রবিবার, ২৩ নভেম্বর, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


মুকুল চট্টোপাধ্যায়, দিনাজপুর

প্রকাশিত: নভেম্বর ২৩, ২০২৫, ০৩:৪৩ এএম

১৬ কোটির হাসপাতালে মেলে না সেবা

মুকুল চট্টোপাধ্যায়, দিনাজপুর

প্রকাশিত: নভেম্বর ২৩, ২০২৫, ০৩:৪৩ এএম

১৬ কোটির হাসপাতালে মেলে না সেবা

ভবনটির রং এখনো চকচকা, কক্ষগুলো এখনো নতুনত্বের গন্ধ ধরে রেখেছে, ভেতরে সরঞ্জামও আছে। তবু উদ্বোধনের চার বছর পরও সেখানে একটি দিনও চিকিৎসাসেবা পায়নি রোগীরা। বলছি দিনাজপুরের খানসামা আধুনিক হাসপাতালের কথা। ১৬ কোটি টাকা ব্যায়ে নির্মিত ২০ শয্যাবিশিষ্ট আধুনিক হাসপাতালটি ২০২১ সালের ১৫ নভেম্বর ঘটা করে উদ্বোধন করা হয়েছিল, সেটি আজ জনবলহীনতা ও বাজেট সংকটে পরিণত হয়েছে অব্যবহারের স্মৃতিস্তম্ভে।

এদিকে উদ্বোধনের চার বছর পরেও হাসপাতালটি চালু না হওয়ায় সেবাবঞ্চিত হচ্ছে আশপাশ এলাকার বাসিন্দারা। ব্যবহার না হওয়ায় এরই মধ্যে হাসপাতালের কোটি টাকার যন্ত্রপাতি অচল হয়ে যাচ্ছে এবং নিরাপত্তাহীনতার সুযোগে নিয়মিত চুরি হচ্ছে মূল্যবান সরঞ্জাম।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায, ১৬ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত হাসপাতালটি ২০২১ সালের ১৫ নভেম্বর উদ্বোধন করা হয়। তবে জনবল নিয়োগ ও অর্থ বরাদ্দ না পাওয়ায় হাসপাতালটি অচল পড়ে রয়েছে। এতে কোটি টাকার চিকিৎসা যন্ত্রপাতি নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এদিকে হাসপাতালের বিদ্যুৎ বিল বকেয়া প্রায় সাড়ে ১২ লাখ টাকা। এ অবস্থায় বিদ্যুতের সংযোগও বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয়েছে।

সরেজমিনে দেখা যায়, হাসপাতালের প্রধান ফটকে (মূল গেট) ঝুলছে তালা। উপজেলার আত্রাই নদের তীরে জিয়া সেতু মোড়ে নির্মিত দোতলা এই হাসাপাতাল ভবনটি এখন কার্যত পরিত্যক্ত। ভবনের পাশে রয়েছে তিনটি আবাসিক কোয়ার্টার, রান্নাঘর, গ্যারেজ, বিদ্যুৎ স্টেশনসহ প্রয়োজনীয় স্থাপনা। তবে নেই কোনো জনবল। দীর্ঘদিন ধরে এভাবে পড়ে থাকায় ভবনের বেশির ভাগ জায়গা ও চারদিকে জমেছে ধুলোবালু, মাকড়সার জাল। আর আগাছা দেখে মনে হবে, দীর্ঘদিন ধরে এখানে কেউ প্রবেশই করেনি।

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, সম্প্রতি হাসপাতালের ভেতর থেকে বিদ্যুতের তার ও ভারী যন্ত্রপাতিসহ ৪-৫ লাখ টাকার মূল্যবান সরঞ্জাম চুরি হয়েছে। এ ঘটনায় থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, স্বাস্থ্যসেবা সম্প্রসারণের লক্ষ্যে নির্মিত এই হাসপাতাল প্রথমে খানসামা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের অধীনে এনে সীমিত বহির্বিভাগ চালুর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে জনবলের সংকট থাকায় তা-ও বন্ধ হয়ে যায়।

স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, হাসপাতালটি চালু হলে খানসামার গোবিন্দপুর, টংগুয়া, বেলপুকুর, সহজপুর, হোসেনপুর, জাহাঙ্গীরপুর, বাশুলী, শুশুলী, ফরিদাবাদ, জয়গঞ্জ, তুলসীপুরসহ আশপাশের একাধিক ইউনিয়নের মানুষ উপকৃত হতো। পাশাপাশি পাশের বীরগঞ্জ, দেবীগঞ্জ ও নীলফামারী সদর উপজেলার বাসিন্দারাও সেবা পেত। কিন্তু নিরুপায় হয়ে এসব এলাকার রোগীদের এখনো নিয়মিত জেলা সদর বা অন্য উপজেলায় ছুটতে হচ্ছে চিকিৎসার জন্য।

সাজিদ ইসলামের ক্ষোভ যেন এলাকাবাসীর দীর্ঘ অপেক্ষার প্রতিচ্ছবি। তিনি বলেন, এত টাকা খরচ করে হাসপাতাল বানানো হলো, কিন্তু চিকিৎসাসেবা কোথায়? চার বছর ধরে ভবনটা পড়ে আছে জনমানবহীন মরুভূমির মতো। প্রশাসনকে বারবার বলেও কোনো লাভ হচ্ছে না।

খানসামা পল্লী বিদ্যুৎ অফিসের এজিএম এ এস এম রাকিবুল হাসান বলেন, খানসামা ২০ শয্যা হাসপাতালের বিদ্যুৎ বিল বকেয়া প্রায় সাড়ে ১২ লাখ টাকা। দ্রুত বিল পরিশোধ করতে স্বাস্থ্য বিভাগকে লিখিত চিঠির মাধ্যমে অবগত করা হয়েছে।

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা শফিকুল ইসলাম বলেন, হাসপাতালটির অবকাঠামো অত্যন্ত ভালো। কিন্তু জনবল ও আর্থিক বরাদ্দ না থাকায় এখনো সেবা চালু করা যায়নি। তিনি বলেন, বিষয়টি কয়েকবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরকে জানিয়েছি। সম্প্রতি ওই হাসপাতালের বিষয়ে তথ্য চেয়েছে, তা পাঠানো হয়েছে। নিয়মিত সেবা চালুর বিষয়ে যোগাযোগ অব্যাহত আছে।

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কামরুজ্জামান সরকার বলেন, হাসপাতালটি চালু করা হলে তৃণমূল মানুষের স্বাস্থ্যসেবায় গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি ঘটবে। তিনি বলেন, ২০ শয্যা হাসপাতালে সেবা কার্যক্রম শুরুর বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ করা হচ্ছে।

রূপালী বাংলাদেশ

Link copied!