নেপালে পুনরায় বিক্ষোভ শুরু হওয়ায় স্থানীয় কর্তৃপক্ষ বেশ কয়েকটি এলাকায় কারফিউ জারি করেছে। অভিযোগ রয়েছে যে বুধবারের সংঘর্ষে অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারে পুলিশ ব্যর্থ হওয়ায় এই বিক্ষোভের সূত্রপাত। বৃহস্পতিবার (২০ নভেম্বর) কাঠমান্ডু পোস্টের খবরে বলা হয়েছে, এদিন বেলা ১১টার দিকে সিমারা চকে বিক্ষোভকারীরা জড়ো হলে পুলিশ তাদের ছত্রভঙ্গ করতে বলপ্রয়োগ করে। এরপর কর্তৃপক্ষ কারফিউ জারি করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, সিমারায় দুপুর ১২টা ৪৫ মিনিট থেকে কারফিউ জারি করা হয়েছে, যা রাত ৮টা পর্যন্ত কার্যকর থাকবে। এর আে বুধবার সংঘর্ষের ঘটনায় জেনজি বিক্ষোভকারীরা অভিযোগ করেছে যে, তাদের উল্লেখিত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তার করতে পুলিশ ব্যর্থ হয়েছে। গত ১৯ নভেম্বর ছয়জন জেনারেল জেড সমর্থক আহত হন এবং সিমারা বিমানবন্দরের কাছে সিমারা চকে সংঘর্ষের ঘটনায় দলটি ছয়জন ইউএমএল ক্যাডারের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করে। দেশের বারা জেলায় আগে থেকেই সমাবেশ নিষিদ্ধ করা হয়েছিল।
সেখানে জেনজি সদস্যরা ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা ওলির কমিউনিস্ট পার্টি অব নেপালের (সিপিএন-ইউএমএল) সমর্থকদের সঙ্গে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়েছিল। নেপালের অন্তর্বর্তী প্রধানমন্ত্রী সুশীলা কার্কি দেশজুড়ে উত্তেজনা কমাতে সব পক্ষকে সংযত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন। দক্ষিণের সিমারা শহরে বুধবার ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা ওলির সমর্থক ও তরুণদের মধ্যে সংঘর্ষের পর তিনি এই আহ্বান জানালেন। পুলিশ জানায়, বৃহস্পতিবার সিমারায় পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়েছে। বিমানবন্দরের কাছাকাছি এলাকায় দুই পক্ষের মধ্যে ধাক্কাধাক্কির ঘটনার পর প্রশাসন কারফিউ জারি করেছিল। তবে গুরুতর আহতের খবর পাওয়া যায়নি। সেপ্টেম্বরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সাময়িক নিষেধাজ্ঞার প্রতিবাদে জেনজেডের ব্যানারে ব্যাপক বিক্ষোভ শুরু হয়। ৮ ও ৯ সেপ্টেম্বরের সেই সহিংসতায় অন্তত ৭৬ জন নিহত হয়। বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে নানা জেলায়, যেখানে বহু সরকারি প্রতিষ্ঠান ও স্থাপনা পুড়িয়ে দেওয়া হয়। ওই পরিস্থিতিতে চারবারের প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা ওলি ক্ষমতাচ্যুত হন।
বুধবার সিমারায় জেনজেড ও ওলির দল সিপিএন-ইউএমএলÑ দুই পক্ষই র্যালি করে। এরপর দুই দলের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। কার্কি বলেন, অযাচিত রাজনৈতিক উসকানি থেকে বিরত থাকতে হবে। ২০২৬ সালের ৫ মার্চের নির্বাচনের আগে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার ওপর বিশ^াস রাখতে হবে। তিনি জানান, নিরাপত্তা বাহিনীকে সর্বোচ্চ সংযম ও প্রস্তুতির সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা বজায় রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি সব রাজনৈতিক দলের নেতাদের নিরাপদ চলাচল নিশ্চিত করা হবে। বুধবার তিনি ১১০টিরও বেশি দলের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করেন। সেখানে তিনি বলেন, দেশ নতুন প্রজন্মের হাতে হস্তান্তর করতে চাই। দূরদৃষ্টিসম্পন্ন নেতৃত্বই নেপালকে এগিয়ে নিতে পারে। কেপি শর্মা ওলিকে ক্ষমতাচ্যুত করার পর ৭৩ বছর বয়সি সাবেক প্রধান বিচারপতি সুশীলা কার্কিকে অন্তর্বর্তী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। তার মূল দায়িত্ব দেশটিতে সুষ্ঠুভাবে নির্বাচনের আয়োজন করা।

