সোমবার, ০৮ ডিসেম্বর, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


তাপস মাহমুদ, বরগুনা

প্রকাশিত: ডিসেম্বর ৮, ২০২৫, ০৭:০৭ এএম

লুটপাটের দেড় বছর পরও অচল জাদুঘর

তাপস মাহমুদ, বরগুনা

প্রকাশিত: ডিসেম্বর ৮, ২০২৫, ০৭:০৭ এএম

লুটপাটের দেড় বছর পরও অচল জাদুঘর

  • তিন শতাধিক আলোকচিত্র, যুদ্ধকালীন সামগ্রী, প্রতœতাত্ত্বিক নিদর্শনসহ বহু মূল্যবান সংগ্রহ নিখোঁজ
  • জেলা প্রশাসক পুনর্নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়ার আশ^াস দিয়েছেন

আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর গত বছরের ৫ আগস্ট বরগুনা মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরে হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাট চালায় দুর্বৃত্তরা। ঘটনার এক বছরের বেশি সময় পেরিয়ে গেলেও জাদুঘরটি এখনো পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে আছে। হারিয়ে গেছে বহু মূল্যবান ঐতিহাসিক নিদর্শন।

জাদুঘরটিতে একসময় সংরক্ষিত ছিল মুক্তিযুদ্ধের তিন শতাধিক আলোকচিত্র, অসংখ্য বই ও স্মারক। মুক্তিযোদ্ধাদের ব্যবহৃত রাইফেল, পোশাক, রান্নার পাত্রসহ যুদ্ধকালীন বিভিন্ন সামগ্রী ছিল প্রদর্শনীতে। এ ছাড়া বেতাগীর শতবর্ষী শাহি মসজিদ, মির্জাগঞ্জের ঐতিহাসিক মজিদবাড়িয়া মসজিদ এবং কাউনিয়ার পার্বতী রঞ্জন মুখোপাধ্যায়ের মন্দিরের প্রতœতাত্ত্বিক নিদর্শনও ছিল গ্যালারিতে। পুরোনো রেডিও-টেলিভিশন ও ১৯৯০ সালে তালতলীর জোয়ালভাঙ্গা থেকে উদ্ধার করা ৪৮ ফুট দীর্ঘ তিমির কঙ্কালও ছিল আকর্ষণের কেন্দ্র। সংগ্রহে থাকা বিভিন্ন দেশের প্রায় এক হাজার ধাতব ও কাগজের মুদ্রার অনেকগুলোই এখন নিখোঁজ।

২০১৩ সালে বরগুনা জেলা শিল্পকলা একাডেমির নিচতলায় মুক্তিযুদ্ধ গ্যালারি হিসেবে যাত্রা শুরু করে এ সংগ্রহশালা। ২০১৮ সালে এটি প্রাতিষ্ঠানিক রূপ পায় এবং ২০১৯ সালের ৩০ নভেম্বর পূর্ণাঙ্গ জাদুঘরে উন্নীত হয়। পরে শিক্ষার্থী ও দর্শনার্থীদের নিয়মিত ভিড়ে মুখর থাকত এই স্থানটি।

জাদুঘরের ট্রাস্টি, সাংবাদিক ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব চিত্তরঞ্জন শীল বলেন, ‘১৯৮৫-৮৬ সালে স্থানীয় কয়েকজন সাংবাদিক ও সাংস্কৃতিক কর্মী মুক্তিযুদ্ধ ও স্থানীয় প্রতœতাত্ত্বিক নিদর্শনের ছবি সংগ্রহ করে প্রদর্শনী আয়োজন করেন। পরে সাংবাদিক, বুদ্ধিজীবী, সুশীল সমাজ, রোভার স্কাউটস, রেড ক্রিসেন্টসহ বিভিন্ন সংগঠন এ উদ্যোগে যুক্ত হয়।’ তিনি জানান, জাতীয় পার্টি, বিএনপি ও আওয়ামী লীগ, যে-ই সরকারে থাকুক, সবাই কোনো না কোনোভাবে এই জাদুঘরের কাজে সহায়তা করেছে।

তিনি আরও জানান, মুক্তিযুদ্ধ ছাড়াও বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের (মুসলিম লীগ, ন্যাপ, আওয়ামী লীগ, কমিউনিস্ট পার্টি, কৃষক-প্রজা পার্টি, নেজামে ইসলাম) যুদ্ধকালীন কর্মকা--সংক্রান্ত দলিলপত্রও এখানে সংরক্ষণ করা হতো। ছিল বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, সেক্টর কমান্ডার এবং সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের আলোকচিত্রসহ নানা ইতিহাসভিত্তিক দুর্লভ ছবি।

গত বছরের ৫ আগস্টের হামলাকে ‘পরিকল্পিত ভাঙচুর’ দাবি করেন এক প্রত্যক্ষদর্শী। নাম প্রকাশ না করার শর্তে তিনি বলেন, ‘হামলাকারীরা কাচঘেরা প্রতিটি ডিসপ্লে ভেঙে বেশ কিছু নিদর্শন লুট করে। বই ও নথিপত্র ছিঁড়ে বাইরে ফেলে দেয়। পরে সুযোগ বুঝে অনেকেই বাকি জিনিসপত্র নিয়ে যায়।’

হামলার তিন দিন পর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সদস্যরা অবশিষ্ট কিছু উপকরণ উদ্ধার করার চেষ্টা করলেও চুরি যাওয়া কোনো নিদর্শন এখনো উদ্ধার হয়নি।

বরগুনা জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের আহ্বায়ক ইউসুফ মৃধা জাদুঘরটির সংস্কার ও নিখোঁজ নিদর্শন উদ্ধারে জেলা প্রশাসনের সহযোগিতা চান।

এ বিষয়ে বরগুনা অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) অনিমেষ বিশ^াস বলেন, ‘জাদুঘর ভাঙচুরের পর সংস্কারে কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। এখনো জাদুঘরটি ওই অবস্থায় পড়ে আছে।’

বরগুনার নবাগত জেলা প্রশাসক মিজ তাসলিমা আক্তার দৈনিক রূপালী বাংলাদেশকে বলেন, ‘আমি সদ্য যোগদান করেছি। আপনাদের মাধ্যমে বিষয়টি জানতে পারলাম। সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও বিভাগগুলোর সঙ্গে কথা বলে জাদুঘরটি পুনর্নির্মাণের বিষয়ে উদ্যোগ নেব।’

রূপালী বাংলাদেশ

Link copied!