ঢাকা মঙ্গলবার, ২৬ আগস্ট, ২০২৫

চট্টগ্রাম বন্দরের ক্ষতি ১১৫ কোটি টাকা

রূপালী প্রতিবেদক
প্রকাশিত: আগস্ট ২৬, ২০২৫, ০৯:৫৮ এএম

কাস্টম, ভ্যাট ও কর বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কর্মবিরতি এবং কমপ্লিট শাটডাউনের কারণে চট্টগ্রাম বন্দরে ক্ষতি হয়েছে প্রায় ১১৫ কোটি টাকা। গত মে ও জুন মাসে ১০৭ ঘণ্টা এসব কর্মসূচি পালন করেন তারা। ১১৫ কোটি টাকার মধ্যে বন্দরের রাজস্ব ক্ষতি হয়েছে প্রায় ৮৪ কোটি টাকা এবং অর্থনৈতিক ক্ষতির পরিমাণ ৩১ কোটি টাকা। এই সময়ের ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণের লক্ষ্যে চট্টগ্রাম বন্দরের গঠিত কমিটির সাত পৃষ্ঠার একটি প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে।

চট্টগ্রাম বন্দরের ডেপুটি ট্রাফিক ম্যানেজার (অপারেশন) গোলাম মো. সারওয়ারুল ইসলামকে আহ্বায়ক করে গঠিত কমিটির সদস্যসচিব হলেন বন্দরের ট্রাফিক অফিসার (অপারেশন) মো. রোকনুজ্জামান। কমিটির অপর সদস্যরা হলেন উপপ্রধান অর্থ ও হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা কাজী মেরাজ উদ্দিন আরিফ, টার্মিনাল ম্যানেজার মো. সাইফুল আলম, ডক মাস্টার ক্যাপ্টেন আবু সুফিয়ান এবং সহকারী ট্রাফিক ম্যানেজার শাহাদাৎ হোসেন মজুমদার। এ কমিটিকে ১০ কর্মদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছিল।

এ কমিটি কাস্টমস ও ভ্যাট বিভাগের কর্মচারীদের ২৮-২৯ জুন দুই দিনে (৪৮ ঘণ্টা) কমপ্লিট শাটডাউন কর্মসূচি এবং ১৪ মে থেকে ২৬ জুন পর্যন্ত বিভিন্ন দিন বিভিন্ন মেয়াদে প্রায় ৫৯ ঘণ্টা কর্মবিরতির কারণে বন্দরের অর্থনৈতিক ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণের পাশাপাশি শিপিং এজেন্ট, অফডক এবং আমদানি-রপ্তানিকারকদের আর্থিক ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণে ছয়টি বিষয় বিবেচনায় নেয়। এগুলো হলো চট্টগ্রাম বন্দরের রাজস্ব ক্ষতির পরিমাণ, জাহাজের ওয়েটিং টাইম বেড়ে যাওয়ায় শিপিং এজেন্টদের আর্থিক ক্ষতির পরিমাণ, কাস্টমস ক্লিয়ারেন্স না হওয়ায় আমদানি করা কনটেইনার ডেলিভারি নিতে না পারায় আমদানিকারকদের আর্থিক ক্ষতির পরিমাণ, কাস্টমস ক্লিয়ারেন্স না হওয়ায় রপ্তানি কনটেইনার জাহাজীকরণ করতে না পারায় রপ্তানিকারকদের আর্থিক ক্ষতির পরিমাণ, চট্টগ্রাম বন্দরের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কর্মঘণ্টা ক্ষতির জন্য বন্দরের আর্থিক ক্ষতির পরিমাণ, জবা অফডকগুলোর আমদানি-রপ্তানি বিলম্বজনিত আর্থিক ক্ষতির পরিমাণ। এসব বিষয় বিবেচনা করে কমিটি ১৯ আগস্ট চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের পরিচালক (ট্রাফিক) বরাবর ৭ পৃষ্ঠার মূল প্রতিবেদন জমা দেয়।

অবশিষ্ট আন্দোলনের সময়কাল, অর্থাৎ ৫৯ ঘণ্টা কর্মসূচির কারণে বন্দরের রাজস্ব ক্ষতি হয়েছে ৩৯ কোটি ৩১ লাখ ১৬ হাজার ৬৬৭ টাকা। সুতরাং ২৮ ও ২৯ জুন দুই দিনে কমপ্লিট শাটডাউন কর্মসূচি এবং ১৪ মে থেকে ২৬ জুন পর্যন্ত বিভিন্ন দিনে বিভিন্ন মেয়াদে প্রায় ৫৯ ঘণ্টা কর্মবিরতির কারণে চট্টগ্রাম বন্দরের মোট আনুমানিক রাজস্ব ক্ষতি হয়েছে ৭১ কোটি ২৯ লাখ ৪০ হাজার ৪৩৩ টাকা। একইভাবে এই সময়ে চট্টগ্রাম বন্দরের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কর্মঘণ্টা ক্ষতির জন্য বন্দরের আর্থিক ক্ষতির পরিমাণ হলো ১ কোটি ৫৪ লাখ ৯৬ হাজার ৭৫৫ টাকা।

চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সচিব ও মুখপাত্র মো. ওমর ফারুক বলেন, গত মে ও জুন মাসে কাস্টমস, ভ্যাট ও কর বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কর্মবিরতি এবং কমপ্লিট শাটডাউনের কারণে চট্টগ্রাম বন্দরের রাজস্ব ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণের লক্ষ্যে গঠিত কমিটি একটি প্রতিবেদন জমা দিয়েছে। পরবর্তী বিষয়ে সরকার কিংবা অর্থ মন্ত্রণালয় সিদ্ধান্ত নেবে।