মঙ্গলবার, ২৬ আগস্ট, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


রূপালী প্রতিবেদক ও কক্সবাজার প্রতিনিধি

প্রকাশিত: আগস্ট ২৬, ২০২৫, ০৬:৫৪ এএম

১১ দেশের যৌথ বিবৃতি রোহিঙ্গাসংকট সমাধানে  বাংলাদেশের পাশে  থাকার প্রতিশ্রুতি

রূপালী প্রতিবেদক ও কক্সবাজার প্রতিনিধি

প্রকাশিত: আগস্ট ২৬, ২০২৫, ০৬:৫৪ এএম

১১ দেশের যৌথ বিবৃতি রোহিঙ্গাসংকট সমাধানে  বাংলাদেশের পাশে  থাকার প্রতিশ্রুতি

রোহিঙ্গা সংকট জটিল হওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে মিয়ানমারের পরিস্থিতি ও বাংলাদেশের চলমান মানবিক সংকটের প্রতি দৃষ্টি নিবদ্ধ রাখতে সরকারের সঙ্গে কাজ করে যাবে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়। বিশেষ করে আগামী মাসে নিউইয়র্কে অনুষ্ঠেয় উচ্চপর্যায়ের সম্মেলন সামনে রেখে বাংলাদেশ ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় একসঙ্গে কাজ করবে। মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্য থেকে বাংলাদেশে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশের আট বছর পূর্তিতে পশ্চিমা বিশ্বের ১১টি দেশ বাংলাদেশের পাশে থাকার অঙ্গীকার করেছে। অস্ট্রেলিয়া, ইতালি, যুক্তরাজ্য, কানাডা, নেদারল্যান্ডস, নরওয়ে, ডেনমার্ক, সুইডেন, ফ্রান্স, সুইজারল্যান্ড ও ফিনল্যান্ড এক যৌথ বিবৃতিতে এই প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।

গতকাল সোমবার সকালে ঢাকায় ফ্রান্স দূতাবাস তাদের এক্স হ্যান্ডেল এবং ফেসবুক পেইজে যৌথ বিবৃতি দিয়েছে। ১১ দেশের যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়েছে, আট বছর পেরোনোর পর আমরা মিয়ানমার সামরিক বাহিনীর সেই কর্মকা- স্মরণ করছি, ফলে বিপুলসংখ্যক রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে বাস্তুচ্যুত হতে হয়েছিল। বর্তমানে ১১ লাখের বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশে রয়েছে। এখনো আশ্রয়শিবিরে থাকতে নতুন করে লোকজন আসছে। বিবৃতিতে বলা হয়, আমরা রোহিঙ্গাদের দৃঢ়তা ও সহনশীলতাকে সাধুবাদ জানাই, যারা দীর্ঘদিন ধরে কঠিন বাস্তবতা ও বাস্তুচ্যুতি সহ্য করে চলেছেন। বিশেষ করে রাখাইন রাজ্যের বর্তমান অবনতিশীল নিরাপত্তা ও মানবিক পরিস্থিতির মধ্যেও দৃঢ়তা দেখিয়ে চলেছেন তারা।

১১টি দেশের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘আমরা বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার এবং সাধারণ মানুষের প্রতি গভীর কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি, যারা রোহিঙ্গাদের, বিশেষ করে নতুন করে আসা লোকদেরও আশ্রয় ও নিরাপত্তা দিয়ে চলেছেন এবং জীবন রক্ষাকারী মানবিক সহায়তা দিয়ে যাচ্ছেন।’ বাংলাদেশে অবস্থানরত রোহিঙ্গা শরণার্থীরা তাদের নিজ ভূমিতে ফিরে যেতে চায় উল্লেখ করে বিবৃবিতে বলা হয়েছে, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় প্রত্যাবাসনের সম্ভাব্য পথ খুঁজে বের করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। তবে এখনো সীমান্ত পেরিয়ে বাস্তুচ্যুতি অব্যাহত রয়েছে। অনেক রোহিঙ্গা রাখাইনে অভ্যন্তরীণভাবে বাস্তুচ্যুত অবস্থায় আছে। মিয়ানমারে এখন এমন পরিস্থিতি বিরাজ করছে না, যাতে রোহিঙ্গারা স্বেচ্ছায়, নিরাপদে, সম্মানের সঙ্গে ও স্থায়ীভাবে ফিরে যেতে পারে।

যৌথ বিবৃতিতে ১১টি দেশ বলেছে, ‘এই শর্ত পূরণ করতে হলে বাস্তুচ্যুতির মূল কারণগুলোর সমাধান প্রয়োজন, যার জন্য একটি শান্তিপূর্ণ ও স্থিতিশীল মিয়ানমার আবশ্যক। তাই আমরা স্বীকার করছি, এখনই রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনের জন্য নির্দিষ্ট সময়সীমা নির্ধারণ করা সম্ভব নয়। তাই সব পক্ষের প্রতি একটি প্রত্যাবাসনের সহায়ক পরিবেশ সৃষ্টির জন্য জরুরি ভিত্তিতে উদ্যোগ গ্রহণের অনুরোধ জানাচ্ছি।’

বিবৃতিতে ১১টি দেশ বলেছে, ‘আমরা মিয়ানমার সামরিক বাহিনী ও অন্যান্য সশস্ত্র গোষ্ঠীর সংঘটিত সহিংসতা ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনাগুলোর তীব্র নিন্দা জানাই। সহিংসতা বন্ধ এবং মানবিক সহায়তা অবাধে প্রবেশের সুযোগ সৃষ্টির জন্য আবারও আহ্বান জানাচ্ছি। আমরা অন্যায়ভাবে আটক ব্যক্তিদের মুক্তির দাবিও পুনর্ব্যক্ত করছি। আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইন ও অন্যান্য গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনায় জবাবদিহি নিশ্চিত করার লক্ষ্যে আন্তর্জাতিক প্রচেষ্টাকে সমর্থন দিতে আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’

যৌথ বিবৃতি দেওয়া দেশগুলো বলেছে, ‘আমরা আত্মনির্ভরশীলতা বাড়ানোর মাধ্যমে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জন্য আরও স্থায়ী সমাধানের পক্ষে। বিশেষ করে যখন রোহিঙ্গাসংকট মোকাবিলায় মানবিক সহায়তার তহবিল কমে আসছে, তেমন পরিস্থিতিতে তাদের ভবিষ্যৎ প্রত্যাবাসনের জন্য প্রস্তুতি নেওয়ার কথাও বলছি। আমরা কক্সবাজারের স্থানীয় বাংলাদেশি জনগোষ্ঠীকেও সমর্থন দিয়ে যাব, যারা উদারভাবে শরণার্থীদের আতিথেয়তা জানাচ্ছেন।’

বিবৃতিতে দেশগুলো বলেছে, ‘আমরা রোহিঙ্গাদের অর্থবহ অংশগ্রহণ ও অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করার গুরুত্ব তুলে ধরছি, যাতে তারা সিদ্ধান্ত গ্রহণে ক্ষমতাবান হতে পারে এবং বাংলাদেশে অবস্থানকালে নিরাপদ, সম্মানজনক ও গঠনমূলক জীবনযাপন করতে পারে। আট বছর পর আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় দীর্ঘমেয়াদি ও স্থায়ী সমাধান খুঁজে বের করতে এখনো রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী ও বাংলাদেশের পাশে অটলভাবে দাঁড়িয়ে আছে। আমরা এই সংকটের মূল কারণগুলো সমাধানে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’

রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেওয়ায় বাংলাদেশের প্রশংসা করে যুক্তরাষ্ট্রের বিবৃতি: মিয়ানমার থেকে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেওয়ার জন্য বাংলাদেশের প্রশংসা করেছে যুক্তরাষ্ট্র। এ ছাড়া মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা শরণার্থীদের আশ্রয় দেওয়া এই অঞ্চলের অন্য দেশগুলোকেও কৃতজ্ঞতা জানিয়েছে ওয়াশিংটন। স্থানীয় সময় রোববার যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের প্রিন্সিপাল ডেপুটি মুখপাত্র টমাস টমি পিগট এক বিবৃতিতে এ কথা জানান। বিবৃতিতে বলা হয়, ‘যুক্তরাষ্ট্র মিয়ানমারের জনগণের প্রতি সমর্থন জানায়, বিশেষ করে সহিংসতা ও বাস্তুচ্যুতির শিকার রোহিঙ্গা ও অন্যান্য জাতিগত গোষ্ঠীর প্রতি।’ বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘আমরা বাংলাদেশ সরকারকে রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেওয়া অব্যাহত রাখার জন্য প্রশংসা করছি, পাশাপাশি মিয়ানমার থেকে আসা শরণার্থীদের আশ্রয় দেওয়ার জন্য আঞ্চলিক অন্যান্য দেশকেও ধন্যবাদ জানাচ্ছি।’

গতকাল সোমবার মিয়ানমার থেকে রোহিঙ্গাদের গণনির্বাসনের আট বছর পূর্ণ হয়। এখনো ১ মিলিয়নেরও বেশি জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত মানুষ বাংলাদেশের ক্যাম্পগুলোতে রয়েছে। ২০১৭ সাল থেকে পুনর্বাসনের একাধিক প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে, আর রাখাইনে আরাকান আর্মির (এএ) ক্রমবর্ধমান নিয়ন্ত্রণ বাংলাদেশকে নতুন জটিলতার মুখে ফেলেছে।
 

রূপালী বাংলাদেশ

Link copied!