গাজায় মৌসুমি বর্ষণ নয়, বরং শক্তিশালী ‘বায়রন’ ঝড়ের প্রথম ধাক্কায় হাজার হাজার শরণার্থী তাঁবু প্লাবিত হয়েছে। দুই বছর ধরে চলমান ইসরায়েলি হামলা ও অবরোধে বিপর্যস্ত উপত্যকার মানুষের ওপর নতুন দুর্যোগ নেমে এসেছে এই ভারি বৃষ্টিপাতে। গতকাল বুধবার ভোরে নেমে আসা বৃষ্টি ও ঝড়ো হাওয়ায় কয়েকটি এলাকায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়।
ফিলিস্তিনের সিভিল ডিফেন্সের মুখপাত্র মাহমুদ বাসাল ভিডিওবার্তায় জানান, গাজার বেশিরভাগ নিষ্কাশনব্যবস্থা ধ্বংস বা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় বন্যার পানি দ্রুতই আবর্জনার সঙ্গে মিশে যাচ্ছে। এতে কলেরা, ডায়েরিয়া ও অন্যান্য পানিবাহিত রোগের ঝুঁকি উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়ছে। আবর্জনা সংগ্রহ প্রায় বন্ধ থাকায় চিকিৎসা বর্জ্য, প্লাস্টিক, পশুর মৃতদেহ ও ধ্বংসাবশেষ আশ্রয়স্থল এলাকায় ছড়িয়ে পড়তে পারে। এতে ভূগর্ভস্থ পানির উৎস দূষিত হওয়ার আশঙ্কা আরও ঘনীভূত হয়েছে।
সরকারি হিসাব বলছে, উপত্যকার ২৪ লাখ মানুষের চাহিদা পূরণে জরুরি ত্রাণ এখনো যথেষ্ট নয়। বাসাল জানান, কমপক্ষে তিন লাখ তাঁবু ও প্রিফ্যাব্রিকেটেড ইউনিট প্রয়োজনÑ যা মৌলিক আশ্রয়ের জন্য অপরিহার্য। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি তিনি দ্রুত মানবিক সহায়তা বৃদ্ধির আহ্বান জানান।
গাজার সরকারি মিডিয়া অফিস সতর্ক করে বলেছে, ‘বায়রন’ ঝড় আগামী ৪৮ ঘণ্টায় তীব্র হলে লাখো বাস্তুচ্যুত মানুষের পরিস্থিতি আরও বিপজ্জনক হয়ে উঠতে পারে। বিবৃতিতে বলা হয়, দীর্ঘ এক বছরেরও বেশি সময় ধরে জীর্ণ তাঁবুতে থাকা পরিবারগুলো তীব্র ঠান্ডা বা ঝড়ো হাওয়া থেকে কোনো সুরক্ষা পাচ্ছে না।
মিডিয়া অফিস আরও জানায়, এই আবহাওয়াজনিত দুর্যোগ মূলত অবরোধ ও চলমান সহিংসতায় সৃষ্ট মানবিক বিপর্যয়কেই আরও প্রকট করে তুলছে। গাজার মানুষ তাই এখন একই সঙ্গে প্রকৃতি ও যুদ্ধÑ দুই ফ্রন্টেই লড়াই করছে।

সর্বশেষ খবর পেতে রুপালী বাংলাদেশের গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন