বৃষ্টি এবং পণ্যের সরবরাহ কম এমন অজুহাতে দ্রব্যমূল্যের দাম বেড়েছে লাগামছাড়াভাবে। দ্রব্যের এমন ঊর্ধ্বগতিতে দিশাহারা মানুষ। হঠাৎ নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দাম বাড়ায় নিম্ন ও মধ্যবিত্ত আয়ের মানুষ চরম দুর্ভোগে। বাজারের এই অস্থিরতা তাদের জীবনযাত্রাকে আরও কঠিন করে তুলেছে। কাঁচামরিচ এক দিনের ব্যবধানে ২৪০-৩২০ টাকায় কেনাবেচায় বাজিমাত করেছে। দামে দিশাহারা ক্রেতারা সবজির দামে কুপোকাত অবস্থায়।
অতিরিক্ত মুনাফার লোভে এক শ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট করে পণ্যের দাম বাড়াচ্ছে, যার ফলে সাধারণ মানুষের কষ্ট এখন চরমে। বিশেষ করে চাল, ডাল, তেল, শাক-সবজি, ডিম, ব্রয়লার মুরগিসহ প্রায় সব জিনিসের দাম বেশ কয়েকগুণ বেড়েছে। টানা কয়েক দিনের বৃষ্টির কারণে বাজারে প্রায় সব ধরনের সবজির দাম বেড়েছে। শীতের আগাম সবজির দাম তুলনামূলক বেশি বেড়েছে। শিমের দাম এক সপ্তাহের ব্যবধানে ১৫০ টাকা থেকে ২৪০ টাকা পর্যন্ত উঠেছে। বাজারে সবচেয়ে বেশি সংকট ও দাম বাড়তি দেখা গেছে কাঁচামরিচের। মসলাজাতীয় পণ্যটির দাম সপ্তাহের ব্যবধানে প্রায় ১০০ টাকা বেড়ে ৩২০ টাকায় উঠেছে। এক দিনের ব্যবধানে ২৪০ টাকা থেকে হয়েছে ৩২০ টাকা।
সরেজমিনে শান্তিনগর বাজার ঘুরে দেখে যায়, সবজির মধ্যে কেবল কাঁচা পেঁপে কম দামে ২০-২৫ টাকা কেজি মূল্যে বিক্রি হচ্ছে। আর কচুরমুখী ৫০ টাকা কেজিতে পাওয়া যাচ্ছে। এ ছাড়া শসা, মিষ্টিকুমড়া ও ধুন্দল ৬০ থেকে ৭০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। বাকি প্রায় সব সবজির দাম ৮০ টাকার ওপরে রয়েছে। এর মধ্যে বেশির ভাগ সবজির দামই কেজিতে ১০-২০ টাকা বেড়েছে সপ্তাহের ব্যবধানে।
বরবটি কেজি বিক্রি হচ্ছে ১০০ টাকায়, করলা প্রতি কেজি ১০০, করলা ১২০, পটোল ৮০, চিচিঙ্গা ৮০, কাঁকরোল ৮০, বেগুন (লম্বা) ১০০ এবং বেগুন (গোল) প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৪০ টাকা দরে। এ ছাড়া প্রতি কেজি গাজর ১২০ টাকা, কঁচুর লতি প্রতি কেজি ৮০-১০০, ঢেঁড়স প্রতি কেজি ৮০, টমেটো প্রতি কেজি ১২০-১৪০, লাউ প্রতি পিস (ছোট ও বড়) ৮০-১২০ এবং জালি প্রতি পিস ৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। গতকালের বাজারে কাঁচামরিচ প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে সর্বনি¤œ ৩০০ টাকা থেকে ওপরে ৩৪০ টাকা পর্যন্ত। এক সপ্তাহ আগেও কাঁচামরিচের দাম ছিল ২০০-২২০ টাকার মধ্যে। সপ্তাহের ব্যবধানে পণ্যটির দাম বেড়েছে প্রায় ১০০ টাকা।
সবজি বিক্রেতাদের দাবি, ‘পাইকারি বাজারে কাঁচামরিচের ব্যাপক সংকট তৈরি হয়েছে। বৃষ্টিতে চাষিদের ফলন নষ্ট হয়েছে। শুনেছি, ভারত থেকেও নাকি মরিচ আসা বন্ধ রয়েছে। তাই এ সংকট তৈরি হয়েছে। এক পাল্লা (৫ কেজি) এখন কিনতে হচ্ছে ১ হাজার ২০০-১ হাজার ৩০০ টাকায়। এক সপ্তাহ আগেও ৮০০-৯০০ টাকায় কিনে আনতে পারতাম।’
রেগুলার সবজির পাশাপাশি শীতকালীন আগাম সবজির দামও বাজাবে বাড়তে দেখা গেছে। প্রায় এক মাস আগে বাজারে নতুন আসা শিমের দাম সপ্তাহের ব্যবধানে ৭০-৮০ টাকা বেড়ে প্রতি কেজি ২৪০ টাকায় উঠেছে। গত সপ্তাহ সবজিটির দাম ১৬০-১৭০ টাকায় ছিল। আগাম ছোট সাইজের ফুলকপি ও বাঁধাকপি প্রতি পিস বিক্রি হচ্ছে ৮০-১০০ টাকায়। গত সপ্তাহে যা ৬০-৭০ টাকায় পাওয়া যেত। আর মুলা বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৮০ টাকায়। গত সপ্তাহে যা ৬০ টাকায় পাওয়া যেত। এ ছাড়া প্রতি কেজি টমেটো বিক্রি হচ্ছে ১২০-১৪০ টাকা কেজি দরে।
সপ্তাহের ব্যবধানে বেড়েছে বিভিন্ন ধরনের শাকের দামও। পুঁইশাক প্রতি আঁটি বিক্রি হচ্ছে ৪০-৫০ টাকায় এবং লাউ শাকের আঁটি বিক্রি হচ্ছে ৫০-৬০ টাকায়। এ ছাড়া প্রতি আঁটি লালশাক ২৫-৩০ টাকায়, কলমি শাক ২০ টাকা, পালংশাক ৪০ টাকা, পাটশাক ৩০ টাকায়, কচুশাক ৩০ টাকা, মুলা শাক ২৫ টাকা এবং ডাঁটা শাকপ্রতি আঁটি ৩০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন