রবিবার, ২৩ নভেম্বর, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


রূপালী প্রতিবেদক

প্রকাশিত: নভেম্বর ২৩, ২০২৫, ০৪:১৬ এএম

সঞ্চয়পত্রসহ পাঁচ সেবা বন্ধ বাংলাদেশ ব্যাংকে

রূপালী প্রতিবেদক

প্রকাশিত: নভেম্বর ২৩, ২০২৫, ০৪:১৬ এএম

সঞ্চয়পত্রসহ পাঁচ সেবা বন্ধ বাংলাদেশ ব্যাংকে

বাংলাদেশ ব্যাংক সঞ্চয়পত্র ও প্রাইজবন্ডসহ জনসাধারণকে দেওয়া সরকারি পাঁচটি পরিষেবা বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ফলে আজ রোববার থেকে বাংলাদেশ ব্যাংকের মতিঝিল অফিস ও অন্যান্য অফিস গিয়ে সাধারণ মানুষ এ ধরনের সেবা পাবে না। মূলত নিরাপত্তাঝুঁকি কমানো, মতিঝিল অফিস আধুনিকায়ন ও উন্নত ভল্ট স্থাপন করার লক্ষ্যে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে, বাংলাদেশ ব্যাংক জনসাধারণকে সরকারের পক্ষ হয়ে ১০ ধরনের সেবা দিচ্ছে। এগুলো হলোÑ সঞ্চয়পত্র আদান, প্রাইজবন্ড বিক্রয়, ত্রুটিযুক্ত নোট বিনিময়, পিএডি আদান, চালান সংশ্লিষ্ট ভাংতি, দাবি নোট আদান-প্রদান, ধাতব মুদ্রা লেনদেন, স্মারক মুদ্রা বিনিময়, ডিএবি ও ব্যাংক মিউট। মোট ২৮টি কাউন্টারের মাধ্যমে বাংলাদেশ ব্যাংকের মতিঝিল অফিস এসব সেবা দিয়ে থাকে। এর মধ্যে ১২টি কাউন্টারের মাধ্যমে দেওয়া প্রথম পাঁচটি সেবা বন্ধ করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। তবে বাংলাদেশ ব্যাংকের অভ্যন্তরীণ দাপ্তরিক প্রয়োজন বিবেচনায় সঞ্চয়পত্র, প্রাইজবন্ড বা চালানসংক্রান্ত শুধু একটি আদান-প্রদান কাউন্টার ব্যবহারের জন্য চালু থাকবে।

এদিকে গত মাসে বাংলাদেশ ব্যাংকের মতিঝিল অফিসের সার্ভার জালিয়াতি করে ২৫ লাখ টাকার সঞ্চয়পত্র আত্মসাতের ঘটনা ধরা পড়ে। আরও দুজনের ৫০ লাখ টাকা আত্মসাতের চেষ্টা শেষ সময়ে ধরা পড়ে। এ ঘটনায় মতিঝিল থানায় চারজনকে আসামি করে একটি মামলা হয়েছে। বিভিন্ন পর্যায়ের তদন্ত কমিটি কাজ করছে। এরপর থেকে মতিঝিল অফিসের সঞ্চয়পত্র বিক্রি বন্ধ আছে। বাংলাদেশ ব্যাংক ছাড়া সরকারি-বেসরকারি সব বাণিজ্যিক ব্যাংক, সঞ্চয় অধিদপ্তর ও পোস্ট অফিস থেকে সঞ্চয়পত্র বিক্রি হয়। আর সব ব্যাংক শাখায় প্রাইজবন্ড পাওয়া যায়। ব্যাংকগুলো ছেঁড়াফাটা নোট বদল ও অটোমেটেড চালান সেবাও দেয়। তবে ভোগান্তিমুক্ত সেবা ও আস্থার কারণে বাংলাদেশ ব্যাংকেই বেশি ভিড় করেন গ্রাহক। গত সেপ্টেম্বর পর্যন্ত হিসাবে গ্রাহকদের তিন লাখ ৪০ হাজার ৪৪৫ কোটি টাকার সঞ্চয়পত্র রয়েছে। এর মধ্যে ৩০ শতাংশের বেশি রয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংকের মতিঝিল অফিসে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, বিষয়টি নিয়ে কয়েক মাস ধরে বেশ কয়েকটি সমন্বয় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সর্বশেষ গত ২২ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত অগ্রগতি পর্যালোচনা সভায় গঠিত কমিটি তাদের প্রতিবেদন জমা দেয়। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত ২২ জুন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর মূল ভবনের ক্যাশ বিভাগসহ ব্যাংকিং হল পরিদর্শন করেন। তার সঙ্গে ছিলেন ডেপুটি গভর্নর, গভর্নরের উপদেষ্টা, নির্বাহী পরিচালকসহ অন্যান্য কর্মকর্তা। পরিদর্শনে তিনি কিছু গুরুত্বপূর্ণ পর্যবেক্ষণ দেন এবং ক্যাশ বিভাগ আধুনিকায়নে বাস্তবসম্মত পদক্ষেপ নিতে নির্দেশ দেন। এরই ধারাবাহিকতায় যৌথ সভা ও পর্যালোচনার মাধ্যমে সিদ্ধান্তগুলো চূড়ান্ত করা হয়।

প্রতিবেদন অনুসারে, বাংলাদেশ ব্যাংক ভবনটি কেপিআই-নিরাপত্তা নীতিমালা, ২০১৩-এর আওতাভুক্ত। যেহেতু মুদ্রা ইস্যু ও বিতরণ, ভল্ট, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ব্যবস্থাপনা এবং ব্যাংকিং ব্যবস্থা নিয়ন্ত্রণ অত্যন্ত সংবেদনশীল কার্যক্রম একই ভবনে পরিচালিত হয়। তাই অপ্রয়োজনীয় জনসমাগম নিরাপত্তার জন্য সম্ভাব্য ঝুঁকি তৈরি করছে। কারণ অতীতে রিজার্ভ হ্যাক, পরিচয়পত্র ব্যবহার করে সঞ্চয়পত্র জালিয়াতি, ভবনের অভ্যন্তরে ছবি-ভিডিও তোলা ও নিরাপত্তাকর্মীদের সঙ্গে বাগবিত-ার মতো ঘটনা ঘটেছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশ ব্যাংকে যে পরিমাণ সঞ্চয়পত্র ও প্রাইজবন্ড বিক্রি করা হয় তা খুব সহজে অন্যান্য বাণিজ্যিক ব্যাংকের মাধ্যমে দেওয়া সম্ভব। এ পরিস্থিতিতে সঞ্চয়পত্র, প্রাইজবন্ড, ছেঁড়া নোট বিনিময় ইত্যাদি রিটেইল সার্ভিস বাংলাদেশ ব্যাংকের মতিঝিল অফিস ও অন্যান্য অফিস থেকে নিরাপত্তা শঙ্কা নিয়ে এ ধরনের সেবা পরিচালনা করা যুক্তিযুক্ত নয়। পৃথিবীর কোনো কেন্দ্রীয় ব্যাংকই এ ধরনের সেবা সরাসরি জনগণকে দেয় না। দেশের ৬০টির বেশি বাণিজ্যিক ব্যাংক থাকায় তারা এ সেবা দিতে সম্পূর্ণ সক্ষম। ফলে জনগণ কোনো ভোগান্তিতে পড়বে না বলে উল্লেখ করা হয়।

তবে সঞ্চয়পত্র বিক্রি কার্যক্রম বন্ধ হলেও আগে ইস্যু করা সঞ্চয়পত্রের মেয়াদপূর্তির আগ পর্যন্ত সেবা চালু থাকবে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ ব্যাংকের মতিঝিল অফিসে গত বৃহস্পিতবার শেষে সর্বসাধারণের জন্য (বাংলাদেশ ব্যাংকের বর্তমান ও সাবেক কর্মকর্তা/কর্মচারীরা ব্যতীত) সঞ্চয়পত্র বিক্রয় কার্যক্রম বন্ধ করার পাশাপাশি বিক্রি করা সঞ্চয়পত্রগুলোর মেয়াদপূর্তির পর ওই সঞ্চয়পত্র পুনঃবিনিয়োগ কার্যক্রম বন্ধ করা হয়েছে। তবে বিক্রি করা সঞ্চয়পত্রের মেয়াদপূর্তিপূর্বক নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত বাংলাদেশ ব্যাংকের মতিঝিল অফিসের সংশ্লিষ্ট দপ্তরে ব্যাংক হিসাব পরিবর্তন, মোবাইল নম্বর পরিবর্তন, নমিনি পরিবর্তন, ক্রেতার মৃত্যুর পর নমিনি কর্তৃক পরিচালনা, মেয়াদপূর্তির আগে নগদায়ন ও আইনগত কার্যক্রম প্রক্রিয়া চালু থাকবে।

জানতে চাইলে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান বলেন, গত ২০ নভেম্বরের পর থেকে বাংলাদেশ ব্যাংকের মতিঝিল, চট্টগ্রাম, খুলনা, বগুড়া, রাজশাহী, সিলেট, সদরঘাট, বরিশাল ও রংপুর অফিস হতে সঞ্চয়পত্র ও প্রাইজবন্ড বিক্রয়, ছেঁড়া-ফাটা নোট বিনিময় এবং এ-চালানসহ তৎসংশ্লিষ্ট সেবা কার্যক্রম বন্ধ থাকবে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংক আরও জানায়, বিশ্বের কোনো দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকে কাউন্টার থেকে সরাসরি সাধারণ মানুষকে এ ধরনের সেবা দেয় না। আলোচ্য সেবাগুলো তপশিলি বাণিজ্যিক ব্যাংকের মাধ্যমে গ্রহণ করতে বলছে বাংলাদেশ ব্যাংক। জানা গেছে, পর্যায়ক্রমে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ঢাকার বাইরে অন্যান্য বিভাগীয় অফিস এসব কার্যক্রম বন্ধ করে দেওয়া হবে।

রূপালী বাংলাদেশ

Link copied!