নানা চড়াই-উতরাই পেরিয়ে বাংলাদেশের রাজনীতিতে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলÑবিএনপির যাত্রা প্রায় অর্ধশতক ছুঁইছুঁই। আজ ১ সেপ্টেম্বর, দলটির ৪৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী। এ উপলক্ষে দলের প্রধানের সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন, আলোচনা সভা, শোভাযাত্রাসহ বিভিন্ন কর্মসূচি নিয়েছে বিএনপি। প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান ১৯৭৮ সালের এই দিনে গঠন করেন বিএনপি। বাম, ডান, মধ্যপন্থার সঙ্গে ছিল তারুণ্যনির্ভরতা। লাখো কর্মীর ঠিকানা হয়ে উঠেছিল নতুন দলটি। বাকশাল থেকে মুক্তি পেয়ে দেশে ফের শুরু হয় বহুদলীয় গণতন্ত্রের অভিযাত্রা। জিয়াউর রহমানের হাতে জন্ম নেওয়া দলটি এখন তার ছেলে তারেক রহমানের নেতৃত্বে। এই দীর্ঘ সময়ে বিএনপি কখনো রাষ্ট্রক্ষমতায়, কখনো বিরোধী দলে, আবার কখনো রাজনৈতিক সংকটে পার করেছে। দলটির এই পথচলা মূলত তিন নেতৃত্বের হাত ধরেÑ জিয়া, খালেদা ও তারেক রহমান।
১৯৭৭ সালে জিয়াউর রহমান রাষ্ট্রপতি পদে নির্বাচন করতে গঠন করেন জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক দল- জাগদল। পরের বছর জাগদলের বিলুপ্তির মধ্য দিয়ে শুরু হয় বিএনপির যাত্রা। দলের আহ্বায়ক কমিটির চেয়ারম্যান হন জিয়াউর রহমান আর মহাসচিব ডা. এ কিউ এম বদরুদ্দোজা চৌধুরী। পরের বছর দ্বিতীয় সংসদ নির্বাচনে ২৯৮টি আসনের মধ্যে ২০৭টিতে জিতে সরকার গঠন করে বিএনপি।
সত্তরের দশকের রাজনৈতিক অস্থিরতায় দাঁড়িয়ে বহুদলীয় গণতন্ত্রের ধারণা দেন তৎকালীন রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান। তার সেই উদ্যোগ থেকেই বিএনপির জন্ম। জিয়ার টিম ছিল বৈচিত্র্যময়Ñ সামরিক কর্মকর্তা, মুক্তিযোদ্ধা, আমলা ও বিভিন্ন মতাদর্শের রাজনীতিবিদ মিলে গড়ে ওঠে দল। বাস্তববাদী ও ফলাফলমুখী নেতৃত্ব ছিল তার মূল বৈশিষ্ট্য।
রাজনৈতিক বিশ্লেষক ড. মাহবুব উল্লাহ রূপালী বাংলাদেশকে বলেন, জিয়াউর রহমান সামরিক ব্যক্তিত্ব হলেও বেসামরিক প্রশাসন ও গণতন্ত্রের জন্য উদগ্রীব ছিলেন। সামরিক শাসকদের যে সাধারণ চরিত্র তার সঙ্গে যায় না। তিনি বুঝতে পেরেছিলেন, বাংলাদেশের মানুষ গণতন্ত্রের জন্য আকাক্সক্ষা পোষণ করে। সেই কারণে তিনি বিএনপি গঠন করেন। এই দলের মাধ্যমে সারা দেশের মানুষের সাথে অকৃত্রিম বন্ধুত্ব গড়ে তোলেন। ফলে তাকে হত্যার পর জানাজায় ১০ লাখ লোক হয়। তিনি কতটা জনপ্রিয় হয়ে উঠেছিলেন, তার বিদায়ে মানুষের চোখের জল তার প্রমাণ দেয়।
মহান মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসের পাতায় সোনার হরফে লেখা হয় মেজর জিয়াউর রহমানের নাম। ১৯৭৫-এর নভেম্বর মাসের শুরুতে যে অনিশ্চয়তা, শঙ্কা ঘিরে ধরেছিল দেশকে, তার অবসান হয় ৭ই নভেম্বর। রেডিওতে যখন জিয়াউর রহমানের মুক্তির খবর প্রচার হতে থাকে, বাড়তে থাকে তার জনপ্রিয়তা। পাদপ্রদীপের আলোয় চলে আসেন তিনি। অখ-তা রক্ষায় দৃঢ়প্রতিজ্ঞ জিয়াউর রহমান বহুদলীয় রাজনীতি, অর্থনীতি, কৃষি, শিক্ষা, সংস্কৃতি, ক্রীড়া, জাতীয়তাবোধÑ সব কিছুতেই একটা বিপ্লব ঘটিয়েছেন। স্বল্প সময়ে বাংলাদেশকে বদলে দিতে মানুষের মন জয় করতে পেরেছিলেন তিনি।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর রূপালী বাংলাদেশকে বলেন, ’৭৫-পরবর্তী সময়ে নতুন করে বাংলাদেশে ১৯ দফা, বহুদলীয় গণতন্ত্র জাতীয়তাবাদী দর্শনের কারণে মানুষের কাছে দ্রুত জনপ্রিয় হয়, জিয়াউর রহমানের সঙ্গে বিএনপিও জনপ্রিয় হয়। স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব অক্ষুণœ থাকুক, এমনটাই চেয়েছিল দেশের মানুষ। মানুষ মনে করেছিল, বিএনপির মাধ্যমে তারা সেটা পাবে।
১৯৮১ সালের ৩০ মে চট্টগ্রামে এক ব্যর্থ সামরিক অভ্যুত্থানে জিয়াউর রহমান নিহত হন। এরপর নানা ঘটনার মধ্য দিয়ে ১৯৮৩ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি বিএনপির হাল ধরেন তারই সহধর্মিণী খালেদা জিয়া। খালেদা জিয়ার হাত ধরে ফের আন্দোলন ও ক্ষমতার রাজনীতিতে প্রবেশ করে বিএনপি। এরশাদবিরোধী শ্বৈরাচার পতন আন্দোলনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে বাজিমাত করেন রাজনীতির দাবার চালে। ১৯৮১ সালে খালেদা জিয়া বিএনপির চেয়ারপারসন হন। ’৮০ ও ’৯০-এর দশকে তিনি হয়ে ওঠেন সামরিক শাসনবিরোধী আন্দোলনের প্রধান প্রতীক। ১৯৯১ সালে তার নেতৃত্বে বিএনপি ক্ষমতায় আসে এবং দেশে সংসদীয় গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা করে। ২০০১ সালে আবারও সরকার গঠন করে দল। তার নেতৃত্বের বৈশিষ্ট্য ছিলÑ আপোসহীনতা ও মাঠনির্ভর রাজনীতি। তবে সমালোচকেরা বলেন, তার টিম বাছাই ছিল আনুগত্যকেন্দ্রিক; ফলে অনেক যোগ্য নেতা সাইডলাইনে চলে যান। দেশের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী হয়ে নারীর ক্ষমতায়ন, নিরক্ষরতা দূরীকরণসহ খালেদা জিয়ার সাফল্যে ঈর্ষান্বিত হয় বিরোধীশিবির। অন্যায়ের সঙ্গে আপোস না করায় তিনবারের প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে দিতে হয়েছে চড়া মূল্য। সাজানো মামলায় যেতে হয়েছে জেলে, সুস্থভাবে কারাগারে গেলেও হুইলচেয়ারে করে বের হয়েছেন কারাগার থেকে। স্বৈরাচার এরশাদের পতন ঘটানোর পর খালেদা জিয়াকে দেড় যুগ লড়াই করতে হয়েছে ফ্যাসিবাদী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে। ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি খালেদা জিয়াকে গ্রেপ্তার করে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় কারাদ- দেওয়া হয়। দুই বছরের বেশি সময় জেল খাটেন।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর রূপালী বাংলাদেশকে বলেন, স্বৈরাচার এরশাদের বিরুদ্ধে খালেদা জিয়ার ৯ বছরের যে সংগ্রাম, তা গ্রামে-গঞ্জে তরুণদের মধ্যে দারুণভাবে জাগরণ সৃষ্টি করে। ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর বিএনপি এবং রাষ্ট্রকে ধ্বংস করার নেশায় এমন কোনো কাজ নেই, যেটা করেনি। আওয়ামী লীগের এমন আগ্রাসী আচরণ মানুষ ভালোভাবে নেয়নি। আদালতে ন্যায়বিচার পায়নি মানুষ, কথা বলতে পারেনি মন খুলে। ৫ আগস্টের আগ পর্যন্ত লড়াই করে গেছি। এ কারণেই মানুষ বিএনপিকে এত ভালোবাসে। আমি বৃদ্ধ মানুষ, ১১ বার জেলে গেছি। আমাদের চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে জেলে যেতে হয়েছে। আগামী দিনে যদি মানুষ ভোট দিতে পারে, ধানের শীষে ভোট দেবে। আমরা চাই একটা অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন হোক। দলীয়করণ করে জাতীয় ও স্থানীয় নির্বাচন ধ্বংস করে দিয়েছিল আওয়ামী লীগ। ছাত্ররা ১ মাসের বেশি লড়াই করেছে। আর পুরো সময়টা বিএনপি লড়াই করেছে ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষক ড. মাহবুব উল্লাহ রূপালী বাংলাদেশকে বলেন, খালেদা জিয়ার দৃঢ়তা ও আপোসহীনতায় এরশাদ সরকারের পতন হয়। বিএনপি ক্রমাগত নিপীড়নের মধ্য দিয়ে পার হয়েছে। এত কিছুর পরও দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌসত্ব অটুট রাখতে আপ্রাণ চেষ্টা করেছে বিএনপি। বিএনপির বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র থেমে নেই, এখনো চলছে। বিএনপিকে পরিকল্পিতভাবে ধ্বংস করার নানা আয়োজন হয়েছে। কত নির্যাতন, গুম, খুন হয়েছে, তা বলে শেষ করা যাবে না। ভারতে বসে বিএনপির বিরুদ্ধে এখনো ষড়যন্ত্র করছে আওয়ামী লীগ। এত কিছুর পরও বিএনপি কিন্তু টিকে আছে, জনগণের মধ্যে তাদের মতাদর্শের কারণে। বরং বিএনপিকে ধ্বংস করতে গিয়ে হারিয়ে গেছে আওয়ামী লীগ।
২০০৭ সালের পর থেকে বিএনপির নিয়ন্ত্রণ কার্যত চলে যায় তারেক রহমানের হাতে। বর্তমানে তিনি লন্ডনে থাকলেও দলের সব বড় সিদ্ধান্ত তার অনুমোদনসাপেক্ষে হয়। ২০১৮ সালে খালেদা জিয়াকে সাজানো মামলায় কারাগারে পাঠায় তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার। তখন থেকেই বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করছেন তারেক রহমান। খুব শীঘ্রই তার দেশে ফেরার কথা রয়েছে ফেরারি জীবন ছেড়ে।
তার নির্বাচিত টিম মূলত অভিজ্ঞতা ও কৌশলনির্ভরÑ মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, রুহুল কবির রিজভীর মতো নেতারা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছেন। তবে তার অনুপস্থিতি ও দূর থেকে নিয়ন্ত্রণ দলের জন্য একদিকে কৌশলগত শক্তি তৈরি করেছে, অন্যদিকে মাঠের আন্দোলনে দুর্বলতা স্পষ্ট করেছে বলে মনে করেন বিশ্লেষকরা। রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা মনে করেন, বিএনপি প্রতিটি প্রজন্মে নতুন রূপ পেলেও আজকের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হলো তরুণ প্রজন্মকে দলে সম্পৃক্ত করা এবং দীর্ঘদিনের ক্ষমতাবিচ্ছিন্নতা কাটিয়ে ওঠা। প্রায় ৪৭ বছরের পথচলায় বিএনপি যেমন রাষ্ট্রক্ষমতার অভিজ্ঞতা অর্জন করেছে, তেমনি বিরোধী রাজনীতিরও দীর্ঘ অধ্যায় রচনা করেছে। প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের হাতে জন্ম নেওয়া দলটি কি তার ছেলে তারেক রহমানের নেতৃত্বে আবারও দেশের প্রধান রাজনৈতিক শক্তি হয়ে উঠতে পারবেÑ প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর এই সময়ে বিএনপির ভেতর-বাইরে এখন সেই প্রশ্নই সবচেয়ে বড়।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য বেগম সেলিমা রহমান রূপালী বাংলাদেশকে বলেন, শহিদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান সময়ের প্রয়োজনে, দেশের প্রয়োজনে দল গঠন করেছেন। তার ধারাবাহিকতায় সময়ের প্রয়োজনে দেশের প্রয়োজনে বেগম খালেদা জিয়া কিছু পরিবর্তন করেছেন, ভিশন-২০৩০ ঘোষণা করেছেন এবং তারপর তারেক রহমান ৩১ দফা দিয়েছেন। আমাদের ধারা একই রয়েছে; কিন্তু সময়ের প্রয়োজনে সেটা ভিন্ন হয়েছে। বিএনপির ভবিষ্যৎ চ্যালেঞ্জ সম্পর্কে তিনি বলেন, বিএনপি যদি সরকার গঠন করতে পাওে, তাহলে বাংলাদেশকে এগিয়ে নেওয়ার জন্য ৩১ দফা রয়েছে, সেটা বাস্তবায়ন করতে হবে। আমাদের সমাজের মানুষের নৈতিক চরিত্র নষ্ট হয়ে গেছে, ৩১ দফা বাস্তবায়নের মাধ্যমে নৈতিক চরিত্র ফিরিয়ে নেওয়া আমাদের চ্যালেঞ্জ।
তৃতীয় প্রজন্মের রাজনীতি প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল বলেন, ভবিষ্যৎ তো তরুণদের হাতে। আমরা তরুণদের যুক্ত করছি। আমরা সবার সম্মতিক্রমে তারেক রহমানের নেতৃত্বকে সানন্দে গ্রহণ করেছি এবং তাকে নিয়ে সামনে এগিয়ে যেতে চাই। এবারের নির্বাচন মানুষ আমাদের ভোট দিলে, আমরা সরকার গঠন করলে তারেক রহমান হবেন আগামীর প্রধানমন্ত্রী। আমাদের চেয়ারপারসন বেশ অসুস্থ, আমাদের বয়স হয়েছে, চাইলেই আমরা রাজপথে নামতে পারব না। এই নির্বাচনে সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া এবং বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান অংশ নেবেন। ‘আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি জয়ী হলে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানই হবেন দেশের প্রধানমন্ত্রী।’ এত কিছুর পরও আগামী নির্বাচন সামনে রেখে রাজনীতির আকাশে যে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে, তা থেকে কি মুক্তি মিলবে সাহসাইÑ এমন প্রশ্ন এখন সামনে।
জনগণের আস্থা ও বিশ্বাস অক্ষুণœ রাখবে বিএনপি: তারেক রহমান
এদিকে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, জনগণের আস্থা ও বিশ্বাস অক্ষুণœ রেখে, দেশমাতৃকার সেবায় নিজেদের নিবেদন করে বিএনপি আগামী দিনগুলোতেও বলিষ্ঠ ভূমিকা রাখবে। আজ ১ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) ৪৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে দেওয়া বাণীতে তিনি এই প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। গতকাল রোববার দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভীর স্বাক্ষরিত বাণীর শুরুতে তারেক রহমান বিএনপির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে দলের সর্বস্তরের নেতাকর্মী, শুভানুধ্যায়ী এবং দেশবাসীকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও প্রাণঢালা অভিনন্দন জানান। তিনি বলেন, ‘জাতীয়তাবাদী আদর্শের সাথে জনগণকে একত্রিত করার লক্ষ্যে মহান স্বাধীনতার ঘোষক (প্রয়াত) রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান ১৯৭৮ সালের পয়লা সেপ্টেম্বর বিএনপি প্রতিষ্ঠা করেন।’
বিএনপির আদর্শিক ভিত্তি উদারনীতি উল্লেখ করে দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, ‘দলের সামাজিক অঙ্গীকার ও অর্থনৈতিক নীতি উদারপন্থি রাজনীতির দ্বারা অনুপ্রাণিত। বিএনপি যতবারই ক্ষমতায় এসেছে, ততবারই সামাজিক নিরাপত্তাবেষ্টনী প্রসারিত করেছে। দেশের পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠী ও নারীর ক্ষমতায়নসহ তাদের অর্থনেতিকভাবে স্বাবলম্বী করার ব্যাপক উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়। সে ক্ষেত্রে শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কৃষি, শিল্প-বাণিজ্য সেক্টরসহ ব্যাংকঋণ, বৈদেশিক কর্মসংস্থান, রেমিট্যান্স-প্রবাহ ইত্যাদিতে যুগান্তকারী অগ্রগতি লাভ করে। দেশীয় অর্থনীতি শক্ত ভিত্তির ওপর দাঁড়াতে শুরু করে। গণতন্ত্র সমুন্নত ও অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির জন্য বিএনপি সরকারের উদ্যম ও উদ্যোগের ফলশ্রুতিতে দেশকে আর দুর্ভিক্ষ স্পর্শ করেনি। মানুষ আর্থিক দুরবস্থা কাটিয়ে উঠতে সক্ষম হতে থাকে। জন্মলগ্ন থেকে এ পর্যন্ত দলের যেসব নেতাকর্মী মৃত্যুবরণ করেছেন ও দেড় দশকের আওয়ামী ফ্যাসিবাদের করাল গ্রাস এবং গত বছর ছাত্র-জনতার রক্তঝরা আন্দোলনে যারা প্রাণ হারিয়েছেন, আমি তাদের প্রতিও জানাচ্ছি গভীর শ্রদ্ধা।’