বৃহস্পতিবার, ১১ সেপ্টেম্বর, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


ভিনদেশ ডেস্ক

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১১, ২০২৫, ১২:১০ এএম

সংগীত থেকে সরকার পতন

ভিনদেশ ডেস্ক

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১১, ২০২৫, ১২:১০ এএম

সংগীত থেকে সরকার পতন

২০১৫ সালের ভয়াবহ ভূমিকম্প তাঁর জীবন বদলে দেয়। ওই বিপর্যয়ে তিনি তাঁর সন্তানকে হারান। এরপরই সমাজসেবায় গভীরভাবে জড়িয়ে পড়েন। নেপালের তরুণ প্রজন্মের মধ্যে শিক্ষার প্রসার ঘটাতে কাজ শুরু করেন। ক্রমেই নেপালের ছাত্র-যুবদের কাছে জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন সুদান। ৩৬-এর এক তরুণ, সরকারবিরোধী এই আন্দোলনের প্রধান চালিকা শক্তি, নাম সুদান গুরুং। একজন যুবসমাজের নেতা, সমাজসেবক ও ডিজে।

বিক্ষোভের মুখে মঙ্গলবার পদত্যাগ করেছেন নেপালের প্রধানমন্ত্রী কে পি শর্মা অলি। কারফিউ উপেক্ষা করে সকাল থেকেই দেশটির রাজধানী কাঠমান্ডুর বিভিন্ন এলাকায় বিক্ষোভ করেন তরুণেরা। আন্দোলনের সামনের সারিতে দেখা যায় স্কুল-কলেজপড়ুয়াদের। তবে আন্দোলনে নেতৃত্ব কারা দিচ্ছেন, তা নিয়ে জল্পনা তৈরি হয়।

সুদান গুরুং ‘হামি নেপাল’ নামে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন চালান। মূলত ছাত্র-যুবকদের দ্বারা পরিচালিত এই সংগঠন দীর্ঘদিন ধরেই নেপালের প্রান্তিক অঞ্চলগুলোতে শিক্ষার প্রসারে কাজ করছে। নেপালে ‘ডিসকো জকি’ বা ‘ডিজে’ হিসেবে জনপ্রিয়তা অর্জন করেছিলেন সুদান। দ্য অন্নপূর্ণা এক্সপ্রেসের প্রতিবেদন অনুযায়ী, এই সুদান গুরুংকেই নেপালের জেন–জি আন্দোলনের মূল চালিকা শক্তি বলে মনে করা হচ্ছে। সরকারি দুর্নীতি ও স্বজনপ্রীতির বিরুদ্ধে প্রতিবাদে হাজার হাজার ছাত্রছাত্রীকে তিনিই একত্র করেছিলেন। গত সপ্তাহে ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম, লিংকডইন, ইউটিউব, হোয়াটসঅ্যাপ, এক্সসহ ২৬টি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের প্ল্যাটফর্ম ও বার্তা আদান-প্রদানের অ্যাপের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে প্রধানমন্ত্রী কে পি শর্মা অলির নেতৃত্বাধীন সরকার। প্ল্যাটফর্মগুলো বন্ধ করে দেওয়ার আগেই ইনস্টাগ্রামে একটি পোস্ট করেছিলেন সুদান গুরুং। সেখানে তিনি শিক্ষার্থীদের স্কুলের পোশাক পরে এবং বই হাতে এই মিছিলে যোগ দেওয়ার অনুরোধ করেন। যাতে এই বিক্ষোভ এক শান্তিপূর্ণ প্রতিরোধের প্রতীক হয়। তবে আন্দোলন শেষ পর্যন্ত শান্তিপূর্ণ থাকেনি। পুলিশ ও নিরাপত্তা বাহিনী বিক্ষোভকারীদের লক্ষ্য করে গুলি চালায়। এতে প্রাণ হারান ১৯ জন। আহত হন ৩০০ জনের বেশি।

সমাজসেবার পাশাপাশি সরকারি কাজে স্বচ্ছতা এবং জবাবদিহির দাবিতে আন্দোলন শুরু করেছিলেন সুদান। এ–সংক্রান্ত বেশ কয়েকটি আন্দোলনের নেতৃত্ব দেন তিনি। এর মধ্যে রয়েছে বিপি কৈরালা ইনস্টিটিউট অব হেলথ সায়েন্সেসে দুর্নীতিবিরোধী ‘ঘোপা ক্যাম্প’ আন্দোলন। এই আন্দোলন সুদানকে সারা দেশে পরিচিত মুখ করে তুলেছিল। ক্রমে হামি নেপালকে তিনি এমন এক প্ল্যাটফর্মে পরিণত করেছেন, যা জেন-জির হতাশাকে সংগঠিত, অহিংস আন্দোলনে রূপ দিয়েছে। অস্থির প্রজন্মের কণ্ঠস্বর হয়ে উঠেছেন সুদান গুরুং। কাঠমান্ডু পোস্ট বলেছে, ‘জেন-জির কাছে ডিজিটাল স্বাধীনতা হলো ব্যক্তিগত স্বাধীনতা। আর রাস্তায় থাকা হাজার হাজার মানুষের কাছে, সুদান গুরুং এখন সেই স্বাধীনতা ছিনিয়ে নেওয়ার লড়াইয়ের প্রতীক।’ ইতিমধ্যেই পদত্যাগ করেছেন নেপালের প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা ওলি।

প্রতিবাদ আন্দোলনগুলো স্ফুলিঙ্গের মাধ্যমে প্রজ্বলিত হলেও প্রায়শই জ্বালানির ‘বিশাল ভা-ার’ সামনে চলে আসে। নেপালের ক্ষেত্রে জ্বালানি, অর্থাৎ অভিযোগগুলোর মধ্যে দুর্নীতি এবং অর্থনৈতিক সুযোগের অভাব ছিল।ইন্দোনেশিয়ার রাস্তায় বিক্ষোভকারীদের ঢেউ তোলার মাত্র কয়েকদিন পর নেপালের বিক্ষোভ শুরু হয়। জাকার্তায় আইন প্রণেতাদের জন্য ৩০০০ ডলারের আবাসন ভাতা থেকে এর সূত্রপাত। সেই অস্থিরতা অবশেষে ইন্দোনেশিয়ার শাসক শ্রেণির দুর্নীতি এবং দায়মুক্তির বিরুদ্ধে একটি বৃহত্তর আন্দোলনে পরিণত হয়। এ ছাড়া গত বছরই তরুণ বিক্ষোভকারীরা বাংলাদেশজুড়ে সমাবেশ করেছিল, যার পরিণতিতে দীর্ঘদিনের নেত্রী শেখ হাসিনার ক্ষমতাচ্যুতি ঘটে। তিনটি দেশেই আন্দোলনে সামনের সারিতে ছিলেন তরুণরা- যারা অর্থনৈতিকভাবে হতাশ এবং দুর্নীতি ও অভিজাতদের সুযোগ-সুবিধার ওপর ক্ষুব্ধ। নেপালের বিক্ষোভ ‘জেন-জি প্রতিবাদ’ নামে পরিচিত হয়ে ওঠে, যার আংশিক কারণ হলো তথাকথিত ‘নেপো কিডস সমাজ’-এর সম্পদের পাহাড় ও সুযোগ-সুবিধা। নেপাল সহিংস অভ্যুত্থানের সঙ্গে অপরিচিত নয়।

রূপালী বাংলাদেশ

Link copied!