সোমবার, ০৮ ডিসেম্বর, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


বিনোদন ডেস্ক

প্রকাশিত: ডিসেম্বর ৮, ২০২৫, ০৭:২৮ এএম

বড় স্বপ্নের পথে অতিথি

বিনোদন ডেস্ক

প্রকাশিত: ডিসেম্বর ৮, ২০২৫, ০৭:২৮ এএম

বড় স্বপ্নের পথে অতিথি

মাত্র নয় বছর বয়সে যখন বেশিরভাগ শিশু স্কুলের ব্যাগ গুছিয়ে ক্লাসে যায়, তখন ইসরাত জাহান অতিথি ক্যামেরার সামনে দাঁড়িয়ে হাসি ছড়িয়েছিলেন ভিম বাংলাদেশের একটি বিজ্ঞাপনে। পরিচালক ছিলেন দেশের অন্যতম প্রভাবশালী নির্মাতা অমিতাভ রেজা। সেই একটি বিজ্ঞাপনই যেন দরজা খুলে দিয়েছিল বাংলাদেশের মিডিয়া জগতের। ২০১০ সালের ১৩ জুলাই জন্ম নেওয়া এই কিশোরী এখন পরিচিত মুখ প্রায় প্রতিটি জনপ্রিয় ব্র্যান্ডের বিজ্ঞাপনে- গ্রামীণফোন থেকে প্রাণ-আরএফএল, লাক্স থেকে ডাবর আমলা। টিভি নাটকেও তার পদচারণা শুরু হয়েছে দ্রুত। ক্যামেরার সামনে তার সাবলীল অভিনয় আর হাসিতে মুগ্ধতা ছড়ানোর ক্ষমতা তাকে করে তুলেছে দেশের অন্যতম দর্শকপ্রিয় শিশুশিল্পী হিসেবে। শুধু অভিনয় নয়, ছোটবেলা থেকেই নাচ; গান, গিটার বাজানো আর পেইন্টিং, বিভিন্ন শিল্পচর্চায় নিজেকে ব্যস্ত রেখেছেন অতিথি।

মিডিয়ার ঝলমলে জগতে আসা ছিল তার বহুদিনের স্বপ্ন। তবে স্বপ্নের পথচলা শুরুটা হয়েছিল একেবারে অপ্রত্যাশিতভাবে। পরিবারের একজনের মাধ্যমে সুযোগ এসে দরজায় কড়া নাড়ে, আর সেই সুযোগই শিশুশিল্পী অতিথিকে নিয়ে আসে বিজ্ঞাপনচিত্র থেকে নাটকের অঙ্গনে। প্রথম কাজের অভিজ্ঞতা তার ভেতরে অভিনয়ের প্রতি আগ্রহ আরও গভীর করে তোলে। এরপর ধীরে ধীরে ছোট পর্দায় নিয়মিত হন অতিথি।

তার ভাষ্য, ‘মিডিয়াতে আসা আমার জন্য অনেক বড় স্বপ্ন ছিল। প্রথমে ভাবতাম, কীভাবে এই জগতে আসা যায়। একদিন হঠাৎ আমার বড় বোনের কাছে টিভিসি করার প্রস্তাব আসে। তিনি আগ্রহী ছিলেন না, পরে আমার কথা বলেন। এরপর আমাকে অডিশন দেওয়ার জন্য ডাকা হয়। এক মাস পর জয়া আহসান আপুর সঙ্গে একটি টিভিসির কাজ করি। সেই টিভিসি করার পর আমার মনের মধ্যে অভিনয়ের প্রতি আরও আকাক্সক্ষা তৈরি হয়। পরে একদিন এক নাটকের কাজ করার প্রস্তাব পাই, সেই কাজটিও করি। এরপর থেকেই ধীরে ধীরে নাটকে অভিনয় করা শুরু হয়।’

অভিনয়ের পথচলায় তার সবচেয়ে বড় শক্তি পরিবার। বিশেষ করে মা-বাবা সবসময় পাশে থেকেছেন পরামর্শ, সময় ও যতœ দিয়ে। শুধু অভিনয় নিয়ে নয়, পড়াশোনা থেকে শুরু করে শুটিংয়ের প্রতিটি ধাপে তাদের নজর ও সহযোগিতা তাকে এগিয়ে যেতে আত্মবিশ্বাস জুগিয়েছে। অতিথি দৈনিক রূপালী বাংলাদেশকে বলেন, ‘আমার বাবা-মা এবং পরিবার সবাই আমাকে অনেক সাপোর্ট করেছে। তাদের সাপোর্ট ছাড়া আমি কখনোই অভিনয় করতে পারতাম না। তারা আমার কাজ খুব যতœ নিয়ে দেখেছেন এবং কোথায় কীভাবে করলে আরও ভালো হবে সেই মতামত দিয়েছেন। আমার বাবা-মা সবসময় শুটিং সেটে আমাকে নিয়ে যায়, এটাও আমার কাছে বড় এক সাপোর্ট। আমার পড়াশোনার প্রতি যেমন গুরুত্ব দেন, ঠিক তেমনই গুরুত্ব দিয়ে অভিনয়ের প্রতিও নজর রেখেছেন।’

শিশুশিল্পী ইসরাত জাহান অতিথির জন্য পড়াশোনা আর শুটিং একসঙ্গে সামলানো চ্যালেঞ্জিং হলেও অসম্ভব নয়। বিশেষ করে সম্প্রতি এসএসসি টেস্ট পরীক্ষার সময়টিতে তাকে একই দিনে পরীক্ষা ও শুটিং দুই দিকেই দৌড়াতে হয়েছে। ধারাবাহিক নাটকের টানা শুটিংয়ের কারণে সময় ছিল না বললেই চলে, তবুও তিনি অভিনয় এবং পড়াশোনাÑ দুটোকেই গুরুত্ব দিয়ে এগিয়ে গেছেন।

অতিথির মতে, মনের জোর আর ইচ্ছাশক্তি থাকলেই সবই করা সম্ভব। এই শিশুশিল্পী বলেন, ‘যখন ছোট ছিলাম তখন এতটা চাপ লাগেনি, কিন্তু এখন একটু চাপ যাচ্ছে। আমার এসএসসি টেস্ট পরীক্ষা চলছিল আর শুটও করতে হয়েছে। সময়টা কঠিন লাগছিল, সকালবেলা পরীক্ষা দিয়ে, স্কুল ড্রেস পরে সরাসরি শুটিং সেটে চলে যেতাম। এমনভাবে এক সপ্তাহ গিয়েছিল, যেহেতু ধারাবাহিক নাটক করছিলাম। তারপরও আমি ভাবলাম, যদি দুইটা বিষয় একসঙ্গে ব্যালেন্স করতে না পারি তাহলে তো আমার মধ্যে কোনো বিশেষ গুণ থাকল না। মনের জোর থাকলে সবই সম্ভব।’

শিশুশিল্পী ইসরাত জাহান অতিথি অভিনয় করেই বড় হচ্ছেন। তাই তার সামনে নায়িকা হওয়ার পথ যেমন খোলা, তেমনি তিনি নিজের জন্য খুঁজছেন আরও গভীর ও বাস্তবসম্মত চরিত্র। অতিথির কাছে নায়িকা হওয়াই চূড়ান্ত লক্ষ্য নয়, বরং তিনি চান এমন চরিত্রে অভিনয় করতে, যা দর্শকের মনে দাগ কাটবে এবং তাদের জীবনের সঙ্গে মিল খুঁজে পাওয়া যাবে।

মিডিয়ায় শিশুশিল্পীদের পথচলা অনেক সময়ই চ্যালেঞ্জিং বলে মনে করা হয়। শুটিং, পড়াশোনা, সময় মতো বিশ্রাম, সবকিছু মিলিয়ে সামলানো সহজ নয়। তবে ইসরাত জাহান অতিথির ক্ষেত্রে অভিজ্ঞতা ছিল ভিন্ন। ছোটবেলা থেকেই তিনি এমন পরিচালকদের সঙ্গে কাজ করেছেন, যারা তাকে শুধু শিল্পী হিসেবে নয়, পরিবারের সদস্যের মতো দেখেছেন। তাই এখনো পর্যন্ত বড় কোনো সমস্যার মুখোমুখি হতে হয়নি তাকে।

অভিনয়ের মাধ্যমে ছোটবেলার একটি বড় স্বপ্ন পূরণ হয়েছে অতিথির। তবে তার স্বপ্ন এখানেই থেমে নেই। তিনি বিশ্বাস করেন, বড় স্বপ্ন দেখলেই বড় কিছু অর্জন করা যায়। দর্শকের ভালোবাসা তাকে আরও নতুন পথে হাঁটার শক্তি দেয়, আর তিনি চান, ভবিষ্যতেও তাদের জন্য আরও ভালো কাজ উপহার দিতে।

অতিথি বলেন, ‘আমি স্বপ্ন দেখতে অনেক ভালোবাসি। অনেক বড় বড় স্বপ্ন দেখি। ছোটবেলা থেকে অভিনয় করার স্বপ্ন দেখতাম। আলহামদুলিল্লাহ, সেটা পূরণ হয়েছে। এ রকম আরও অনেক স্বপ্ন আছে, সেই স্বপ্নের পথেই হাঁটছি। আমার বিশ্বাস, কেউ যদি মন থেকে কিছু চায়, আল্লাহ কোনো না কোনোভাবে সেটা পূরণ করে। দর্শক যেভাবে আমাকে ভালোবাসা দিচ্ছে, এই ভালোবাসা আরও বেশি পেতে চাই। দর্শকদের যেন ভালো ভালো কাজ উপহার দিতে পারি।’

বর্তমানে প্রচারিত ধারাবাহিক নাটক ‘এটা আমাদেরই গল্প’-এ ফারহানা চরিত্রে অতিথির অভিনয় দারুণ সাড়া ফেলেছে। নাটকটি শুরু থেকেই দর্শকের আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দুতে, আর ফারহানা চরিত্রের সরলতা, আবেগ ও বাস্তবত্ব দর্শকদের মন ছুঁয়ে গেছে। সামাজিক মাধ্যমে থেকে ব্যক্তিগত বার্তা, সবখানেই মিলছে প্রশংসা, যা অতিথির অভিনয় ক্যারিয়ারের জন্য বড় অর্জন হিসেবে দেখা হচ্ছে।

এই অভিনয়শিল্পী বলেন, ‘মুহাম্মদ মোস্তফা কামাল রাজ ভাই পরিচালিত এই ধারাবাহিক থেকে দর্শকদের কাছ থেকে এত সাড়া পাচ্ছি যা বলে বোঝানো যাবে না। শুরু থেকেই ফারহানা চরিত্রটা দর্শক প্রচুর পছন্দ করছে, এটা আমার কাছে অনেক বড় পাওয়া। ফারহানা চরিত্রটাই এমন, মানুষ তাকে ভালোবাসবে। মানুষ আমার এই চরিত্রটার সঙ্গে নিজেকে দেখতে পাচ্ছে। অনেক ভালো মন্তব্য পাচ্ছি। তখন মনে হয়, না, আমি আসলেই চরিত্রটা ফুটিয়ে তুলতে পেরেছি।’

রূপালী বাংলাদেশ

Link copied!