নওগাঁর ধামইরহাটের বহুমাত্রিক প্রতিভার অধিকারী অদম্য এক নারী সাংবাদিক ‘শাকিলা জামান সেতু’। মফস্বলে ইদানীংকালের মেয়েরা যেখানে ঘর সংসার সামলানো, সামাজিক প্রতিবন্ধকতা পাড়ি দিতে হিমশিম খায় সেখানে শাকিলা জামান সেতু ব্যতিক্রম।
ছোটবেলা থেকে স্কুল-কলেজের কালচার অনুষ্ঠানে বেশ সরব উপস্থিতি ছিল সেতুর। ক্লাসিক নৃত্যের পাশাপাশি গান,সাজসজ্জায় জুড়ি ছিল না তার। লিখুনি আর সাবলীল বাক্য উচ্চারণেও তিনি ছিলেন বিকল্পহীন। এর কারণে সামাজিকভাবে অনেক সময় নানাবিধ কটু কথা আর সমালোচনার আঘাত তাকে বিদ্ধ করেছে বারংবার।
কিন্তু অপ্রতিরোধ্য শাকিলা জামান সেতু তাতে দমিয়ে না গিয়ে তার সৃজনশীলতার চর্চা চালিয়ে গিয়েছেন ঐকান্তিকভাবে। কখনো কখনো সামাজিক বিভিন্ন অনুষ্ঠানে সুশ্রী সেতুকে কুদৃষ্টির মোকাবিলা করতে হতে হয়েছে নানাভাবে। তাতে কী, নিজের অধ্যাবসায়ের ব্যাপারে তিনি একদম অনড় ছিলেন পোক্তভাবে।
নওগাঁ জেলার বদলগাছী উপজেলার গোবরচাঁপা গ্রামের জামাল হোসেনের মেজো মেয়ে শাকিলা জামান সেতু ২০১২ সালে ধামইরহাট নিবাসী মো. নূরুল ইসলাম হাজির কনিষ্ঠ ছেলে মিজানুর রহমানের সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হয়। সংসার জীবনে তার একটি তৃতীয় শ্রেণিপড়ুয়া মেয়ে রয়েছে।
বিবাহের পর সংসার আর সন্তান পালনের জন্য তার সৃজনশীলতায় কিছুটা ভাটা পড়লেও মনের প্রদীপ নিভিয়ে যেতে দেয়নি তিনি। মাঝেমধ্যে নিজের মেয়ের স্কুলে বিভিন্ন কালচারাল অনুষ্ঠানে শিশুদের খ-কালীন শিক্ষকের ভূমিকাও পালন করতেন তিনি।
সোশ্যাল মিডিয়ায় তার উপস্থিতি ছিল বেশ দারুণ সরব। জীবনমুখী, শিক্ষামূলক নানাবিধ লিখনি মন কাড়ে তার ফলোয়ারদের। তারই ধারাবাহিকতায় এলাকার এক লেখকের নজরে আসেন তিনি। সেই লেখকের সান্নিধ্যে নতুন করে প্রাণ ফিরে পায় সেতুর সৃজনশীলতা।
ধারাবাহিকতা হিসেবে নওগাঁ থেকে প্রকাশিত সাহিত্য পত্রিকা পুষ্প কেতনে ‘আঁধারে দীপ্ত শিখা’ শিরোনামের একটি প্রবন্ধ লিখেন তিনি, যা এরই মধ্যে পাঠকের মন জয় করেছে। এতেই থেমে নেই সেতু, লেখালেখির পাশাপাশি নাম লেখান মফস্বল সাংবাদিকতায়।
তিনি বলেন আমার লেখা, গল্প, প্রবন্ধ কিংবা সাংবাদিকতার মাধ্যমে যদি সমাজ, দেশ ও জাতি যদি সামান্য উপকৃত হয়, তবেই আমার এ সৃজনশীলতার সার্থকতা।
এর চেয়ে আরেকটা গুণ, যা শুভাকাক্সক্ষীসহ সমাজের এক শ্রেণির কাছে বেশ প্রশংসা কুড়িয়েছেন। আর তা হলো ঘরোয়া সমস্যা, পারিবারিক কলহ মেটাতে নানাবিধ পরামর্শ ও মধ্যস্থতাকারী হিসেবে সেতু মহল্লায় সবার পছন্দের শীর্ষে বলা যায়।
সাংবাদিক শাকিলা জামান সেতুর স্বামী মিজানুর রহমান বলেন, তার সহধর্মিণীর এহেন সৃজনশীল কাজে তিনি বেশ আনন্দিত। তিনি আরও বলেন তার সহধর্মিণীর এমন কাজে সর্বাত্মক সহযোগিতা করবেন। এর জন্য সব সময় তার সহযোগিতা দেওয়ার আশ্বাস দেন, যাতে কেউ ঝরে না পড়ার পাশাপাশি প্রতিভাবানরা অনুপ্রেরণা পায় আগামীর পথ চলতে।
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন