ঢাকা মঙ্গলবার, ০৪ নভেম্বর, ২০২৫

আপত্তির মুখে প্রাথমিকে সংগীত ও শরীরচর্চার শিক্ষকের পদ বাতিল

রূপালী প্রতিবেদক
প্রকাশিত: নভেম্বর ৩, ২০২৫, ১১:২৭ পিএম

কয়েকটি ইসলামি দলের আপত্তির পর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নতুন সৃষ্ট সংগীত শিক্ষক ও শরীরচর্চা শিক্ষকের পদ বাদ দিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। পাশাপাশি কিছু ‘শব্দগত পরিবর্তন’ এনে গত আগস্টে জারি করা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষক নিয়োগ বিধিমালা সংশোধন করেছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়।

গতকাল সোমবার দুপুরে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের বিদ্যালয়ের অনুবিভাগের অতিরিক্ত সচিব মাসুদ আকতার খান বলেন, গত রোববার বিধিমালাটি সংশোধনের গেজেট জারি হয়েছে। গত আগস্টে জারি করা বিধিমালায় ৪ ক্যাটাগরির পদ থাকলেও সংশোধনে দুটি ক্যাটাগরি রাখা হয়েছে। সংগীত ও শরীরচর্চা বিষয়ের সহকারী শিক্ষকের পদটি নতুন বিধিমালায় নেই।

সমালোচনার মুখে পদগুলো বাতিল করা হলো কি নাÑ জানতে চাইলে কোনো মন্তব্য করতে চাননি এ কর্মকর্তা। তিনি বলেন, ‘আপনারা এটি খতিয়ে দেখতে পারেন।’

এ ছাড়া বিধিমালায় একটি ‘শব্দগত পরিবর্তন’ আনা হয়েছে বলেও জানান অতিরিক্ত সচিব মাসুদ আকতার খান। মাসুদ আকতার বলেন, ‘আগের বিধিমালায় মেধার ভিত্তিতে নিয়োগ পাওয়া পদগুলোর মধ্যে ২০ শতাংশ পদ বিজ্ঞান বিষয়ের স্নাতক ডিগ্রিধারীরা ও অন্য ৮০ শতাংশ পদ অন্যান্য বিষয়ে স্নাতক ডিগ্রিধারীরা নিয়োগ পাবেন বলে উল্লেখ ছিল। এখানে একটি শব্দগত ভুল হয়েছিল আমাদের, মনে হচ্ছিল, ৮০ শতাংশ পদে বিজ্ঞান ছাড়া অন্যান্য বিষয়ের স্নাতক ডিগ্রিধারীরা নিয়োগ পাবেন। কিন্তু আসলে কোটা ছাড়া পদের ওই ৮০ শতাংশ ছিল কমন। অর্থাৎ বিজ্ঞান বা অন্যান্য বিষয়ের ডিগ্রিধারীরা নিয়োগ পাবেন।’

মাসুদ আকতার খান আরও বলেন, তাই বিধিমালার কোটার বাইরের ৮০ শতাংশ পদের ক্ষেত্রে ‘অন্যান্য বিষয়ে’ শব্দবন্ধকে ‘বিজ্ঞানসহ অন্যান্য বিষয়ে অন্যূন’ শব্দবন্ধ দ্বারা প্রতিস্থাপন করা হয়েছে।

গত ২৮ আগস্ট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নতুন নিয়োগ বিধিমালার প্রজ্ঞাপন জারি হয়। নতুন বিধিমালায় সংগীত ও শরীরচর্চা বিষয়ের সহকারী শিক্ষকের দুটি পদ নতুন করে সৃষ্টি করা হয়েছিল। কিন্তু এরপর থেকে ধর্মভিত্তিক সংগঠনগুলো সংগীত বিষয়ের সহকারী শিক্ষক পদটি সৃষ্টি নিয়ে সমালোচনা শুরু করে।

গত ১৬ সেপ্টেম্বর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নতুন নিয়োগ বিধিমালায় সংগীত বিষয়ের সহকারী শিক্ষকের পদ সৃষ্টির সমালোচনা করে প্রাথমিকে ধর্মীয় শিক্ষক নিয়োগ দেওয়ার দাবি জানিয়েছিলেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম।

একই দিন এক সেমিনারে সংগীত শিক্ষক পদ সৃষ্টির কঠোর সমালোচনা করে জামায়াতে ইসলামী, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, খেলাফত মজলিস, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস ও বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের নেতারা।

এর আগে গত ৬ সেপ্টেম্বর প্রাথমিক স্তরে সংগীত শিক্ষক নিয়োগের পদক্ষেপকে ‘ইসলামবিরোধী অ্যাজেন্ডা’ আখ্যা দিয়ে এ-সংক্রান্ত বিধিমালা বাতিলের দাবি জানিয়েছিল হেফাজতে ইসলাম।