রবিবার, ২৩ নভেম্বর, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


ভিনদেশ ডেস্ক

প্রকাশিত: নভেম্বর ২৩, ২০২৫, ০৪:০৫ এএম

উভয় সংকটে জেলেনস্কি

একদিকে আত্মমর্যাদা অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্র

ভিনদেশ ডেস্ক

প্রকাশিত: নভেম্বর ২৩, ২০২৫, ০৪:০৫ এএম

একদিকে আত্মমর্যাদা অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্র

‘ইউক্রেন কঠিন পছন্দের মুখোমুখি হতে পারে। হয় আত্মমর্যাদা ও স্বাধীনতা হারানো কিংবা গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থন হারানোর ঝুঁকি। এটি ইউক্রেনের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত।’ শুক্রবার জাতির উদ্দেশে এক ভাষণে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি দেশবাসীকে এ সংকটের কথা জানিয়ে বলেন, ইউক্রেন এখন ‘খুব কঠিন এক অবস্থায়’। জেলেনস্কি বলেন, ‘এখানে কিয়েভকে হয় মর্যাদা হারানোর ঝুঁকি নিতে হবে, নয়তো সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সহযোগী দেশটিকে হারানোর ভয় আছে। এটি আমাদের ইতিহাসের সবচেয়ে কঠিন সময়গুলোর একটি।’ রাশিয়ার সঙ্গে যুদ্ধ অবসানে হোয়াইট হাউসের শান্তি পরিকল্পনাকে ঘিরে যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থন হারানোর এমন আশঙ্কার কথা তিনি এভাবে দেশবাসীকে জানিয়ে দেন। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প নিজেদের শান্তি প্রস্তাব গ্রহণের জন্য ইউক্রেনকে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত আগামী এক সপ্তাহের সময় বেঁধে দিয়েছেন। ট্রাম্পের এমন প্রস্তাবে মহাসংকটে পড়েছেন বলে মন্তব্য করেন জেলেনস্কি।

ইউক্রেন যুক্তরাষ্ট্রের অস্ত্রের ওপর ব্যাপকভাবে নির্ভরশীল, যার মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থাও আছে। এ ছাড়া ওয়াশিংটন গোয়েন্দা তথ্যও সরবরাহ করে। কিয়েভে প্রেসিডেন্সিয়াল অফিসের সামনে দেওয়া ১০-মিনিটের ভাষণে জেলেনস্কি সতর্ক করে বলেন, ‘আমাদের দুর্বল করতে, বিভক্ত করতে...অনেক চাপের মুখে পড়বে ইউক্রেন। শত্রুরা ঘুমিয়ে নেই।’ জেলেনস্কি বলেন, তিনি আমেরিকা ও অন্য অংশীদারদের সঙ্গে শান্তভাবে কাজ করছেন। যুদ্ধ বন্ধে প্রস্তাবিত পরিকল্পনার বিকল্পও তুলে ধরেছেন। যুক্তরাষ্ট্রের শান্তি পরিকল্পনায় রাশিয়ার মূল দাবিগুলো স্থান পেয়েছে বেশি। এই প্রস্তাব ইউক্রেন সংঘাত সমাধানের ভিত্তি হতে পারে উল্লেখ করে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিন বলেছেন, ‘কিয়েভ যদি প্রস্তাবটি প্রত্যাখ্যান করে, তাহলে রুশ সেনাদের অগ্রযাত্রা অব্যাহত থাকবে।’

শুক্রবার ফক্স নিউজ রেডিওকে ট্রাম্প বলেন, তাঁর মতে প্রস্তাবটি গ্রহণের জন্য কিয়েভের জন্য উপযুক্ত সময় আগামী বৃহস্পতিবার। ট্রাম্পের এই মনোভাব দুটি সূত্র আগেই বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে নিশ্চিত করেছিল। ফাঁস হওয়া যুক্তরাষ্ট্রের শান্তি পরিকল্পনায় এমন কিছু বিষয় আছে, যা কিয়েভ আগেই প্রত্যাখ্যান করেছিল। এর মধ্যে আছে পূর্বাঞ্চলীয় কিছু এলাকার নিয়ন্ত্রণ ছেড়ে দেওয়া, সশস্ত্র বাহিনীর আকার কমিয়ে আনা এবং ন্যাটোতে যোগ না দেওয়ার অঙ্গীকার করা। এসব প্রস্তাব রাশিয়ার পক্ষে যাচ্ছে বলে মনে করা হয়। ভøাদিমির পুতিন বলেছেন, এই পরিকল্পনাটিই শান্তি প্রতিষ্ঠার ভিত্তি হতে পারে। সিকিউরিটি কেবিনেটের বৈঠকে শুক্রবার পুতিন জানান, মস্কো পরিকল্পনাটি পেয়েছে, তবে ক্রেমলিনের সঙ্গে এর বিস্তারিত এখনো আলোচনা হয়নি। তিনি বলেন, রাশিয়া নমনীয়তা দেখাতে প্রস্তুত; কিন্তু একই সঙ্গে যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার জন্যই প্রস্তুত আছে। ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, জেলেনস্কিকে পরিকল্পনাটি পছন্দ করতে হবে, অন্যথায় ইউক্রেন ও রাশিয়ার যুদ্ধ চলতে থাকবে।

জেলেনস্কি জানান, তিনি যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী স্যার কিয়ের স্টারমার, ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাখোঁ এবং জার্মান চ্যান্সেলর ফ্রেডরিখ মেৎসের কাছ থেকে অব্যাহত সমর্থনের আশ্বাস পেয়েছেন। স্যার কিয়ের শুক্রবার বলেছেন, ইউক্রেনের সহযোগীরা সবার জন্য একটি ন্যায্য ও টেকসই শান্তির জন্য অঙ্গীকারবদ্ধ।

দক্ষিণ আফ্রিকায় জি ২০ শীর্ষ বৈঠকের আগে তিনি বলেছেন, তিনি ও অন্য বিশ্বনেতারা ট্রাম্পের শান্তি পরিকল্পনার সমর্থনে প্রস্তাবটি নিয়ে আলোচনা করবেন এবং দেখবেন কীভাবে আলোচনার পরবর্তী ধাপের জন্য এই পরিকল্পনাকে শক্তিশালী করা যায়। ট্রাম্প ওই সম্মেলনে যোগ দিচ্ছেন না। তিনি সেখানে শ্বেতাঙ্গদের নির্যাতনের অভিযোগ করে আসছেন। জেলেনস্কি বলেছেন, তিনি যুক্তরাষ্ট্রের ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স ও আর্মি সেক্রেটারি ড্যান ড্রিসকলের সাথে আলোচনা করেছেন। তিনি বলেন, যুদ্ধ অবসানে ট্রাম্পের প্রচেষ্টার প্রতি ইউক্রেন সব সময় শ্রদ্ধাশীল। ওয়াশিংটনে ট্রাম্প ইউক্রেনকে অল্প সময়ের মধ্যে রাশিয়ার কাছে আরও ভূখ- হারানোর বিষয়ে সতর্ক করেছেন। ট্রাম্প বলেছেন, শান্তি পরিকল্পনা মেনে নিতে ইউক্রেনকে ২৭ নভেম্বর পর্যন্ত সময় দেওয়াই যথাযথ, তবে সব কিছু ঠিকমতো চললে এ সময়সীমা বাড়ানো যেতে পারে। হোয়াইট হাউসে শুক্রবার ট্রাম্প বলেছেন, আমরা মনে করি শান্তি প্রতিষ্ঠার একটি উপায় আছে। জেলেনস্কিকে এটি অনুমোদন করতে হবে।

ওয়াশিংটন পরিকল্পনাটি দ্রুত গ্রহণের জন্য কিয়েভকে চাপ দিচ্ছে। সপ্তাহের শুরুতে পেন্টাগনের একজন সিনিয়র কর্মকর্তাকে কিয়েভে পাঠানো হয়েছে। বৃহস্পতিবার পুতিন যুদ্ধ অব্যাহত রাখার কথা বলেছেন। সেনা কমান্ডারদের উদ্দেশে সামরিক ইউনিফর্ম পরিহিত অবস্থায় দেওয়া বক্তৃতায় তিনি বলেন, ‘আমাদের নিজস্ব কাজ ও লক্ষ্য আছে। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলোÑ পূর্ণাঙ্গ যুদ্ধের লক্ষ্য অর্জন করা। যুক্তরাষ্ট্রের ২৮ দফা শান্তি পরিকল্পনা এমন সময় বাইরে এসেছে, যখন দক্ষিণ-পূর্ব ইউক্রেনের কিছু ভূখ- নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার সাফল্যের দাবি করছে রাশিয়া। অন্যদিকে শীর্ষ কিছু কর্মকর্তার প্রায় ১০০ মিলিয়ন ডলার দুর্নীতির কেলেঙ্কারিতে জড়িয়ে পড়ার অভিযোগ নিয়ে দেশে সংকটের মুখে আছেন জেলেনস্কি। শান্তি প্রস্তাবটি তৈরির সময় ইউক্রেনকে উপেক্ষার অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছে হোয়াইট হাউস। যুক্তরাষ্ট্রের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ এবং রুশ প্রতিনিধি কিরিল দিমিত্রিভের বৈঠকের পর এটি বলা হয়। যুক্তরাষ্ট্রের একজন কর্মকর্তা বলেছেন, পরিকল্পনাটি তৈরির সাথে সাথেই ইউক্রেনের শীর্ষ নিরাপত্তা কর্মকর্তাকে দেখানো হয়েছে। তিনি এর বেশির ভাগের সাথেই একমত পোষণ করেছেন। ফাঁস হওয়া ওই পরিকল্পনায় লুহানস্ক ও দোনেৎস্ক অঞ্চলের একাংশ থেকে ইউক্রেনের সেনা প্রত্যাহারের কথা বলা হয়েছে।

 

রূপালী বাংলাদেশ

Link copied!