ইসরায়েলি কাঁদানে গ্যাসে শ্বাসরুদ্ধ হয়ে পশ্চিম তীরে এক ফিলিস্তিনির মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় অধিকারকর্মী ও প্রত্যক্ষদর্শীরা। বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) রামাল্লাহ শহরের পূর্বাঞ্চলের সিলওয়াদ, রাম্মুন ও আবু ফাল্লাহ শহরে অবৈধ ইসরায়েলি দখলদারদের হামলার পর এই ঘটনা ঘটে। স্থানীয় অধিকারকর্মী আয়েদ ঘাফরি জানান, হামলার সময় অবৈধ বসতি স্থাপনকারীরা ওই তিনটি শহরে অন্তত ১৬টি গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয় এবং ফিলিস্তিনি বাড়ির দেয়ালে হিব্রু ভাষায় বিভ্রান্তিকর স্লোগান লেখে। প্রকাশিত ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, সশস্ত্র দখলদাররা পরিকল্পিতভাবে দাহ্য পদার্থ ঢেলে ফিলিস্তিনি গাড়িগুলোতে আগুন ধরিয়ে দিচ্ছে। আগুনে পুড়ে ধ্বংস হয় একাধিক গাড়ি ও বাড়ির সামনের অংশ। হামলার সময় ইসরায়েলি সেনারা কাঁদানে গ্যাস ছোড়ে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, এই গ্যাসে একজন ফিলিস্তিনি নাগরিক শ্বাস নিতে না পেরে ঘটনাস্থলেই মারা যান। প্রসঙ্গত, ২০২৩ সালের অক্টোবরে গাজায় ইসরায়েলের গণহত্যামূলক যুদ্ধ শুরুর পর থেকে এখন পর্যন্ত পশ্চিম তীরে ইসরায়েলি বাহিনী ও অবৈধ দখলদারদের হাতে কমপক্ষে এক হাজার ৯ জন ফিলিস্তিনি নিহত এবং সাত হাজারের বেশি মানুষ আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। এই সহিংসতা চলমান থাকা অবস্থায়, ২০২৪ সালের জুলাইয়ে আন্তর্জাতিক বিচার আদালত এক ঐতিহাসিক রায়ে পশ্চিম তীর ও পূর্ব জেরুজালেমে ইসরায়েলি দখলদারিকে অবৈধ ঘোষণা করে এবং সব ইসরায়েলি বসতি সরিয়ে নেওয়ার আহ্বান জানায়। তবে আদালতের এই রায়কে উপেক্ষা করেই ইসরায়েলি দখলদাররা প্রতিদিন নতুন নতুন এলাকা দখলে নিচ্ছে। এদিকে ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেওয়ার পরিকল্পনা ঘোষণার পর কানাডার সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তি করা খুব কঠিন হয়ে পড়বে বলে জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এর আগে বুধবার এক সংবাদ সম্মেলনে মার্ক কার্নি বলেন, ফিলিস্তিনের গাজায় মানুষের দুর্দশা অসহনীয়। দ্রুত এর অবনতি হচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে আগামী সেপ্টেম্বরে অনুষ্ঠেয় জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের ৮০তম সম্মেলনে ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে কানাডার। কানাডার এমন ঘোষণার প্রায় ১২ ঘণ্টা পর, ট্রাম্প তার সোশ্যাল মিডিয়া ট্রুথ সোশ্যালে পোস্ট করেন, ‘ওয়াও! কানাডা এখনই ঘোষণা করেছে যে তারা ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে সমর্থন দিচ্ছে। এটা আমাদের পক্ষে তাদের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তি করা খুব কঠিন করে তুলবে। ওহ্ কানাডা!!!’ ট্রাম্পের এই বাণিজ্য হুমকি এমন একসময়ে এসেছে, যখন ট্রাম্পের ‘লিবারেশন ডে’ নামে পরিচিত নতুন শুল্ক কার্যকর হতে যাচ্ছে। মূলত যেসব দেশের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের এখনো কোনো বাণিজ্য চুক্তি হয়নি, তাদের পণ্যের ওপর বেশি শুল্ক বসানো হবে। যদি আজকের মধ্যে চুক্তি না হয়, তবে শুক্রবার থেকে যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি করা কানাডার বেশির ভাগ পণ্যের ওপর ৩৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ হবে। যুক্তরাজ্য, দক্ষিণ কোরিয়া, জাপান এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ কিছু দেশ সম্প্রতি চুক্তি করেছে, তাই তাদের রপ্তানি পণ্যের ওপর যুক্তরাষ্ট্রে নির্দিষ্ট শুল্ক আরোপ করবে। কিন্তু চীন ও মেক্সিকোর মতো অনেক দেশ এখনো চুক্তি করেনি।