দুই শক্তিধর সামরিক গোষ্ঠীর ক্ষমতার ভাগাভাগির দ্বন্দ্ব। আর এ কারণেই গৃহযুদ্ধের ফাঁদে পড়ে ধুঁকছে আফ্রিকার বৃহত্তম দেশ সুদান। ২০২৩ সালের এপ্রিলে শুরু হওয়া সংঘাত আরও ছড়িয়ে পড়ছে। সরকারি বাহিনী সুদানিজ আরমড ফোর্সেস (এসএএফ) ও আধাসামরিক র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেসের (আরএসএফ) মধ্যে চলমান সংঘাত পশ্চিম সুদানের দারফুর থেকে পূর্ব দিকে ছড়িয়ে পড়ছে। রাজধানী খারতুম, দারফুর, কর্ডোফান, এমনকি পূর্বাঞ্চল পর্যন্ত সংঘাত ছড়িয়ে পড়েছে। দুই পক্ষই একের পর এক শহর নিজেদের দখলে নিতে লড়াই করে যাচ্ছে। যার ফলে অগণিত বেসামরিক মানুষ নিহত ও বাস্তুচ্যুত হচ্ছেন। জাতিসংঘ ও মানবাধিকার সংস্থাগুলোর মতে, সম্প্রতি পশ্চিম সুদানের আল-ফাশির শহর দখলের পর দারফুরের সংঘাত নতুন করে ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। বাস্তুচ্যুত মানুষের সংখ্যা দ্রুত বাড়ছে। আল-ফাশির ছিল দারফুরে সুদানি সেনাবাহিনীর শেষ ঘাঁটি। এই শহর পতনের মাধ্যমে গৃহযুদ্ধে বড় মোড় এসেছে। এখন আরএসএফ কার্যত দেশের মোট ভূখ-ের এক-চতুর্থাংশেরও বেশি অংশ নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে। জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয় জানিয়েছে, আল-ফাশির শহর পতনের সময় শত শত বেসামরিক মানুষ ও যোদ্ধা নিহত হয়েছেন। গত শুক্রবার প্রকাশিত এক বিবৃতিতে সংস্থাটি জানায়, প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, আরএসএফ সদস্যরা শহর দখলের পর পুরুষদের একত্রিত করে গুলি করে মেরে ফেলেছে। যদিও আরএসএফ দাবি করেছে, তারা কোনো বেসামরিক নাগরিককে হত্যা করেনি।
সুদানের সেনাবাহিনী-সমর্থিত কর্তৃপক্ষ মঙ্গলবার যুক্তরাষ্ট্রের যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা করতে একটি বৈঠকে বসবে, যা তারা প্যারামিলিটারির (আরএসএফ) সঙ্গে চলমান যুদ্ধে কার্যকর করার চেষ্টা করছে। গত দুই বছরে লক্ষাধিক মানুষের মৃত্যু ও লাখ লাখ মানুষের বাস্তুচ্যুতির কারণ হওয়া এই যুদ্ধ সাম্প্রতিক দিনগুলোতে সুদানের নতুন নতুন অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়েছে, যা আরও ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয়ের আশঙ্কা জাগিয়ে তুলেছে। জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস মঙ্গলবার সুদানের চলমান সহিংসতা বন্ধের আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি সতর্ক করে বলেছেন, দেশটির সংকট দ্রুত অবনতির দিকে যাচ্ছে। খবর বার্তা সংস্থা এএফপির। দোহায় অনুষ্ঠিত বিশ্ব সামাজিক উন্নয়ন বিষয়ক দ্বিতীয় সম্মেলনের ফাঁকে গুতেরেস সাংবাদিকদের বলেন, যুদ্ধরত পক্ষগুলোকে আলোচনার টেবিলে আসতে হবে এবং এখনই এই সহিংসতার দুঃস্বপ্নের অবসান ঘটাতে হবে।’ তিনি সতর্ক করে বলেন, ‘সুদানে ভয়াবহ সংকট নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে।’

সর্বশেষ খবর পেতে রুপালী বাংলাদেশের গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন