কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী উপজেলায় ধানখেতে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে ব্যাকটেরিয়াজনিত পাতা পোড়া রোগ। এতে ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়েছেন কৃষকেরা। ফসল কাটার শেষ মুহূর্তে এসে ধান গাছ মরে যাওয়ায় তাদের মধ্যে দেখা দিয়েছে চরম হতাশা ও দুশ্চিন্তা।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, চলতি রোপা আমন মৌসুমে ২৪ হাজার ৩৬০ হেক্টর জমিতে ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। অর্জিত হয়েছে ২৪ হাজার ৩৬৫ হেক্টর জমিতে। অনুকূল আবহাওয়া ও নিয়মিত পরিচর্যার কারণে ফলন ভালো হওয়ার সম্ভাবনা ছিল। ইতোমধ্যে অনেক জমিতে ধান পাকতে শুরু করেছে, কোথাও কোথাও কাটা-মাড়াইও চলছে।
এরই মধ্যে ঘূর্ণিঝড় ‘মন্থা’র প্রভাবে সৃষ্ট লঘুচাপে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ধান গাছ নুইয়ে পড়ে। তার পরপরই ধানের ব্যাকটেরিয়াজনিত পাতা পোড়া রোগ দেখা দেয়, যা দ্রুত খেত থেকে অন্য খেতে ছড়িয়ে পড়ছে।
ধান গাছের পাতা ও কা- আক্রান্ত হয়ে আগা থেকে দুই পাশ শুকিয়ে যাচ্ছে। পাতায় হলুদ-সবুজ দাগ দেখা দিচ্ছে, পরে তা বাদামি হয়ে পুড়ে খড়ের মতো শুকিয়ে যাচ্ছে। বৃষ্টি বা শিশিরের সময় পাতার ডগা থেকে দুধের মতো নির্যাস ফোঁটা আকারে ঝরে পড়ছে। আক্রান্ত ধানগাছ আস্তে আস্তে নেতিয়ে পড়ে মারা যাচ্ছে। দূর থেকে খেতপাকা মনে হলেও কাছে গিয়ে দেখা যায়, ধান গাছ খড়ের মতো শুকিয়ে গেছে।
উপজেলার বামনডাঙ্গা ধনিটারি, পৌরসভার ঠুটা পাইকর, ভিতরবন্দ নন্দনপুরসহ বিভিন্ন এলাকার কৃষক মোকছেদুল ইসলাম, মকবুল হোসেন, খায়রুল আলম, আনোয়ার হোসেন, মাহাবুবুর রহমান, লালমন মিয়া, নুর জামাল, রহিমুদ্দিন, মনোয়ার হোসেন, মেহের জামাল, আখতার হোসেন, মোজাম্মেল কাজী প্রমুখ বলেন, ‘চোখের সামনে ধানখেত নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এত কষ্ট করে ধান ফলিয়েছি, এখন যদি সব নষ্ট হয়ে যায় তাহলে আমরা কী খেয়ে বাঁচব?’
উপজেলা সিনিয়র কৃষি কর্মকর্তা শাহরিয়ার হোসেন বলেন, রোগের বিস্তার রোধে আমরা মাঠপর্যায়ে সচেতনতামূলক লিফলেট বিতরণ করছি। কৃষকদের অনুমোদিত রাসায়নিক ছত্রাকনাশক বা কীটনাশক ব্যবহারের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।’

সর্বশেষ খবর পেতে রুপালী বাংলাদেশের গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন