ঢাকা শুক্রবার, ১৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৫

কুমিল্লায় মাইকে ঘোষণা দিয়ে ৪ মাজারে হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ

কুমিল্লা প্রতিনিধি
প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১৮, ২০২৫, ১১:৩২ পিএম

কুমিল্লার হোমনা উপজেলায় ফেসবুকে ধর্ম নিয়ে কটূক্তির অভিযোগকে কেন্দ্র করে মাইকে ঘোষণা দিয়ে চারটি মাজারে হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করেছে বিক্ষুব্ধ জনতা। গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে উপজেলার আসাদপুর ইউনিয়নের আসাদপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

খবর পেয়ে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। পরে ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন কুমিল্লা পুলিশ সুপার (এসপি) মো. নাজির আহমেদ খান ও হোমনা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ক্ষেমালিকা চাকমা।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, ‘বেমজা মহসিন’ নামের একটি ফেসবুক আইডি থেকে গত বুধবার সকাল ১০টা ৫২ মিনিটে ধর্ম নিয়ে আপত্তিকর পোস্ট দেওয়া হয়। এ ঘটনায় স্থানীয় লোকজন থানার সামনে জড়ো হয়ে মহসিনের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে বিক্ষোভ করেন। পরে সেনা ও পুলিশ সদস্যরা পরিস্থিতি শান্ত করেন।

সেদিন দুপুরে পুলিশ ওই যুবককে গ্রেপ্তার করে। সন্ধ্যায় বাংলাদেশ ইসলামী যুবসেনা হোমনা উপজেলা শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক মো. শরীফুল ইসলাম বাদী হয়ে তার বিরুদ্ধে থানায় মামলা করেন। গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে তাকে আদালতে সোপর্দ করা হয়। 

সকাল থেকে উত্তেজিত জনতা মাইকে ঘোষণা দিয়ে আসাদপুর গ্রামে হামলা চালায়। তারা কফিল উদ্দিন শাহ ও হাওয়ালি শাহ মাজারে আগুন দেয়, আর কালাই শাহ ও আবদু শাহ মাজারে ভাঙচুর চালায়। পরে চারটি মাজারেই আগুন ধরিয়ে দেয় তারা।

হোমনার ইউএনও ক্ষেমালিকা চাকমা বলেন, বুধবারের ঘটনার কারণে জনতার মধ্যে ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। তারই পরিপ্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার সকালে বিক্ষুব্ধরা মাজারে হামলা চালায়।

হোমনা থানার ওসি মুহাম্মদ রফিকুল ইসলাম জানান, ফেসবুকে কটূক্তিমূলক পোস্ট দেওয়ার অভিযোগে যুবককে গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠানো হয়। তবু উত্তেজিত জনতা মাজারে হামলা ও অগ্নিসংযোগ করেছে।

হোমনা উপজেলা ইসলামী ফ্রন্টের সেক্রেটারি সফিক রানা ও ইসলামী যুবসেনার নেতা শরীফুল ইসলাম বলেন, গ্রেপ্তার যুবক দীর্ঘদিন ধরে ফেসবুকে উসকানিমূলক পোস্ট দিচ্ছিলেন। তার ফাঁসির দাবি জানাচ্ছি।

ঘটনাস্থল থেকে ফিরে এসপি নাজির আহমেদ খান বলেন, ‘ফেসবুকে আপত্তিকর পোস্ট দেওয়ার পর পুলিশ দ্রুত গ্রেপ্তার করেছে। কিন্তু আইন হাতে তুলে নিয়ে যারা মাজারে হামলা ও অগ্নিসংযোগ করেছে, তাদের শনাক্ত করা হয়েছে। আইনের আওতায় আনা হবে।’ তিনি আরও জানান, এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।