সোমবার, ০৮ ডিসেম্বর, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


রূপালী প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ডিসেম্বর ৮, ২০২৫, ০৭:৩৬ এএম

বিডা চেয়ারম্যান

দেশে ব্যবসা নিবন্ধনের প্রক্রিয়া এখনো বেশ জটিল

রূপালী প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ডিসেম্বর ৮, ২০২৫, ০৭:৩৬ এএম

দেশে ব্যবসা নিবন্ধনের প্রক্রিয়া এখনো বেশ জটিল

বাংলাদেশে ব্যবসা নিবন্ধনের প্রক্রিয়া এখনো বেশ জটিল। বিভিন্ন দপ্তরে সরাসরি গিয়ে কাজ করতে হয় বলে অনেক সময়ই উদ্যোক্তাদের দুর্নীতি ও হয়রানির মুখে পড়তে হয় বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) নির্বাহী চেয়ারম্যান আশিক চৌধুরী। তিনি বলেন, এসব জটিলতা দূর করতে বিদেশি দাতা সংস্থার সহায়তায় একীভূত ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম গড়ে তোলা হচ্ছে। ফলে এক অ্যাপের মাধ্যমে ব্যবসায়ীরা নিবন্ধন সম্পর্কিত সব সেবা পাবেন।

গতকাল রোববার সকালে রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে ১২তম এসএমই পণ্যমেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন আশিক চৌধুরী। প্রধান অতিথি ছিলেন শিল্প উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান। এ ছাড়া সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সিটি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাসরুর আরেফিন। এ সময় স্বাগত বক্তব্য দেন এসএমই ফাউন্ডেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আনোয়ার হোসেন চৌধুরী।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে আশিক চৌধুরী বলেন, সরকারি সেবা নিতে গিয়ে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা যদি দুর্নীতির মুখোমুখি হন, তাহলে তাদের ব্যাবসায়িক কাঠামোই ভেঙে পড়ে। তাই সরকার চেষ্টা করছে, যত বেশি সেবা ও প্রক্রিয়া ডিজিটাল ব্যবস্থার আওতায় নিয়ে আসা যায়। উদ্যোক্তাদের সেবা নিতে যেন সশরীরে যেতে না হয়। এতে স্বচ্ছতা বাড়বে, তেমনি দুর্নীতির পথও সংকুচিত হবে।

আশিক চৌধুরী আরও বলেন, ‘২০৩০ সালের মধ্যে পৃথিবীর অষ্টম বৃহৎ ভোক্তা বাজারে পরিণত হবে বাংলাদেশ। আমরা যে ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের অংশ ছিলাম, আগামী পাঁচ বছরে দেশের স্থানীয় বাজার সেই যুক্তরাজ্যের চেয়ে বড় হবে। তাই আগামী দিনে দেশে ব্যবসা করার সম্ভাবনা অনেক বেশি।’

আশিক চৌধুরী বলেন, বিদেশি বিনিয়োগকারীরা স্থানীয় ব্যবসায়ীদের অংশীদার হতে উদ্যোক্তা খোঁজে। দেশের ব্যবসায়ীরাও বিদেশি বিনিয়োগকারী খোঁজেন। এ দুই পক্ষকে মিলিয়ে দেওয়া বাস্তবে বেশ জটিল। তাই এই সমস্যা দূর করতে ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম তৈরি করা হয়েছে। সেখানে উদ্যোক্তারা নিজেদের তথ্য নিবন্ধন করতে পারবেন। বিদেশি বিনিয়োগকারীরা সহজেই ব্যবসায়ীদের খুঁজে নিতে পারবেন।

মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বর্ষসেরা মাইক্রো উদ্যোক্তা (নারী), বর্ষসেরা মাইক্রো উদ্যোক্তা (পুরুষ), বর্ষসেরা ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা (নারী), বর্ষসেরা ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা (পুরুষ), বর্ষসেরা মাঝারি উদ্যোক্তা (পুরুষ) ও বর্ষসেরা স্টার্টআপÑ এই মোট ছয় শ্রেণিতে পাঁচ উদ্যোক্তা ও এক প্রতিষ্ঠানকে পুরস্কার দেওয়া হয়।

বর্ষসেরা মাইক্রো উদ্যোক্তা (নারী) ক্যাটাগরিতে আহ্লাদ ফ্যাশনসের জুয়েনা ফেরদৌস, বর্ষসেরা মাইক্রো উদ্যোক্তা (পুরুষ) ক্যাটাগরিতে রিবানার মো. ওয়াহিদুজ্জামান, বর্ষসেরা ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা (নারী) ক্যাটাগরিতে সুতার কাব্যের মোছাম্মৎ সিরাজুম মুনিরা, বর্ষসেরা ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা (পুরুষ) ক্যাটাগরিতে আমান প্লাস্টিক টয়েজ ইন্ডাস্ট্রিজের আমান উল্লাহ, বর্ষসেরা মাঝারি উদ্যোক্তা (পুরুষ) ক্যাটাগরিতে অপরাজেয়ের কাজী মো. মনির হোসেন ও বর্ষসেরা স্টার্টআপ ক্যাটাগরিতে ডুবোটেক ডিজিটালের মো. মাহফুজুল হক পুরস্কার পান।

সামগ্রিক শিল্পায়ন কাঠামোয় এসএমই ও বড় শিল্প খাত একে অপরের পরিপূরক। একটি খাত বড় হলে অন্যটিও স্বাভাবিকভাবে গতি পায়। সে কারণেই নীতিনির্ধারকেরা বারবার দুই খাতের আন্তঃনির্ভরতা ও সমন্বিত বিকাশের ওপর জোর দিচ্ছেন। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে শিল্প উপদেষ্টা আদিলুর রহমান বলেন, বিশ্বব্যাপী এসএমই খাত অর্থনীতির অন্যতম চালিকাশক্তি। এই খাতের বিকাশে শিল্পায়ন, কর্মসংস্থান, দারিদ্র্যবিমোচন ও সুষম উন্নয়ন নিশ্চিত করা সম্ভব। এসএমই খাত হলো শ্রমঘন ও স্বল্প পুঁজিনির্ভর খাত, যেখানে কম বিনিয়োগে বেশি কর্মসংস্থান সৃষ্টি করা যায়। আদিলুর রহমান আরও বলেন, এসএমই ফাউন্ডেশন ইতোমধ্যে সারা দেশে ১৭৭টি এসএমই ক্লাস্টার চিহ্নিত করেছে। এসব ক্লাস্টারের উন্নয়নে প্রয়োজনীয় অবকাঠামো সম্প্রসারণসহ সব ধরনের সহায়তা দেওয়া হচ্ছে। বিভিন্ন এলাকায় ছড়িয়ে-ছিটিয়ে শিল্প স্থাপন না করে বিসিক, এসএমই বা নির্ধারিত শিল্পনগরীগুলোর মধ্যেই কারখানা স্থাপনে এগিয়ে আসতে হবে। এতে উদ্যোক্তারা বেশি সুবিধা পাবেন। ব্যবসা পরিচালনাও সহজ হবে। একই সঙ্গে কৃষিজমি সংরক্ষণ সম্ভব হবে।

সিটি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মাসরুর আরেফিন বলেন, ‘এসএমই খাতে বড় সমস্যা এখনো ঋণের সুদের হার। ছোট উদ্যোক্তাদের জন্য সুদের হার ১৫ শতাংশ এবং মাঝারি উদ্যোক্তাদের জন্য ১৩ থেকে ১৪ শতাংশ। আমাদের সুদের হার বেশি। কিন্তু মূল্যস্ফীতি না কমলে সুদ কমানোর সুযোগ নেই।’

মাসরুর আরেফিন আরও বলেন, সম্প্রতি এসএমই ঋণ বিতরণ ২ শতাংশ কমেছে। কেননা, বড় উদ্যোক্তারা নতুন বিনিয়োগে আগ্রহ দেখাচ্ছেন না। বড় শিল্পে বিনিয়োগ বাড়লে তার সঙ্গে জড়িত অন্তত ১৫ থেকে ২০টি এসএমই উদ্যোক্তাও লাভবান হয়।

ব্যাংক খাতে তারল্যের ঘাটতি নেই। দেশের বড় ব্যাংকগুলোর হাতে প্রায় দেড় লাখ কোটি টাকার অতিরিক্ত তারল্য রয়েছে। আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোও ব্যাংকগুলোকে বড় অঙ্কের ডলার সহায়তার জন্য প্রস্তুত রয়েছে। তবে সবাই নির্বাচনের দিকে তাকিয়ে আছে বলে মন্তব্য করেন মাসরুর আরেফিন। তিনি আরও বলেন, নির্বাচনের পর বিনিয়োগ বাড়লে এসএমই খাতেও ঋণের প্রবাহ বাড়বে। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্য দেন এসএমই ফাউন্ডেশনের চেয়ারপারসন মো. মুসফিকুর রহমান। তিনি বলেন, ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের জন্য অর্থায়ন এখনো বড় চ্যালেঞ্জ। সে কারণে মেলায় ৩০টি ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানকে স্টল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। দেশে এসএমইদের কেন্দ্রীয় তথ্যভান্ডার নেই। নীতিনির্ধারণ, খাতভিত্তিক সহায়তা, রপ্তানি সম্ভাবনা মূল্যায়নÑ সবকিছুর জন্য এটি জরুরি।

এ বিষয়ে সরকারের সহযোগিতা প্রয়োজন। মেলার আয়োজকেরা জানান, আট দিনব্যাপী এই মেলা ১৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত চলবে। মেলা সবার জন্য সকাল ১০টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত উন্মুক্ত থাকবে। সব মিলিয়ে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ৩৫০-এর বেশি ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তা প্রতিষ্ঠান এতে অংশ নিয়েছে। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন বাংলাদেশ প্লাস্টিক পণ্য প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিপিজিএমইএ) সভাপতি সামিম আহমেদ, উইমেনস এন্ট্রাপ্রেনিউরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের সভাপতি নাসরিন ফাতেমা আউয়াল এবং শিল্প মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. নূরুজ্জামান।

রূপালী বাংলাদেশ

Link copied!