ঢাকা বুধবার, ১৯ নভেম্বর, ২০২৫

ছয় পণ্যের আমদানি বেড়েছে

রূপালী প্রতিবেদক
প্রকাশিত: নভেম্বর ১৯, ২০২৫, ০৩:০৬ এএম

সয়াবিন তেল, চিনি, মসুর ডাল, ছোলা, মটর ডাল ও খেজুরের চাহিদা রমজানে বেশি থাকে। এ জন্য বেশি পরিমাণে আমদানি করতে চলতি বছরের সেপ্টেম্বর ও অক্টোবরে ঋণপত্র (এলসি) খোলা অনেকটাই বেড়েছে। তথ্য বলছে, এ সময় গত বছরের একই সময়ের তুলনায় সয়াবিন তেল আমদানি ৩৬ শতাংশ, চিনি ১১ শতাংশ, মসুর ডাল ৮৭ শতাংশ, ছোলা ২৭ শতাংশ, মটর ডাল ২৯৪ শতাংশ ও খেজুর আমদানি ২৩১ শতাংশ বেড়েছে। চাঁদ দেখা সাপেক্ষে ২০২৬ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি থেকে রমজান মাস শুরু হতে পারে। মেঘনা গ্রুপ, সিটি গ্রুপ, স্কয়ার গ্রুপ, এডিবল অয়েল লিমিটেড, বসুন্ধরা গ্রুপ ও টিকে গ্রুপের মতো বড় প্রতিষ্ঠানগুলো ভোজ্যতেল ও চিনির প্রধান আমদানিকারক। অন্যদিকে পেঁয়াজ, রসুন, আদা, ডাল ও ছোলাজাতীয় পণ্য আমদানি করে বেসরকারি ব্যবসায়ী, বিনিয়োগকারী ও অন্যান্য বড় বাণিজ্যিক গ্রুপগুলো। কারণ দেশীয় উৎপাদন চাহিদার মাত্র ২০-৩০ শতাংশ মেটায়। 

একটি শীর্ষ ব্যাবসায়িক গ্রুপের একজন ঊর্ধতন কর্মকর্তা বলেন, আসন্ন রমজানের জন্য কেনাকাটা অনেকটাই হয়ে গেছে। তিনি বলেন, রমজানে তেল ও চিনির চাহিদা সব সময় বেশি থাকে। তাই শীর্ষ গ্রুপগুলো সেপ্টেম্বর-অক্টোবরÑ এ দুই মাসেই তেল ও চিনির এলসি খোলাও বাড়িয়েছে। তা ছাড়া আগে থেকেই রমজানের প্রয়োজনীয় ভোগ্যপণ্য প্রচুর পরিমাণে কেনা হয়েছে। ওই কর্মকর্তা আরও বলেন, এই ধারা নভেম্বর-ডিসেম্বরেও থাকবে বলে আশা করা হচ্ছে। বেশির ভাগ পণ্য আগে আনা হলেও অবশিষ্ট যা বাকি রয়েছে, তা রোজা শুরু হওয়ার এক মাস আগপর্যন্ত আসতে থাকবে। তবে সেপ্টেম্বরেই রমজানের জন্য প্রয়োজনীয় ভোগ্যপণ্যের এলসি খোলা হয়েছে বেশি।

একটি বেসরকারি ব্যাংকের ট্রেজারি-প্রধান নিশ্চিত করেন, সেপ্টেম্বর ও অক্টোবরে মূলত রমজানের প্রস্তুতিকে কেন্দ্র করেই এলসি খোলার হার বেড়েছে। তিনি বলেন, এ সময় তেল, চিনি, খেজুর থেকে শুরু করে রমজানে যেসব পণ্য বেশি দরকার হয়, সেগুলোর আমদানি এলসি খোলা বেড়েছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, সেপ্টেম্বরে মোট ৬ দশমিক ২৯ বিলিয়ন ও অক্টোবরে ৫ দশমিক ৬৪ বিলিয়ন ডলারের এলসি খোলা হয়েছে। এ বছরের সেপ্টেম্বর-অক্টোবরে ৪ লাখ ৯৪ হাজার ৮৬৫ টন সয়াবিন তেল আমদানির জন্য এলসি খোলা হয়েছে, যা গত বছরের একই সময়ে ছিল ৩ লাখ ৬১ হাজার ৫৬৪ টন। চলতি বছরের সেপ্টেম্বর-অক্টোবরে ২ লাখ ৯২ হাজার ৫৭২ টনের চিনি আমদানির জন্য এলসি খোলা হয়েছে, যা গত বছরের একই সময়ে ছিল ২ লাখ ৬৪ হাজার ৪৪৬ টন। অন্যান্য নিত্যপণ্যের আমদানিও উল্লেখযোগ্য পরিমাণে বেড়েছে। চলতি বছরের সেপ্টেম্বর-অক্টোবরে ডাল আমদানির জন্য এলসি খোলা হয়েছে ৫০ হাজার ৩৫৫ টনের, যা গত বছরের একই সময়ে ছিল ২৬ হাজার ৯১২ টন। ছোলার এলসি ৪২ হাজার ৮৯১ টন থেকে বেড়ে ৫৪ হাজার ৫১৬ টনে দাঁড়িয়েছে।

চলতি বছর এ দুই মাসে ১০ হাজার ১৬৫ টন খেজুরের এলসি খোলা হয়েছে, যা আগের একই সময়ে ছিল ৩ হাজার ৬৩ টন। চলতি বছর ১ লাখ ৬৪ হাজার ৮১০ টন মটর আমদানির এলসি খোলা হয়েছে, যা আগের বছর একই সময়ে ছিল ৪১ হাজার ৮১৫ টন।

একটি শীর্ষস্থানীয় গ্রুপের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, ব্যাংকগুলোতে ডলারের সংকট না থাকায় এই প্রবৃদ্ধি সম্ভব হয়েছে। তিনি বলেন, ২০২২ সালের মাঝামাঝি সময় থেকে দেশে একধরনের ডলারের সংকট দেখা দেয়। ফলে আমদানি সীমিত হয়ে গিয়েছিল। তবে সেই সমস্যা এখন সমাধান হয়েছে। তা ছাড়া এলসি খোলার ক্ষেত্রে শতভাগ মার্জিন রাখারও বাধ্যবাধকতা নেই।