিসেবে যোগদান করেন ডা. মোহাম্মদ আখতারুজ্জামান। তিনি যোগদানের পর থেকেই আর্থিক স্বচ্ছতা আনতে জোরালো ভূমিকা পালন করেন। সকল পরীক্ষা-নিরীক্ষা ক্যাশ কাউন্টারের রশিদের মাধ্যমে করার নির্দেশনা জারি করেন। তার জোরালো তদারকি ব্যবস্থা ও জবাবদিহিতা করার কারণে আর্থিক দুর্নীতি কমতে শুরু করে। একই সঙ্গে বাড়তে থাকে সরকারের রাজস্ব আদায়। একই ধারাবাহিতা ধরে রাখতে সক্ষম হন সাবেক তত্ত্বাবধায়ক ডা. হারুন অর রশিদ। বর্তমান তত্ত্বাবধায়ক ডা. হুসাইন শাফায়াতও সাফল্যের ধারাবাহিকতায় হাঁটছেন। বর্তমানে ক্যাশ কাউন্টারের রশিদ ছাড়া সিটিস্ক্যান, এক্সরে, আল্ট্রাসনো ও ইসিজি প্যাথলজিসহ কোনো পরীক্ষা-নিরীক্ষা না করার নির্দেশনা রয়েছে। ফলে প্রতি মাসেই রাজস্ব আয় বেড়ে চলেছে। হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. হুসাইন শাফায়াত জানান, হাসপাতালের বিভিন্ন বিভাগে আর্থিকসহ নানা অনিয়ম দুর্নীতি বন্ধ করা হয়েছে। ক্যাশ কাউন্টারের রশিদ ছাড়া কোনো পরীক্ষা-নিরীক্ষা না করতে জোরালো নর্দেশনা দিয়েছেন তিনি। সংশ্লিষ্ট বিভাগে দায়িত্বদের স্বচ্ছতা ও আন্তরিকতার কারণে রাজস্ব আয় বাড়ানো সম্ভব হচ্ছে।
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন