ঢাকা বৃহস্পতিবার, ০৭ আগস্ট, ২০২৫

জয়পুরহাটে বস্তায় ভরে পুড়িয়ে হত্যা

আক্কেলপুর (জয়পুরহাট) প্রতিনিধি
প্রকাশিত: আগস্ট ৭, ২০২৫, ০১:২৮ এএম

জয়পুরহাটের আক্কেলপুরে একটি কলাবাগানে বস্তাবন্দি অবস্থায় পুড়িয়ে হত্যা করা হয়েছে ছামছুর আলী খলিফা (৬০) নামের এক ব্যক্তিকে। পারিবারিক কলহে তাকে হত্যা করে মরদেহ পুড়িয়ে গুমের চেষ্টা করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

নিহত ছামছুর আলী নওগাঁ সদর উপজেলার শৈলগাছী উত্তরপাড়া গ্রামের বাসিন্দা। গতকাল বুধবার সকাল ১০টার দিকে তার মরদেহ জয়পুরহাট জেনারেল হাসপাতালে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠায় পুলিশ। এর আগে গত মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে আক্কেলপুর উপজেলার তিলকপুর ইউনিয়নের কাদোয়া বটতলী এলাকার একটি কলাবাগানে তার দগ্ধ মরদেহ পাওয়া যায়।

ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন, স্থানীয় বাসিন্দা মো. আসাদুজ্জামান। তিনি জানান, ‘বিকাশ এসে জানায়, বাগানে আগুন দিয়েছে কেউ। আগুনের মধ্যে একজন মানুষ পুড়ছে। আমরা গিয়ে দেখি বস্তার ভেতর আগুনে পুড়ছে মানুষটা। পানি দিয়ে আগুন নিভাই।’

পুলিশ জানায়, কলাবাগানটি স্থানীয় বিকাশ চন্দ্র দেবনাথ লিজ নিয়ে পরিচালনা করেন। পাশেই তার একটি মাছের পুকুর রয়েছে। বিকাশ জানান, রাত ৮টার দিকে মাছের খাবার দিতে গিয়ে দেখি কলাবাগানে আগুন। কাছে গিয়ে দেখি কয়েকটি বস্তা আর পাতার মধ্যে একজন মানুষ দাউ দাউ করে পুড়ছে।
নিহতের ছোট ভাই মুজাহিদ খলিফা আক্কেলপুর থানায় একটি হত্যা মামলা করেছেন। মামলায় ছামছুর আলীর স্ত্রী রাশেদা বেগম ও ছেলে রাসেল খলিফার নাম উল্লেখ করে আরও ২-৩ জন অজ্ঞাতনামার বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে।

মামলার এজাহারে বলা হয়, দীর্ঘদিন ধরে পারিবারিক কলহে ছামছুর আলী তার স্ত্রী ও ছেলের নির্যাতনের শিকার ছিলেন। গত ১২ জুলাই তাকে লাঠিপেটা করে গুরুতর আহত করা হয়। পরে স্থানীয়দের সহযোগিতায় তাকে নওগাঁ সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয় এবং থানায় অভিযোগ করেন তিনি। ওই ঘটনার পর থেকে পরিবারে উত্তেজনা আরও বাড়ে।

স্থানীয়রা জানান, ছামছুর আলীর স্ত্রী ১৫ দিন আগে ছেলে রাসেলের নির্দেশে ছাগল নিয়ে বাপের বাড়ি চলে যান। ঘটনার দিন বেলা ১১টার পর থেকে ছামছুর আলীকে আর গ্রামে দেখা যায়নি।

প্রত্যক্ষদর্শী আরও কয়েকজন জানান, ওই রাতেই কলাবাগানের পাশে সবুজ রঙের একটি অটোরিকশা ও মোটরসাইকেল দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়। সড়কটি অপরাধপ্রবণ হওয়ায় তারা দ্রুত স্থান ত্যাগ করেন। ঘটনার পর থেকে অভিযুক্ত রাসেল খলিফা ও রাশেদা বেগম পলাতক।

জয়পুরহাটের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) মো. জিন্নাহ আল মামুন জানান, ‘মরদেহের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়েছে। আমরা ঘটনাটি গুরুত্বসহকারে তদন্ত করছি। এরই মধ্যে মামলা নেওয়া হয়েছে। দ্রুত জড়িতদের গ্রেপ্তার করা হবে।’