রাজধানীর বাড্ডার একটি আবাসিক ভবনের নিচতলার এমব্রয়ডারি ফ্যাক্টরি থেকে দারোয়ান ও কাজের বুয়ার অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। তারা হলেন সাইফুল ইসলাম (৩০) ও শাকিলা (২৮)। সাইফুল ওই ভবনের দারোয়ান ছিলেন আর শাকিলা একই ভবনে বুয়ার কাজ করতেন। তবে তারা স্বামী-স্ত্রী নন।
গতকাল রোববার বিকেলে খবর পেয়ে পুলিশ বাড্ডার পূর্বাঞ্চল ৩ নম্বর রোডের ২ নম্বর গলির ওই বাসা থেকে মরদেহ দুটি উদ্ধার করে। গত ২৭ অক্টোবর থেকে শাকিলা নিখোঁজ ছিলেন। এ ঘটনায় তার মা বাড্ডা থানায় একটি জিডি করেছেন।
পুলিশ বলছে, লাশ দুটি পচে গলে গেছে। চেহারা বোঝার উপায় নেই। পরিচয় শনাক্ত না হলে ডিএনএ টেস্টের পর পরিচয় নিশ্চিত হয়ে মরদেহ দুটি পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে। তবে ঘটনাটি হত্যাকা- কি না, সে বিষয়ে তদন্ত চলছে।
যে ভবন থেকে মরদেহ দুটি উদ্ধার করা হয়েছে, সেটির নিচতলার এমব্রয়ডারি ফ্যাক্টরি বহুদিন ধরে বন্ধ ছিল। দ্বিতীয় তলায় মাদ্রাসা আর ওপরে আবাসিক। ভবনের লোকজন পচা দুর্গন্ধে টিকতে পারছিলেন না। পরে থানায় খবর দিলে পুলিশ গিয়ে লাশ দুটি উদ্ধার করে।
বাড্ডা থানার পুলিশ জানায়, নিচতলার এমব্রয়ডারি ফ্যাক্টরি তালা মারা ছিল। তালা খুলতেই ভেতরে অর্ধগলিত দুটি মরদেহের সন্ধান মেলে। মরদেহের শরীরের বেশির ভাগ গলে গেছে। গায়ের জামা-কাপড় দেখেও বোঝা যাচ্ছে না। ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ দুটি ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।
বাড্ডা থানার ওসি হাবিবুর রহমান বলেন, মরদেহ দুটি দেখে চেহারা বোঝার উপায় নেই। যেহেতু গত মাসে কাজের বুয়া শাকিলা নিখোঁজসংক্রান্ত একটি জিডি হয়েছে, তাই ধারণা করছি, নারী মরদেহটি শাকিলার। লাশ উদ্ধারের সময় শাকিলার মা-ও উপস্থিত ছিলেন। তিনি বলেন, ভবনটির দারোয়ান সাইফুলও নিখোঁজ ছিলেন। তাই অপরটি দারোয়ান সাইফুল বলে ধারণা করছি। পরিচয় নিয়ে জটিলতা দেখে দিলে প্রয়োজনে দুই লাশের ডিএনএ টেস্ট করা হবে। দুজনের কীভাবে মৃত্যু হলোÑ এ বিষয়ে কেউ সঠিক তথ্য দিতে পারছে না। ঘটনাটি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।
গুলশান বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মোহাম্মদ তারেক মাহমুদ বলেন, প্রাথমিকভাবে যতটুকু জানা গেছে, সম্পর্কে তারা স্বামী-স্ত্রী ছিলেন না। হতে পারে তাদের মধ্যে অন্য কোনো সম্পর্ক ছিল। তবে ঘটনাটি হত্যাকা- কি না, সে বিষয়ে তদন্ত চলছে।
খাল থেকে লাশ উদ্ধার : এদিকে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে খিলগাঁও ৬ নম্বর শান্তিপুর কালভার্ট রোডের পাশের খাল থেকে মোজাফফর আহমেদ চৌধুরী লেনিন (৫১) নামে এক ব্যক্তির মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
খিলগাঁও থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. রফিকুল ইসলাম জানান, ট্রিপল নাইনের মাধ্যমে খবর পেয়ে খালে ভাসমান অবস্থায় লাশটি উদ্ধার করা হয়। ঘটনাস্থলে তার পরনের জামা-কাপড় তল্লাশি করে পকেটে একটি এনআইডি কার্ড পাওয়া যায়। সেখান থেকে তার নাম জানা যায় মোজাফফর আহমেদ চৌধুরী লেনিন। বাবার নাম সেলিম চৌধুরী। বাসা ১৯৩/৬, দক্ষিণ মেরাদিয়া।
তিনি জানান, মরদেহের কোথাও কোনো আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি। ময়নাতদন্ত শেষে মরদেহটি মর্গের মরচুয়ারিতে সংরক্ষণ করা হয়েছে। এনআইডিতে থাকা ঠিকানায় গিয়ে কোনো পরিচয় মেলেনি বা স্বজনের সন্ধান পাওয়া যায়নি। কীভাবে তার মৃত্যু হয়েছে, তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।

সর্বশেষ খবর পেতে রুপালী বাংলাদেশের গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন