বৃহস্পতিবার, ২৩ অক্টোবর, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


স্বপ্না চক্রবর্তী

প্রকাশিত: অক্টোবর ২২, ২০২৫, ১১:১৫ পিএম

চীনা বিনিয়োগে জ্বালানির আলো

স্বপ্না চক্রবর্তী

প্রকাশিত: অক্টোবর ২২, ২০২৫, ১১:১৫ পিএম

চীনা বিনিয়োগে জ্বালানির আলো

টানা ১৬ বছর ধরে বাংলাদেশের বৃহত্তম বাণিজ্যিক অংশীদার হিসেবে নিজেদের অবস্থান ধরে রেখেছে চীন। বর্তমানে দেশে প্রায় ১ হাজার চীনা উদ্যোগ কাজ করছে। যার মধ্যে সবচেয়ে বেশি বিনিয়োগ রয়েছে বিদ্যুৎ ও জ¦ালানি খাতে। এর মধ্যে রয়েছে দেশের সবচেয়ে বড় কয়লাভিত্তিক পায়রা তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রটি। ১ হাজার ৩২০ মেগাওয়াটের কেন্দ্রটি থেকে দেশের সিংহভাগ বিদ্যুতের চাহিদা মেটে। এরপরেই রয়েছে সিরাজগঞ্জ সৌরবিদ্যুৎ কেন্দ্রটি। এটিও নিয়মিত বিদ্যুৎ সরবরাহ করে যাচ্ছে। রয়েছে পাবনা ৬০ মেগাওয়াটের সৌরবিদ্যুৎ কেন্দ্রটিও। এ ছাড়া সৌরবিদ্যুৎ কেন্দ্রেও বিশাল বিনিয়োগ রয়েছে। শুধু বিদ্যুৎ কেন্দ্র নয়, দেশের জ¦ালানি খাতের বেশির ভাগ অবকাঠামো নির্মাণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে যাচ্ছেন দেশটির দক্ষ শ্রমিকেরা। দুই দেশের মধ্যে কূটনৈতিক এবং বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক এতটাই দৃঢ় বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, অদূর ভবিষ্যতেও দেশের বিদ্যুৎ ও জ¦ালানি খাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে দেশটি।

সম্প্রতি ‘সাসটেইনেবল গভর্ন্যান্স অব চায়নাস এনার্জি ইনভেস্টমেন্ট ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক এক কর্মশালায় বলা হয়, দেশে মোট বিদেশি বিনিয়োগে যুক্তরাষ্ট্র শীর্ষে আর বিদ্যুৎ খাতে বিদেশি বিনিয়োগে চীন সবার ওপরে। দেশে ২০১৮ সালে চীন সর্বোচ্চ বিনিয়োগ করে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজ (বিআইআইএসএস) ও যুক্তরাজ্যের ইউনিভার্সিটি অব বাথ যৌথভাবে আয়োজিত এ কর্মশালায় পরিবেশ উপদেষ্টা রিজওয়ানা হাসান বলেন, বাংলাদেশ সরকার ২০৩০ সালের মধ্যে ৩০ শতাংশ বিদ্যুৎ নবায়নযোগ্য উৎস থেকে উৎপাদনের লক্ষ্য নিয়েছে। এতে চীনের অভিজ্ঞতা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। সৌর ও বায়ুশক্তিতে যে অগ্রগতি করেছে চীন, তা থেকে অনেক কিছু শেখার আছে। চীনের কাছ থেকে শুধু আর্থিক সহায়তা নয়, পরিবেশ পুনরুদ্ধারে প্রযুক্তিগত সহায়তাও প্রত্যাশা করেন তিনি। কর্মশালায় বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের (বিইআরসি) চেয়ারম্যান জালাল আহমেদ বলেন, দেশে সর্বোচ্চ বিদ্যুৎ চাহিদা ১৬ হাজার মেগাওয়াট আর উৎপাদন সক্ষমতা ২৭ হাজার মেগাওয়াট। গত সরকারের সময় ৪০ শতাংশ অতিরিক্ত সমতা তৈরির সিদ্ধান্ত যথাযথ ছিল না। এখন সময় নবায়নযোগ্য জ্বালানি খাতে বিনিয়োগ করা।

বাংলাদেশে চীনের বিনিয়োগ বেড়েছে ৩০০ শতাংশ

বাংলাদেশের বিভিন্ন খাতে চীনের বিনিয়োগ ৩০০ শতাংশ বেড়েছে। সম্প্রতি এ তথ্য জানিয়ে বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন বলেন, ‘দুই দেশের মধ্যে সম্পর্কে আমাদের যে সামান্য দুর্বলতা রয়েছে সেগুলো খুঁজে বের করতে হবে। অভিজ্ঞতা বিনিময়ের মাধ্যমে এগিয়ে যেতে হবে। বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, সম্প্রতি প্রধান উপদেষ্টার চীন সফরে সৌরবিদ্যুৎ খাতে চীনের বিনিয়োগ নিয়ে আলোচনা হয়েছে। চীন সফরের আগেই বিদ্যুৎ বিভাগ থেকে চুক্তিতে সম্ভাব্য কী কী বিষয় থাকতে পারে, সেসব জানতে টেকসই ও নবায়নযোগ্য জ্বালানি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (স্রেডা) কাছে প্রস্তাবনা চেয়ে চিঠি দেওয়া হয়। ¯্রডো সৌরবিদ্যুতের প্রসার ও পাওয়ার সেভিং বাল্ব উৎপাদনসহ বিভিন্ন বিষয় তুলে ধরে একটি সার সংক্ষেপ প্রস্তাবনা পাঠায় বিদ্যুৎ বিভাগে। পরে সেটি নিয়ে যাচাই-বাছাই ও পর্যালোচনা করে বিদ্যুৎ বিভাগ।

গত বছরের ডিসেম্বরে বাংলাদেশ সফর করেন চীনের উচ্চপর্যায়ের এক ব্যবসায়ী প্রতিনিধিদল। তারা বাংলাদেশের নবায়নযোগ্য জ্বালানি খাতে বিনিয়োগে আগ্রহ প্রকাশ করেন। গত ২২ ডিসেম্বর বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) নির্বাহী চেয়ারম্যানের সঙ্গে বৈঠক করেন চীনের ওই প্রতিনিধিদলের সদস্যরা। সেই বৈঠকে নবায়নযোগ্য জ্বালানি খাতে বিনিয়োগ নিয়ে আগ্রহের কথা জানান তারা। পরে বিডার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি জানানো হয়, চীনের ব্যবসায়ী প্রতিনিধিদল বাংলাদেশে নবায়নযোগ্য জ্বালানি খাতে বিনিয়োগের সুযোগ অনুসন্ধান করছে। এ লক্ষ্যে তারা বিডা ও বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষের (বেজা) কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন। বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন বিডা ও বেজার নির্বাহী চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুন। চীনা প্রতিনিধিদলে দেশটির লংজি গ্রিন এনার্জি টেকনোলজি কোম্পানি, টংওয়েই কোম্পানি ও ইউনান শোর মতো শীর্ষস্থানীয় নবায়নযোগ্য জ্বালানি কোম্পানির কর্মকর্তারা ছিলেন। বৈঠকে চীনা কোম্পানিগুলোর কর্মকর্তারা নিজেদের প্রতিষ্ঠানের উন্নত প্রযুক্তি ও সফল আন্তর্জাতিক প্রকল্পগুলো উপস্থাপন করেন। পাশাপাশি বাংলাদেশের নবায়নযোগ্য জ্বালানি, বিশেষ করে সৌরশক্তি খাতে বিনিয়োগের বিষয়ে আগ্রহ প্রকাশ করেন।’

পায়রা তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র :

প্রতিদিন ১ হাজার ৩২০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের সক্ষমতার কেন্দ্রটি বাংলাদেশের বিদ্যুতের বিপুল চাহিদার এক দশমাংশ পূরণ করছে। এখানকার বিদ্যুৎ দিয়ে দক্ষিণাঞ্চলের বিদ্যুতের সমস্যা পুরোটাই মিটে গিয়ে জাতীয় গ্রিডেও যুক্ত হচ্ছে। পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় উপজেলার ধানখালীতে নির্মিত কয়লাভিত্তিক কেন্দ্রটি বিদ্যুৎ উৎপাদনের দিক থেকে বাংলাদেশে সর্ববৃহৎ কেন্দ্র। বাংলাদেশ ও চীনের যৌথ উদ্যোগে ২০১৪ সালে এর নির্মাণসংক্রান্ত চুক্তি হয়। নির্মাণকাজ করেছে বাংলাদেশ-চায়না পাওয়ার কোম্পানি লিমিটেড। আড়াইশো কোটি ডলার ব্যয়ে এই কেন্দ্র নির্মাণের সিংহভাগ অর্থায়ন করেছে চীন। ধানখালী গ্রামের এক হাজার একর জমির ওপর নির্মিত বিদ্যুৎকেন্দ্রটির কাছেই পায়রা বন্দর। যে কারণে এর জ¦ালানি কয়লা আমদানি অত্যন্ত সহজ হওয়ায় এখন পর্যন্ত কেন্দ্রটিতে কয়লা সংকটজনিত কোনো কারণে বন্ধ হয়ে যাওয়ার নজির নেই। পরীক্ষামূলক চালানোর পর ২০২০ সালের ১৫ মে প্রথম কেন্দ্রটি পুরোপুরি উৎপাদনে আসে। আর দ্বিতীয় ইউনিট বাণিজ্যিকভাবে কাজ শুরু করে সেই বছরের ডিসেম্বর মাসে। তবে সঞ্চালন লাইন পুরোপুরি নির্মাণ শেষ না হওয়ার কারণে সেই বিদ্যুৎ ব্যবহার করা যায়নি।

পরে বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে গোপালগঞ্জ পর্যন্ত, আমিনবাজার-মাওয়া-গোপালগঞ্জ-মোংলা পর্যন্ত সঞ্চালন লাইন তৈরি করা হলে তা ওই অঞ্চলের চাহিদা মিটিয়ে জাতীয় গ্রিডেও যুক্ত। তবে রয়েছে কিছু সমালোচনাও। এ কেন্দ্রে বিদ্যুৎ উৎপাদনে প্রতিদিন ১২ হাজার টনের বেশি কয়লা পোড়ানো হচ্ছে। ইন্দোনেশিয়া থেকে বঙ্গোপসাগরের রামনাবাদ চ্যানেল হয়ে কয়লা আসে। পরবর্তী সময়ে অস্ট্রেলিয়া ও অন্যান্য দেশ থেকেও আমদানির পরিকল্পনা রয়েছে। যে জন্য খরচ কিছুটা বেশি পড়ে। তবে তা কমানোর চেষ্টা করছে দুই দেশই। এই বিদ্যুৎকেন্দ্রের কাজ যখন শুরু হয়, তখন থেকে সেখানকার পরিবেশের ওপর এর ক্ষতিকর প্রভাব নিয়েও আলোচনা উঠেছিল, যা কাটিয়ে বর্তমানে সাফল্যের সঙ্গে দেশের বিদ্যুতে বড় অবদান রাখছে কেন্দ্রটি। পরিবেশ রক্ষায় কেন্দ্রটিতে ব্যবহৃত হচ্ছে বিশেষ আলট্রা সুপার ক্রিটিক্যাল প্রযুক্তি। এশিয়ায় ভারত, চীন, তাইওয়ান, জাপান ও মালয়েশিয়ার মতো দেশগুলোয় আলট্রা সুপার ক্রিটিক্যাল প্রযুক্তির বিদ্যুৎকেন্দ্র রয়েছে।

সিরাজগঞ্জ সৌরবিদ্যুৎ কেন্দ্র :

সিরাজগঞ্জে যমুনা নদীর তীরে নির্মিত ৬৮ মেগাওয়াট সৌর বিদ্যুৎকেন্দ্রটিও নির্মাণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে চীনের। বাংলাদেশের নর্থ-ওয়েস্ট পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানি লিমিটেড (এনডব্লিউপিজিসিএল) এবং চীনের প্রতিষ্ঠান চায়না ন্যাশনাল মেশিনারি ইমপোর্ট অ্যান্ড এক্সপোর্ট করপোরেশনের (সিএমসি) যৌথভাবে বাস্তবায়নকৃত প্রকল্পটি ওই এলাকার ২১৪ একর অনাবাদি জমিকে কার্যকর করে তুলছে। এখানে বিনিয়োগ হয়েছে প্রায় ৮৮০ কোটি টাকা। ২০২৩ সালের ৯ জানুয়ারি হয়ে ২০২৪ সালের ৩০ জুন এটি বাণিজ্যিকভাবে উৎপাদনে আসে। এখান থেকে প্রতি ইউনিট বিদ্যুৎ ১০ দশমিক দুই ইউএস সেন্ট যা ওই সময়ের ডলারের মূল্যে ১১ দশমিক ২০ টাকা ছিল। এখন ডলারের দামের সঙ্গে কিছুটা বাড়লেও তা অন্যান্য উৎস থেকে উৎপাদিত বিদ্যুতের মূল্যের চেয়ে অনেক কম হওয়ায় সরকারের রাজস্ব বেচে যাচ্ছে উল্লেখযোগ্য হারে।

সোলার প্যানেল উৎপাদনের সিদ্ধান্ত চীনা কোম্পানির :

সিরাজগঞ্জ সৌরবিদ্যুৎ কেন্দ্রের বাইরেও দেশটি বাংলাদেশে সোলার প্যানেল উৎপাদনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিশে^র বৃহত্তম সৌর প্যানেল উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান লোংগি। এ বিষয় খোদ প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে জানিয়েছেন বাংলাদেশে নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন। এই লক্ষ্যে তারা বাংলাদেশে একটি অফিসও করবে। চলতি বছরের মার্চে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে চীনের রাষ্ট্রদূত জানান, চীনের বেশ কয়েকটি শীর্ষ সোলার প্যানেল নির্মাতা বিনিয়োগের সুযোগ অনুসন্ধানের জন্য ডিসেম্বরে বাংলাদেশ সফর করে। সফরে আসা কোম্পানিগুলোর মধ্যে লোংগিসহ অন্তত দুটি চীনা প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশে অফিস ও কারখানা স্থাপনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে, যা এ বছরের মধ্যেই শুরু হবে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা।

আন্তর্জাতিক মানের তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র বরগুনায :

আন্তর্জাতিক মান অনুযায়ী পরিবেশ রক্ষার সব ধরনের ব্যবস্থা নিয়ে বরগুনা জেলার তালতলীতে কয়লাভিত্তিক ৩৫০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করছে করে চীন। কয়লাভিত্তিক ৩৫০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎকেন্দ্রটির ২০২২ সালের শুরুতে উৎপাদনে আসে। ‘বরিশাল ইলেকট্রিক পাওয়ার কোম্পানি লিমিটেড’ নামের প্রকল্পটি বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড ও বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে বিদ্যুৎ ক্রয়-সংক্রান্ত চুক্তি হয়। এটি যৌথভাবে বাস্তবায়ন করে চীনের ‘পাওয়ার চায়না রিসোর্স লিমিটেড’ ও বাংলাদেশের আইসোটেক গ্রুপের সহযোগী প্রতিষ্ঠান ‘আইসোটেক ইলেকট্রিফিকেশন কোম্পানি লিমিটেড’। সাড়ে চার হাজার কোটি টাকার প্রকল্পটির মোট ৩০০ একর জমির ওপর নির্মিত এই কেন্দ্র থেকে চুক্তি অনুযায়ী সরকারকে ২৫ বছর বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হবে। প্রতি ইউনিট বিদ্যুতের দাম ধরা হয় মাত্র ৬ দশমিক ৭৭ টাকা। তবে কয়লার দামের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে প্রতি ইউনিট বিদ্যুতের সর্বনিম্ন দাম পড়বে ৪ টাকা। এ কেন্দ্রের মাধ্যমে ওই এলাকা চিত্র বদলে যায়। সৃষ্টি হয় অন্তত সাড়ে তিন হাজার লোকের কর্মসংস্থান।

যা বলছেন বিশেষজ্ঞরা

অন্তর্বর্তী সরকারের মেয়াদের সীমাবদ্ধতার কারণে বড় ধরনের কোনো চুক্তির মতো পদক্ষেপ না আসা স্বাভাবিক থাকলেও বিদ্যুৎ ও জ¦ালানি খাতে চীনের সহযোগিতার হাত সব সময়ই প্রসারিত ছিল উল্লেখ করে কনজ্যুমার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) জ¦ালানি উপদেষ্টা অধ্যাপক শামসুল আলম বলেন, দেশের এমন রাজনৈতিক পরিস্থিতিতেও যখন চীন বিনিয়োগসহ সব ধরনের সহযোগিতা অব্যাহত রেখেছে, সেহেতু ধরে নিতে হবে তারা আমাদের পরীক্ষিত বন্ধু। ভবিষ্যতে যা আরও শক্তিশালী হবে। তবে যেকোনো বিনিয়োগে স্বচ্ছতা রাখার অঙ্গীকার করেছেন বিদ্যুৎ, জ¦ালানি ও খনিজ সম্পদ উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খান। তিনি বলেন, ‘এখন যেকোনো কোম্পানিকে কাজ পেতে হলে উন্মুক্ত দরপত্রের মাধ্যমে কাজ পেতে হবে। জি-টু-জির মাধ্যমে যেসব প্রকল্প আগে দেওয়া হতো সরকারের পছন্দমতো কোম্পানিকে এখন আর সে সুযোগ নেই। চীন আমাদের বন্ধুরাষ্ট্র। শুধু জ¦ালানি খাত নয়, অন্যান্য অনেক খাত আছে যেখানে চীনের অব্যাহত বিনিয়োগ রয়েছে। দেশটির সঙ্গে এই সম্পর্ক আমাদের অব্যাহত থাকবে বলে আশা করছি।’

প্রধান উপদেষ্টার সম্প্রতি সফরে যত প্রাপ্তি :

গত বছরের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার যুগপৎ বিপ্লবে আওয়ামী সরকারের পতন হয়। ফলে পতিতদের ঘনিষ্ঠ মিত্র বৃহৎ প্রতিবেশী ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্কে বড় ধরনের অবনতি ঘটে। দেশটি বাংলাদেশিদের জন্য ভিসা সুবিধা সীমিত করে দেয়। এমনকি ভ্রমণ ভিসা পুরোপুরি বন্ধ করে দেওয়া হয়। ভারতীয় গণমাধ্যমে বাংলাদেশবিরোধী প্রচারণাও তীব্রতা পায়। সর্বোপরি দেশে সংখ্যালঘু নির্যাতনের কল্পকাহিনি ভারতীয় প্রচার মাধ্যমে ফলাও করে প্রচার করা হয়। কিন্তু চুলচেরা বিশ্লেষণে এসব প্রচারণা কোনোভাবেই প্রতিষ্ঠিত করা সম্ভব হয়নি। বাংলাদেশ ও নতুন অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে ভারতের এমন বৈরী আচরণের পর প্রতিবেশী দেশটির সরকারের সম্পর্ক জোরালো করার চেষ্টা করলেও দেশটির নেতিবাচক মনোভাবের কারণেই তা সম্ভব হয়ে ওঠেনি। প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেদ্র মোদির সঙ্গে বারবার বৈঠকের প্রস্তাব দিলেও দেশটি ছিল বরাবরই নেতিবাচক।

এ সময় পাশে দাঁড়ায় বাংলাদেশের কাছে ও বৃহৎ প্রতিবেশী দেশ চীন। সম্প্রতি দেশটি সফর করে এসেছেন প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মোহাম্মদ ইউনূস। প্রধান উপদেষ্টার চীন সফরকে নানাভাবে বিশ্লেষণ করা হলেও এ সফরের সফলতা নিয়ে কোনোপক্ষই তেমন কোনো প্রশ্ন তোলেনি। কারণ, চীনে প্রথম দ্বিপক্ষীয় সফরে দুদেশের মধ্যে বেশ কয়েকটি চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক সই হয়েছে এবং সম্পর্ক ‘নতুন উচ্চতায়’ নিয়ে যাওয়ার কথা বলা হয়েছে যৌথ বিবৃতিতে। প্রধান উপদেষ্টার এ সফরে চীনের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে হৃদ্যতাপূর্ণ বৈঠক হয়। একই সঙ্গে শি জিনপিং বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টার প্রতি পূর্ণ সমর্থন ব্যক্ত করেন এবং অন্তর্বর্তী সরকারের সংস্কার কর্মসূচিরও ভূয়সী প্রশংসা করেন তিনি। এভাবেই অদূর ভবিষ্যতেও বাংলাদেশের সঙ্গে কূটনৈতিক-অর্থনৈতিক সম্পর্ক অব্যাহত রাখারও অঙ্গীকার করেন তিনি।

রূপালী বাংলাদেশ

Link copied!