জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নের প্রক্রিয়া কিংবা গণভোট নিয়ে খুব দ্রুত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুল। গতকাল বৃহস্পতিবার ঢাকায় ফরেন সার্ভিস অ্যাকাডেমিতে উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠক শেষে এক ব্রিফিংয়ে তিনি এ কথা বলেন। আইন উপদেষ্টা বলেন, ‘গণভোট নিয়ে বিরোধ তো তীব্রতম পর্যায়ে পৌঁছে গেছে। এসব বিষয়ে আমাদের একটা সময় সিদ্ধান্ত নিতে হবে। সিদ্ধান্ত নেবেন প্রধান উপদেষ্টা। আমরা তাকে সহায়তা করার জন্য থাকব।’
তিনি বলেন, ‘সিদ্ধান্ত নির্দিষ্ট কেউ নেবেন না, এটা আপনারা নিশ্চিত থাকেন। এই সিদ্ধান্ত প্রধান উপদেষ্টা নেবেন। আমাদের সঙ্গে পরামর্শের প্রয়োজন হলে তিনি করবেন এবং আমরা যে সিদ্ধান্ত নেব, সেখানে আমরা দৃঢ় থাকব। আর সিদ্ধান্ত খুব দ্রুত নেওয়া হবে।’
জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়ন প্রশ্নে দলগুলোর মধ্যে মোটা দাগে দুই ধরনের বিরোধ তৈরি হয়েছে। প্রথমত, সনদ বাস্তবায়নের প্রক্রিয়া; দ্বিতীয়ত হলো, গণভোটের দিনক্ষণ। বিএনপিসহ কয়েকটি দল চায় জাতীয় নির্বাচন ও গণভোট একই দিনে হোক। আর জুলাই সনদ বাস্তবায়নের পূর্ণ ভার থাকুক নির্বাচিত সংসদের ওপর। অন্যদিকে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীসহ কয়েকটি দল দাবি তুলেছে, নভেম্বরেই গণভোট আয়োজন করতে হবে। আর জুলাই সনদ বাস্তবায়নের আদেশ আসতে হবে প্রধান উপদেষ্টার হাত ধরে।
সনদ নিয়ে দলগুলোর এমন অনৈক্যের বিষয়ে অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুল বলেন, ‘কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নে তাদের আসলে ঐকমত্য হয় নাই। এর আগে আমরা জেনেছিলাম, বিষয়বস্তু নিয়ে বিরোধ ছিল। এখন আবার দেখলাম, দুই ধরনের বিরোধ বের হয়েছে। একটা হলো, কী পদ্ধতিতে পাস করা হবে। আরেকটা হচ্ছে, গণভোট কবে হবে। দৃঢ়, পরস্পরবিরোধী ও উত্তেজিত ভূমিকা নিয়েছে রাজনৈতিক দলগুলো, যারা জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পক্ষে ছিল।’
রাজনৈতিক দলগুলোকে উদ্দেশ করে আইন উপদেষ্টা বলেন, ‘আপনারা যদি এ রকম একটা ভূমিকা নেন, তাহলে সরকার কী করবে? আমরা ঠিক বুঝতে পারছি না, এত দিন আলোচনার পর আপনাদের যদি ঐকমত্য না আসে, তাহলে আমরা সত্যি কী করব, এটা নিয়ে চিন্তা-ভাবনা করতে হচ্ছে। দলগুলো চাইছে, যেন এই সরকার তাদের দলীয় অবস্থানে সমর্থন জানায়। দুর্ভাগ্যজনক, আলোচনার জন্য তাদের যথেষ্ট সময় দেওয়া হয়েছে। তারা যে অনৈক্য দেখাচ্ছেন, জুলাইয়ের চেতনাকে কোথায় নিয়ে গেছেন, বিবেচনা করা উচিত। দলগুলোর অনৈক্যের বিষয়টি উপদেষ্টা পরিষদেও আলোচনা হয়েছে। তবে এ বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।’

