বরিশালের মুলাদীতে আড়িয়াল খাঁ নদীর ওপর নির্মিত নাজিরপুর সেতুর নাম পাল্টে ‘৩৬ জুলাই সেতু’ নামে উদ্বোধনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। এ নিয়ে নাজিরপুর, রামারপোলসহ স্থানীয়দের মাঝে চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। স্থানীয় সরকার ও পল্লি উন্নয়ন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টার সহকারী একান্ত সচিব ও রামারপোল গ্রামের বাসিন্দা মো. আয়মন হাসান রাহাতের বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগ করেছেন স্থানীয়রা। তারা গণস্বাক্ষর সংগ্রহ করে সেতুর নাম অপরিবর্তিত রেখে ‘নাজিরপুর-রামারপোল সৌহার্দ্য সেতু’ নামেই উদ্বোধনের জন্য বরিশাল জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও মুলাদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার কাছে লিখিত আবেদন করেছেন।
শনিবার (০৬ ডিসেম্বর) উপজেলার নাজিরপুর ইউনিয়নের রামারপোল এলাকায় আড়িয়াল খাঁ নদীর পশ্চিম পাড়ে সেতুটির উদ্বোধনের কথা রয়েছে। সেতু উদ্বোধনকে ঘিরে এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে। সেতুটির নাম নিয়ে এলাকায় দুই পক্ষের সংঘর্ষের শঙ্কা রয়েছে বলে জানান স্থানীয়রা। তবে উপজেলা প্রশাসনের দাবি, সেতু উদ্বোধনকে ঘিরে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনার শঙ্কা নেই।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, ২০১৪ সালে রাজধানী ঢাকার সঙ্গে যোগাযোগ উন্নত করার লক্ষ্যে আড়িয়াল খাঁ নদীর ওপর নাজিরপুর-রামারপোল ‘সৌহার্দ্য সেতুর’ ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়। তবে ধীরগতির কাজ এবং দীর্ঘদিন কাজ বন্ধ থাকার ফলে চলতি বছর মূল সেতু নির্মাণ কাজ শেষ হলেও সংযোগ সড়কের কাজ চলমান রয়েছে। কাজ সম্পূর্ণ শেষ হওয়ার আগেই স্থানীয় সরকার ও পল্লি উন্নয়ন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টার সহকারী একান্ত সচিব মো. আয়মন হাসান মন্ত্রণালয় থেকে সেতুটির নাম পাল্টে ‘৩৬ জুলাই সেতু’ করে ৬ ডিসেম্বর উদ্বোধনের দিন ধার্য করেন।
স্থানীয় বাসিন্দা ও উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক শায়লা শারমিন মিম্মু বলেন, সেতুটি নির্মাণের জন্য অর্থ মন্ত্রণালয়ের সাবেক অতিরিক্ত সচিব মো. ইমদাদুল হক মজনুসহ নাজিরপুর ইউনিয়নের অনেকেই পরিশ্রম করেছেন। স্থানীয়দের সঙ্গে বৈঠক করেই ‘নাজিরপুর-রামারপোল সৌহার্দ্য সেতু’ নামকরণ করা হয়েছিল। কিন্তু রামারপোল গ্রামের বাসিন্দা ও উপদেষ্টার সহকারী একান্ত সচিব ক্ষমতার অপব্যবহার করে সেতুটির নাম পাল্টে ‘৩৬ জুলাই সেতু’ করে উদ্বোধনের প্রস্তুতি নিয়েছেন। এ নিয়ে সাধারণ মানুষের মাঝে ক্ষোভ রয়েছে। সেতু উদ্বোধনের সময় সংঘর্ষের ঘটনাও ঘটতে পারে।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. গোলাম সরওয়ার জানান, স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় থেকে সেতুটির নাম পরিবর্তন করে ‘৩৬ জুলাই সেতু’ নামে উদ্বোধনের দিন নির্ধারণ করা হয়েছে। তবে সেতুটির নাম নিয়ে স্থানীয় বাসিন্দারা আপত্তি জানিয়ে একটি অভিযোগ দিয়েছেন। অভিযোগের বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে। উদ্বোধন অনুষ্ঠানকে ঘিরে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটার সম্ভাবনা নেই।
স্থানীয় সরকার ও পল্লি উন্নয়ন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টার সহকারী একান্ত সচিব মো. আয়মন হাসান রাহাত ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগ অস্বীকার করে দৈনিক রূপালী বাংলাদেশকে বলেন, ‘আড়িয়াল খাঁ নদীর ওপর নির্মিত সেতুটির কোনো নাম ছিল না। মন্ত্রণালয় থেকে ৩৬ জুলাই সেতু নামকরণ করে উদ্বোধনের দিনক্ষণ নির্ধারণ করেছে। সেখানে আমার কোনোপ্রকার সংশ্লিষ্টতা নেই।’

সর্বশেষ খবর পেতে রুপালী বাংলাদেশের গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন