বুধবার, ০৫ নভেম্বর, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


ভিনদেশ ডেস্ক

প্রকাশিত: নভেম্বর ৫, ২০২৫, ০৩:৪৪ এএম

নারীদের মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের উন্মাদনা চলছে ইরানে: আইএইচআর

ভিনদেশ ডেস্ক

প্রকাশিত: নভেম্বর ৫, ২০২৫, ০৩:৪৪ এএম

নারীদের মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের উন্মাদনা চলছে ইরানে: আইএইচআর

ইরানের ১৬ বছর বয়সি একটি মেয়ের ঘটনা। সে কয়েকজন পুরুষ কর্তৃক যৌন হয়রানির শিকার হয়েছিল। বিচার পাওয়ার পরিবর্তে এই কিশোরীর বিরুদ্ধে বিবাহবহির্ভূত যৌন সম্পর্কের অভিযোগ আনা হয়। কয়েকজন পুরুষের সাথে যৌন সম্পর্ক হয়েছে এটি স্বীকারের পর তাকে মৃত্যুদ- দেওয়া হয়। আসলে ওই ব্যক্তিরা তাকে ধর্ষণ করেছিল। আইন অনুযায়ী, কোনো অবিবাহিত ব্যক্তি বিবাহবহির্ভূত যৌন সম্পর্ক করলে তার দ- বা বেত্রাঘাতের বিধান আছে। আর এটি তিনবার কেউ করলে তার মৃত্যুদ-ের বিধান আছে। অথচ এই কিশোরীর ক্ষেত্রে তা-ও অনুসরণ করা হয়নি। তাকে দুবার বেত্রাঘাত করা হয়েছে এবং এর পরের বার তাকে মৃত্যুদ- দেওয়া হয়েছে। চতুর্থবারের সময় বিচারক নিজেই ওই কিশোরীর গলায় রশি পরিয়ে দেন। মৃত্যুদ-বিরোধী অধিকারকর্মী নারগেজ মোহাম্মদী একটি ভিডিও পোস্ট করেছিলেন, যেখানে তিনি মৃত্যুদ-ের বর্ণনা দিয়েছিলেন। সেখানে দ-প্রাপ্ত নারীর পুত্র তার মায়ের মৃত্যুদ-ের সময় পায়ের নিচে থাকা টুল লাথি দিয়ে সরিয়ে দিয়েছিলেন। আসলে ‘পরিবারের সম্মানের’ কথা বলে এটি করতে তার ওপর প্রবল চাপ তৈরি করা হয়েছিল বলেই মনে করেন তিনি। আমিনি মনে করেনÑ আইন, আদালত ও প্রথাই নারীকে অপরাধী বানায় ও অপরাধের শিকার করে। যদিও বোরোমান্ড বলছিলেন ভিন্ন কথা। তিনি বলেন, ইরানের কারাগারগুলো ভর্তি রাজনৈতিক ব্যক্তিদের দ্বারা। আর জেলের চাপ কমাতে অনেক সময় খুনের শিকার ব্যক্তিদের পরিবারের সদস্যদের ওপর চাপ তৈরি করা হয় দ্রুত সিদ্ধান্ত নিতে যে তারা ক্ষমা করবেন নাকি মৃত্যুদ- দিতে চান। আর এ কারণেই বেশি মানুষকে ফাঁসির দিকে যেতে হয়। 

সম্প্রতি গোলি কোহকান নামের এক বালিকাবধূর মৃত্যুদ-কে ঘিরে ইরানের এই অন্ধকার দিকটি আবারও আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের শিরোনাম হয়েছে। দ্য গার্ডিয়ানের এক প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, বর্তমানে ২৫ বছর বয়সি গোলি কোহকান নামের এই নারী সাত বছর ধরে উত্তর ইরানের গোরগান কেন্দ্রীয় কারাগারে মৃত্যুদ-ের অপেক্ষায়। ২০১৮ সালের মে মাসে ১৮ বছর বয়সে স্বামীকে হত্যার অভিযোগে গ্রেপ্তার হয়েছিলেন তিনি। পরে আদালত তাকে ‘কিসাস’ (প্রতিশোধমূলক শাস্তি) আইনে মৃত্যুদ- দেন। গোলির মতো আরও তিন নারী মৃত্যুদ-ের মুখে পড়েছিলেন। 

সামিরা সাবজিয়ান ফারদ, যাকে ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে ১৫ বছর বয়সে বিয়ের পর স্বামী হত্যার দায়ে মৃত্যুদ- দেওয়া হয়। ফাতেমা সালবেহি, ২০০৮ সালে ১৭ বছর বয়সে স্বামী হত্যার অভিযোগে গ্রেপ্তার হন, পরে তার ফাঁসি কার্যকর হয়। জয়নাব সেকানভান্দ ২০১২ সালে ১৭ বছর বয়সে স্বামী হত্যার অভিযোগে আটক হন। আদালত স্বামীর নির্যাতনের কথা জানালেও তাকে মৃত্যুদ- দেওয়া হয়। অধিকারকর্মীদের মতে, ইরানে মৃত্যুদ-ের উন্মাদনা চলছে। জুলাইয়ের শেষ সপ্তাহেই অন্তত ৩২ জনকে মৃত্যুদ- দেওয়া হয়েছে, সেখানে এবং এর মধ্যে তিনজন নারীও আছে। এসব নারীর বিরুদ্ধে অভিযোগ হলোÑ তারা তাদের স্বামীকে হত্যা করেছেন। ‘খুনের জন্য ইরানে কোনো কারাদ- নেই। হয় আপনাকে ক্ষমা করা হবে অথবা মৃত্যুদ- দেওয়া হবে’, বলছিলেন যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক ইরানিয়ান মানবাধিকার সংগঠন আব্দুর রহমান বোরোমান্ড সেন্টারের নির্বাহী পরিচালক রয়া বোরোমান্ড। তবে ইরানের চেয়ে বেশি যেসব দেশে মৃত্যুদ- দেয়ো হয়, সেখানেও এত বেশিসংখ্যক নারীর মৃত্যুদ- দেওয়া হয় না বলে তথ্য দিচ্ছে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল। 

ইরানের সাংবাদিক আসিয়ে আমিনি এখন নরওয়েতে বাস করেন। তিনি নারীকে মৃত্যুদ- দেওয়া হয়েছে এমন কিছু মামলা খুব কাছ থেকে পর্যবেক্ষণ করেছেন। তার মতে, দেশটির আইনি কাঠামোই সমস্যার মূল কারণ।  ‘আইন অনুযায়ী বাবা বা দাদা পরিবারের প্রধান। তারাই বিয়েসহ নারীদের যেকোনো বিষয়ে সিদ্ধান্ত দিতে পারেন’, বিবিসিকে বলছিলেন আমিনি। এর মানে হলোÑ এই নারীকে জোর করা হতে পারে বা তিনি পারিবারিক সহিংসতার শিকার হতে পারেন। আর ইরানের আদালত থেকে বিবাহবিচ্ছেদ পাওয়া বলতে গেলে অসম্ভব। 


 

রূপালী বাংলাদেশ

Link copied!